পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/৩৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Vව් ෆ এদেশের প্রকৃতিবিদ্যার্থী যুবক দেখিয়াছেন, এখন একবার ইউরোপের প্রকৃতিবিদ্যার্থী যুবকের কথা শুনুন। বিদ্যবিষয়ক উপকরণ আহরণের জন্য জ্ঞানপিপাম ইউরোপীয় যুবক আফ্রিকার নিবিড় শ্বাপদসঙ্কুল অরণ্যে প্রাণ হাতে করিয়া ভ্রমণ করিয়া বেড়ান। বৈজ্ঞানিক তথাসমূহের অনুসন্ধানের নিমিত্ত আহার নিদ্ৰা ভুলিয়া কাৰ্য্য করিতে থাকেন, ভোগলালসা তখন তাহাদিগকে বিচলিত করিতে সমর্থ হয় না। জ্ঞানপিপাসা র্তাহীদের হৃদয়ের একমাত্র আসক্তি। আপনারা অনেকেই জানেন, উদ্ভিদfisk stgatta ag getr (Sir Joseph Hooker)»vs« গু করে কত বিপদ আলিঙ্গন করিয়া হিমালয় পৰ্ব্বতের বহু উচ্চদেশ পৰ্য্যন্ত আরোহণ করিয়াছিলেন। সে সমরে দাঞ্জিলিং-হিমালয়ান রেলওয়ে হয় নাই। সেজন্য তখন হিমাচলারোহণ এখনকার মত সুগম ছিল না । তুষারমণ্ডিত মেরুপ্রদেশের প্রাকৃতিক অবস্থা জানিবার কল্প কত অর্থব্যয়ে কতবার অভিযান প্রেরণ করা হইয়াছে ; কত বৈজ্ঞানিক তাহাতে প্রাণ বিসর্জন দিয়াছেন। পশ্চাত্যদেশের কি অদম্য উৎসাহ ! কি অতৃপ্ত জ্ঞানপিপাস ! যখন স্থানসেন (Nansen) ফিরিয়া আসিলেন সমগ্র ইউরোপ ও আমেরিক তাহার ভ্রমণকাহিনী শুনিবার জন্য ব্যাকুল । অতঃপর আমাদের আলোচ্য বিষয় বাঙ্গলা বৈজ্ঞানিক সহজ-ইহার বর্তমান অবস্থা ও ইহার ভাবী উন্নতি বিধানের উপায়-নির্দেশ । তিনটি দেশের সাহিত্যের ইতিহাস এবিষয়ে আমাদিগের সহায়তা করবে। কারণ इंख्शिान नष्ट्रभ व नाझे पछि थोप्क । यह জার্মানীতে সম্ভবপর হইয়াছিল, যাহা কৃষিয়াদেশে সম্ভবপর হইয়াছিল, _াহ জাপানেও সম্প্রতি সম্ভবপর হইয়াছে, তাহ বাঙ্গলা- দেশেও সম্ভবপর হইবে। এই তিন দেশই অল্প সময়ের মধ্যে বৈজ্ঞানিক জগতে প্রাধান্ত লাভ করিয়াছে। দেড়শত বৎসর পূৰ্ব্বে জৰ্ম্মান সাহিত্যের কি দুৰ্গতি ছিল । সত্য বটে, মনি থার মাতৃভাষায় বাইবেল অনুবাদ করিয়া জনসাধারণের মধ্যে ইহার আদর ও চর্চা বাড়াইয়াছিলেন, কিন্তু বিদ্যালয়ে লাটীন ও গ্রীকই অধীত হইত এবং রাজসভায় ফরাসী ভাষা চলিত ছিল। এমন কি ফ্রেডরিক প্রবাসী । - দি গ্রেট্‌ মাতৃভাষা ব্যবহার করিতে লজ্জা বোধ । [ ৮ম ভাগ। করিতেন। তিনি ফরাসী ভাষায় কবিতা রচনা করিয়া বলটেয়ারের সমক্ষে আবৃত্তি করিতেন এবং তাহার নিকট একটু বাহব পাইলে নিজকে ধন্ত মনে করিতেন। কিন্তু ফ্রেডরিকের মৃত্যুর কয়েক বৎসরের মধ্যেই Schiller, Goethe, Kant, Hegel প্রভৃতি একদিকে, আবার উনবিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভে Liebig, Wohler প্রভৃতি বৈজ্ঞানিকগণ অপর দিকে জৰ্ম্মান ভাষাকে মহাশক্তি শালিনী করিয়া তুলিলেন। ৫০ বৎসর পূৰ্ব্বে রুষিয়ার যে কি দুরবস্থা ছিল তাহ এই বলিলেই যথেষ্ট হইবে যে মহামতি বাকল ক্রিমিয়া যুদ্ধের সময় এই দেশকে স্বসভ্য আখ্যা দিতে কুষ্ঠিত হইয়াছিলেন। কিন্তু সেই অনাৰ্য্য জাতির ভাষা আজ আদর্শস্থানীয়। যে ভাষা রূষভল্লুকের উপযুক্ত বলিয়া উপহসিত হইত, টলষ্টয়ের স্থায় ঔপন্যাসিক সে ভাষাকে বিবিধ আভরণে সাজাইয়া জগতের সম্মুখে সমুপস্থিত করিয়াছেন। সেই ভাষাতেই বিখ্যাত রুষ রসায়নশাস্ত্রবিং মেণ্ডেলীক (Mendeleet) স্বীয় বৈজ্ঞানিক অমুসন্ধান সমুদা লিপিবদ্ধ করিয়া ইউরোপীয় অপরাপর পণ্ডিতদিগকে স্বল ভাষা শিক্ষা করিতে বাধ্য করিয়াছিলেন। এই ত মাতৃ ভাষাকে সমৃদ্ধিশালিনী করিবার প্রকৃষ্ট উপায়। অধিক কি, এসিয় খণ্ডেই ইহার দৃষ্টান্ত বর্তমান। ৩• বৎসর পূৰ্ব্বে জাপান কি ছিল আর আজ কি হইয়াছে তাহা বলা নিম্প্রয়োজন । যে সমুদায় স্বদেশপ্রেমিক বর্তমান জাপান গঠন করিয়াছেন, তাহার উৎসাহী, আশাস্থল যুবকবৃন্দকে প্রতীচ সাহিত্য ও বিজ্ঞান শিক্ষার নিমিষ্ট্র ইউরোপে পাঠাইয়াই ক্ষান্ত হন নাই, তৎতৎ দেশং পণ্ডিতদিগকে জাপানে শিক্ষা বিস্তারের জন্য আনয়ন করেন। বলা বাহুল্য, যদিও উক্ত পণ্ডিতগণ স্ব স্ব ভাষার সাহায্যেই শিক্ষা প্রদান করিতেন, তথাপি শীঘ্রই সে সমুদায় পরিবর্তি হইয়া গেল। জাপান নিজের ভাষার আদর বুঝিল । বুঝিল বৈদেশিক ভাষাতে শিক্ষা কখনও সম্পূর্ণ হইতে | পারে না, বুঝিল মাতৃভাষার সৌষ্ঠবসাধন অবশ্যকৰ্ত্তব্য। ফল কথা এই যে আমরা যত দিন স্বাধীনভাবে নুতন । উদ্দীপনায় অনুপ্রাণিত। যে দিন রাজা র"মোছন রায় রাণীর ঘরে জন্মগ্রহণ করিয়া প্রাচ্য ও প্র%চার সম্মিলনই নূতন গবেNয় প্রবৃত্ত হইয়া মাতৃভাষায় সেই সকল তত্ব প্রচার ཝta:་རྩེ༽ལ༢ ন হইব । ততদিন আমাদের ভাষা - ১১শ সংখ্যা । ] এক প্রকার মৃতপ্রায় হইয়া রহিয়াছে। যেমন ধনীর সন্থান পৈতৃক বিষয়বিভব হারাষ্টয়া নিঃস্ব ভাবে কালতিপাত করেন অথচ পূৰ্ব্ব-পুরুষগণের ঐশ্বর্যোর দোঙ্গষ্ট দিয়া গঙ্গে ীিত হন, আমাদেরও দশা সেইরূপ। লেকি বলেন যে দ্বাদশ খৃঃ শতাব্দী ইষ্টতে ইয়োধোপখণ্ডে স্বাধীন চিন্তার স্রোত প্রথম প্রবাচিত হয় ; প্রায় সেঈ সময় হইতেই ভারতগগন তিমিরাচ্ছন্ন হইল। অধ্যাপক লেবৰ (Weber) যথার্থই বলিয়াছেন, ভাস্করাচার্য ভারতগগনের শেষ নক্ষত্র। মতা বটে আমরা নব্যস্মৃতি ও নবাঙ্গায়ের দোহাই দিয়া বাঙ্গালীমস্তিষ্কের প্রখরতার শ্লাঘা করিয়া থাকি ; কিন্তু ইহা আমাদের স্মরণ রাপিতে হইবে যে যে সময়ে স্মাৰ্ত্ত ভটাচার্য্য মহাশয় মন্ত্র, যাজ্ঞবল্কা, পরাশর প্রভৃতি মন্থন ও আলোড়ন করিয়া নবমলধীয়া বিধবা নিৰ্জ্জল উপবাস না করিলে তাছার পিতৃ ও মাতৃ কুলের উৰ্দ্ধতন ও অধস্তন কয় পুরুষ নিরয়গামী ইষ্টলে, ইত্যাকার গবেষণায় নিযুক্ত ছিলেন, যে সময়ে রঘুনাথ, গদাধর ও জগদীশ প্রভৃতি মহামহোপাধ্যায়গণ বিবিধ জটিল টীকা টিপ্পনী রচনা করিয়া টোলের ছাত্রদিগের আতঙ্গ উৎপাদন করিতেছিলেন, যে সময়ে এখানকার জ্যোতির্বিবদরুদ প্রাতে দুই দণ্ড দশপল গতে নৈঋত কোণে বায়ুস কী কী রব করিলে সে দিন কিপ্রকারে বাইরে ইত্যাদি বিষয় নির্ণয় পূর্বক কাকচরিত্র রচনা করিতেছিলেন, যে সময়ে এদেশের অধ্যাপকবৃন্দ “তাল পড়িয়া চিপ করে কি টিপ কবিয়া পড়ে” ইত্যাকার তর্কের মীমাংসায় সভাস্থলে ভীতি উৎপাদন করিয়া সমবেত জনগণের অস্তরে শামুভঙ্গের আশঙ্কা উৎপাদন করিতেছিলেন, সেই সময়ে টুয়োরোপখণ্ডে গালিলিও, কেপ্লার, নিউটন প্রভৃতি মনস্বিগণ উদীয়মান হষ্টয়া প্রকৃতির নূতন নূতন তত্ত্ব উদ্‌ঘাটন পূৰ্ব্বক জ্ঞানজগতে যুগান্তর উপস্থিত করিতেছিলেন। তাই বলি, আজ সহস্ৰ বৎসর ধবিয়া হিন্দুজাতি নিম্পদ ও অসাড় ইষ্টয়া পড়িয়া রহিয়াছে। যাগ হউক, বিধাতার কৃপায় হাওয়া ফিরিয়াছে ; মরা গাঙে সত্য সত্যই বাণ ডাকিয়াছে । আজ বাঙ্গালী জাতি ও সমগ্র ভারত নূতন উৎসাহে, নূতন বঙ্গসাহিত্যে-বিজ্ঞান । এষ্ট দারিদ্র্য রচিবে না। প্রায় সহস্ৰ বৎসর ধবিয়া চিন্দজাতি جنین ভারতের সমৃদ্ধিসোপান বলিয়া নির্দেশ করিলেন નઃ નિરી বুঝি বিধাতা ভারতের প্রতি পুনরায় শুভদৃষ্টিপাত করিলেন। জগতের ইতিহাস পর্য্যালোচনা করিলে দেখিতে পাওয়া যায়, যে সকল জাতি পুরাতন আচার, ব্যবহার জ্ঞান ও শিক্ষা বিষয়ে নিতান্তই গোড়া, যাহার ਾਂ শিক্ষার ও প্রাচীন প্রথার নামে আত্মহারা হন, যাহার। বর্তমান জগতের জীবস্তভাব জাতীয় জীবনে সংবেশিত করা হঠকারিতা বলিয়া মনে করেন, তাহারা বর্তমান কালের ইতিহাসে নগণ্য ও মৃতপ্রায় ; এমন কি এই সমস্ত জাতি নূতনের প্রবল সংঘর্ষণে লুপ্ত হইবার উপক্রম হইয়াছে। এ বিষয়ে কিছুমাত্র ও সন্দেহ নাই যে বর্তমান ইয়োরোপের শিক্ষা অতাল্পকাল হইল আরম্ভ হইয়াছে ; কিন্তু আমরা ইহ যেন না ভুলি যে বর্তমান অবস্থায় ইয়োরোপ আমাদিগকে যোজনাধিক পশ্চাতে ফেলিয়া বিজ্ঞান ও সাহিত্যের পূর্ণোন্নতির দিকে অগ্রসর হইয়াছে। আমার স্বতঃই মনে হয় আমাদের এই অধোগতির কারণ পুরাতনের প্রতি এক অস্বাভাবিক ও অনেক সময়ে অহেতুক আসক্তি এবং অপরাপর জাতির গুণাবলীর প্রতি বিদ্বেষ ও তাচ্ছিল্যের ভাব। এস্থানে অবশু স্বীকার্য যে আমাদের পূর্বপুরুষগণের আচারপদ্ধতি ও শিক্ষা অনেক সময়ে বর্তমান সভ্যজাতিগণের আচারপদ্ধতি হইতেও শ্রেষ্ঠ ছিল এবং সে সমুদায়ের প্রতি ভক্তিবিহীন হওয়া মূঢ়তার লক্ষণ गट्नरु नाझे । किड़ কালের পরিবর্তনে অনেক বিষয়ের আমূল পরিবর্তন সংঘটিত হইয়াছে—যেমন বাহ জগতে, তেমনই মানসিক রাজ্যে। এস্থানে প্রশ্নটি একটু বিশদভাবে আলোচনা করা কর্তব্য। আমি । আশঙ্কিত হইতেছি পাছে কাহারও মনে অপ্রীতি সঞ্চার করিয়া ফেলি, কিন্তু যদি স্বাধীন চিন্তা মানব মাত্রেরই পৈত্রিক । সম্পত্তি হয় তাহ হইলে আমাকে বলিতেই হইবে যেপরকীয় শিক্ষা ও জ্ঞানের গ্রহণেচ্ছ। আমাদের আদৌ নাই যদি থাকিত তাহা হইলে অন্ততঃ বিজ্ঞান বিষয়ে क्लबार्न ইয়োরোপ ও আমেরিকা আমাদের অনুকরণীয় श्ङ । এই প্রাচ্য এবং প্রতীচ্য শিক্ষার সংমিশ্রণের উপরেই আমার মতে ভাৰী ভারতের সমৃদ্ধি নির্ভর করিতেছে। যে জাপান ত্রিংশ বর্ষ পূৰ্ব্বে ঘোর তমসাচ্ছন্ন ছিল, জগতে যাহার অস্তিত্ব (ঐতিহাসিক হিসাবে) সন্দেহের বিষয় ছিল, সেই জাপান