পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিবাজী ও মুসলমান বন্দিনী । শ্ৰীক্ত মহাদেব বিশ্বনাথ ধুবন্ধব কর্তৃক অঙ্কিত চিত্র হতে । , “ সত্যম শিবম সুন্দরম।” “ নায়মাত্মা বলহীনেন লভ্যঃ।” ৮ম ভাগ । | জ্যৈষ্ঠ, SNర్పి( | | ২য় সংখ্যা। গোরা । ૨૨ গোরা তাহার স্বাভাবিক দ্রুতগতি পরিত্যাগ করিয়া অন্যমনস্কভাবে ধীরে ধীরে বাড়ি চলিল। বাড়ি যাইবার সহজপথ ছাড়িয়া সে অনেকটা ঘুরিয়া গঙ্গার ধারের রাস্ত ধরিল। তথন কলিকাতার গঙ্গা ও গঙ্গার ধার বণিক্সভ্য তার লাভ-লোলুপ কুন্ত্রতার জলে স্থলে আক্রান্ত হইয়া তীরে রেলের লাইন ও নীরে ব্রিজের বেড়ি পরে নাই। তখনকার গীতসন্ধ্যায় নগরের নিঃশ্বাসকালিম আকাশকে এমন নিবিড় করিয়া আচ্ছন্ন করিত না। নদী তখন বহুদূর হিমালয়ের নির্জন গিরিশৃঙ্গ হইতে কলিকাতার ধূলিলিপ্ত ব্যস্ততার মাঝখানে শাস্তির বার্তা বহন করিয়া আনিত। প্রকৃতি কোনো দিন গোরার মনকে আকর্ষণ করিবার অবকাশ পায় নাই। তাহার মন নিজের সচেষ্টতার বেগে নিজে কেবলই তরঙ্গিত হইয়াছিল ;–যে জল স্থল আকাশ অব্যবহিতভাবে তাহার চেষ্টার ক্ষেত্র নহে তাহাকে সে লক্ষ্যই করে নাই। আজ কিন্তু নদীর উপরকার ঐ আকাশ আপনার নক্ষত্রালোকে অভিষিক্ত অন্ধকার দ্বারা গোরার হৃদয়কে انستیت-سیاسی বারম্বার নিঃশব্দে স্পর্শ করিতে লাগিল। নদী নিস্তরঙ্গ। কলিকাতার তীরের ঘাটে কতকগুলি নৌকায় আলো জ্বলিতেছে, আর, কতকগুলি দ্বীপহীন নিস্তব্ধ। ওপারের নিবিড় গাছগুলির মধ্যে কালিমা ঘনীভূত। তাঁহারই উদ্ধে বৃহস্পতিগ্রহ অন্ধকারের অন্তর্যামীর- মত তিমিরভেদী অনিমেষ দৃষ্টিতে স্থির হইয়া আছে। আজ এই বৃহৎ নিস্তব্ধ প্রকৃতি গোরার শরীক্ষ-মনকে যেন অভিভূত করিয়া দিল। গোরার হৃৎপিণ্ডের সমান তালে আকাশের বিরাট অন্ধকার স্পদিত হইতে লাগিল। প্রকৃতি এতকাল ধৈর্য্য ধরিয়া স্থির হইয়াছিল-আজ গোরার অন্তঃকরণের কোন দ্বারটা খোলা পাইয়া সে মুহূর্তের মধ্যে এই অসতর্ক দুর্গটিকে আপনার করিয়া লইল। এতদিন নিজের বিদ্যাবুদ্ধি চিন্তা ও কৰ্ম্ম লইয়া গোরা অত্যন্ত স্বতন্ত্র ছিল—আজ কি হইল ? আজ কোনখানে সে প্রকৃতিকে স্বীকার করিল এবং করিবামাত্রই এই গভীর কালোজল, এই নিবিড় কালে তট, ঐ উদার কালো আকাশ তাহাকে বরণ করিয়া লইল। আজ প্রকৃতির কাছে কেমন করিয়া গোরা ধরা পড়িয়া গেছে। পথের ধারে সদাগরের আপিসের বাগানে কোন বিলাতী লতা হইতে একটা অপরিচিত ফুলের মৃত্যুকোমল গন্ধ গোৱার