পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/৩৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ميانS -l.-l.--പ്-l.--l.". ------------- ....-- ...--م۔۔--م_۔ - '.আলোচ্য ইতিহাস-শাখা প্রত্যেক জেলার বা গ্রামের ইতিহাসের উপাদান সংগ্রহ ; প্রাচীন মুদ্রা, খোদিত লিপি, প্রাচীন দুর্গ অট্টালিকা প্রভৃতির ধ্বংসাবশেষ চিত্রও তাহার বিবরণ সংকলন ; ঐতিহাসিক কিম্বদন্তীর উদ্ধার ও সমা-- লোচনা ও ইতিহাসের সহিত তাহায় সমন্বয়সাধন এবং ঐতিহাসিক ও প্রসিদ্ধ তীর্থাদির তালিকা ও বিবরণ সংগ্ৰহ করিবে। ভূগোল, খগোল, মানবজাতিবিজ্ঞান এবং সমাজবিজ্ঞান প্রভৃতি আপাততঃ এই শাখারই অন্তভূক্ত করা যাইতে পারে। দেশের সামাজিক আচার ব্যবহার, পৰ্ব্ব-উৎসবাদির আলোচনা এৰং হাড়ি ডোম, বাগদি বাউরী, রাজবংশী প্রভৃতি অনাৰ্য্য জাতি সমূহের সমাজতত্ত্ব ও আর্য্য জাতির সহিত তাহীদের সম্পর্ক বিচার করা বাঞ্ছনীয়। এতদ্ব্যতীত দেশের বিবিধ ধৰ্ম্মসম্প্রদায়ের ইতিবৃত্ত এবং বিভিন্ন জাতির কুলগ্রন্থাপ্তির আলোচনা এই শাখারই উদেখ রূপে গণ্য হওয়া উচিত । আর একটা কাৰ্য্য আমার বিশেষ প্রয়োজনীয় বলিয়৷ মনে হয়। আমাদের দেশের কৃষিশিল্প বাণিজ্যের একখানি সৰ্ব্বাঙ্গ সুন্দর ইতিবৃত্তের আবশুকত অনেক দিন হইতে অমুভূত হইয়া আসিতেছে কিন্তু কাহাকেও এ কার্য্যে হস্তক্ষেপ করিতে শুনি নাই। উত্তর বঙ্গের প্রতি জেলায় প্রতি নগরের ক্ষুদ্র, বৃহৎ, উন্নত অনুন্নত, জীবিত, অৰ্দ্ধমৃত, মৃত—সৰ্ব্ববিধ কৃষি শিল্পের একখানি ইতিহাস প্রস্তুত হইলে দেশের প্রভূত উপকার হইবার সম্ভাবনা। ইহাতে কি উপায়ে মৃত শিল্পগুলির পুনরুদ্ধার সাধিত হইতে পারে, কি বৈজ্ঞানিক প্রণালীতে কাৰ্য্য করিলে জীবিত শিল্পাদির - আন্তর উন্নতি হইতে পারে তৎসমুদ্বয়ের বিস্তৃত আলোচনা থাকিবে এবং কোন স্থানে কোন লয়ের, কোন বাণিজ্যের বী কোন কৃষি কাৰ্য্যের প্রচলন অধিক তাহারও আভাস প্রদত্ত হইবে। পরিশেষে দেশের শিল্প বাণিজ্যের পুৰ্ব্বতন গৌরব কাহিনী ও অবনতির কারণ পরম্পর সংযোজিত করিয়া দিতে পারলে ভাল হয়। - - (৩) বিজ্ঞান শাখা । যেরূপ সময় আসিয়াছে তাহাতে বিজ্ঞানের প্রভূত আলোচনা ব্যতীত আমরা সংসার ক্ষেত্রে জয়যুক্ত হইতে প্রবাসী। [ ৮ম ভাগ । من مسدسه........ পারিব না। আমাদের প্রত্যেক কাৰ্য্য-কৃষি শিল্প বাণিজ্যের প্রত্যেক কৰ্ম্ম বৈজ্ঞানিক মতে বৈজ্ঞানিক যন্ত্রাদির বলে সম্পন্ন করিতে হইবে ; নতুবা বৈদেশিক এবং প্রতিভা ও বিজ্ঞান বলে বলীয়ান প্রতিদ্বন্দ্বীর হস্তে আমাদের শিল্প বাণিজ্যের অধোগতি অবশুম্ভাবী। কতদিন আমরা কেবল বৈদেশিক পদার্থের প্রতি বিতৃষ্ণা জন্মাইয়া দেশের জনসাধারণকে নিরস্ত রাথিব ? অল্প সময়ে অধিক দ্রব্য উৎপাদন এবং সুলভে তাহার প্রচলন করিতে না পারিলে দেশের উন্নতির আশা মুদুরপরাহত। দেশের সকল লোকেই যে বয়কটা নীতি অবলম্বনে সুলভ মূল্যের বৈদেশিক সামগ্ৰী পরিহার করত: দেশীয় দ্রব্য উচ্চ মূল্যে ক্রয় করিবে তাহার আশা করা বাতুলতা মাত্র। সুতরাং আমাদের বিজ্ঞান লোচনা সৰ্ব্ব প্রথম কৰ্ত্তব্য রূপে পরিগণিত হওয়া কৰ্ত্তব্য। দেশের নানা স্থানে যে সমুদয় সাহিত্য সভা প্রতিষ্ঠিত আছে । বা ভবিষ্যতে হইবে, তাহদের দৃষ্টি এবিষয়ে পতিত হওয়া প্রার্থনীয়। আমাদের রাজসাহীর সাহিত্য সভার পরিষদের । শাখা) ইহাই বিশেষত্ব। রাজসাহী শাখা-পরিষৎ যাবতীয় বিজ্ঞানশাস্ত্রের আলোচনাই মুখ্য উদ্দেশুরূপে স্থির করিয়াছে। কৃষিশিল্পের উন্নতি করিতে হইলে রসায়ন শাস্ত্রের এবং বৈজ্ঞানিক যন্ত্রাদির আলোচনার প্রাধান্ত থাকা কৰ্ত্তব্য। তৎসহ জীব বিদ্যা, ভূবিদ্যা প্রভৃতির আলোচনাও থাকিবে। বঙ্গ দেশের কতিপয় স্থানে রাসায়নিক কৰ্ম্মাগার স্থাপিত হইয়াছে বটে এবং তাহা হইতে নানাবিধ রাসায়নিক পদার্থ ও বৈজ্ঞানিক যন্ত্রাদি প্রস্তুত হইতেছে কিন্তু এরূপ সীমাবদ্ধ। স্থানে এ দুরূহ কাৰ্য্য সুসম্পন্ন হইতে পারেন। . দেশের অভাব যেমন গুরুতর, দেশের শিল্পালয় বা যন্ত্ৰালয়ও তদ্রগ প্রচুর থাকা প্রয়োজনীয়। এইরূপ কারখানা যত অধিক সংখ্যায় স্থাপিত হইবে, ততই দেশের মঙ্গল হইতে থাকিবে। পূৰ্ব্বোক্ত তিন শাখারই প্রাচীন দ্রব্যাদি ও অভিনব ত্র • সামগ্ৰী প্রভৃতি সম্মিলনের সংস্থষ্ট প্রদর্শনীতে প্রদর্শিত হইবার ব্যবস্থা করিতে হইবে। স্ত্রী শিক্ষা বিষয়ে দুই একটা কথা বলিয়া আমি । আমার প্রস্তাবের উপসংহার করিতেছি। আমি পূৰ্ব্বেী দেখাইয়াছি যে আমাদের জাতীয় সাহিত্য, জাতীয় ধৰ্ম্মে উৎপত্তি লাভ করিয়াছে অর্থাৎ ಆ» বিভিন্ন ধৰ্ম্মাবলম্বীর - & 1. ১২শ সংখ্যা। 1 ভক্তি প্রবণতায়—বাঞ্ছিতের গুণ কীৰ্ত্তন হইতেই বাঙ্গলা সাহিত্য জন্ম লাভ করিয়াছে। ইহা কখনো কৰ্ম্মক্ষেত্রে প্রবেশ লাভ করিতে পারে নাই । এক্ষণে সাহিত্যর্কে কৰ্ম্মে প্রবেশ করাইতে হইবে ; সাহিত্যের দ্বারা যাচাতে দেশের স্থায়ী কায হইতে পারে—জনসাধারণের মঙ্গল সাধিত হইতে পারে তৎপক্ষে আমাদিগকে যত্নবান হইতে হইবে। জনৈক ইংরেজ লেখক লিথিয়া গিয়াছেন যে, গার্হস্থজীবন ও নারীজাতির সামাজিক অবস্থা হইতেই সকল দেশের সভ্যতার পরিমাপ হইয়া থাকে। শিশুগণ শৈশবকালে স্বগৃহে জননীর নিকট ষে শিক্ষা প্রাপ্ত হয়, তাহাকেই জাতীয় উন্নতির প্রধান উপাদান বলিয়া গ্রহণ করিতে হয়। নারীজাতির জীবন ও চিন্তাপ্রণালী উন্নত না হইলে কোন জাতিই প্রকৃত মহত্ব লাভ করিতে পারে না। জননীই সস্থান-হৃদয়ে যথাকালে মহম্ভাবের বীজ রোপণ করিয়া থাকেন। প্রাচীন ভারতের নারীজাতির অবস্থা উন্নত থাকিলেও বর্তমানকালে নারীজাতির অবস্থা দেখিয়া আমাদিগকে হতাশ হইতে হয়। জীবের যেমন দেহ আছে, সমাজেরও তেমন দেহ অনুমান করিয়া লওয়া যায়। জীবদেহের প্রত্যেক অঙ্গ প্রত্যঙ্গের যথোচিত বিকাশের অভাবে যেমন দেহের সৰ্ব্বাঙ্গীন পুষ্টি হয় না বা তাহার কার্য্যকারত উপলব্ধি হয় না ; সমাজদেহেরও তদ্রুপ কোনো অঙ্গ দুৰ্ব্বল *অপটু হইলে জাতীয় উন্নতি সাধিত হইতে পারে না। নারীজাতি সমাজদেহের অৰ্দ্ধাঙ্গ স্বরূপ পরিগণিত। এই অৰ্দ্ধাঙ্ক ক্ষীণ বা দুৰ্ব্বল হইলে সমাজদেহ কখনই পুর্ণ বিকশিত হইতে পারবে না। আজ সমগ্র ভারতবাসী উন্নতির পথে প্রধাবিত সত্য কিন্তু তাহার সমাজের অপরাদ্ধের প্রতি আস্থাবান নছেন ; তাহারা ভুলিয়া ধান—‘কস্তাপ্যেবং পালনীয়া শিক্ষনমাতিযত্নতঃ’, আর ভুলিয়া যান যে রমণীগণ স্বশিক্ষা প্রভাবে দৃঢ়ব্ৰত হইলে অতি দুরূহ কৰ্ম্মও সাধ্যায়ত্ত হইয়া উঠে। তাছাদের সর্বদা মনে রাখা উচিত,— ‘না জাগিলে সব ভারত-ললনা, এ ভারত আর জাগে না জাগে না।" ইতিহাস পাঠে অবগত হওয়া যায় যে, খৃষ্টপুৰ্ব্ব তৃতীয় শতাব্দীতে কুর্থেজের সহিত রোমের জীবনমরণ o উত্তরবঙ্গ সাহিত্য সন্মিলন।


t) سابینه সংগ্রামের সময় রমণীগণের বঙ্গালঙ্কারের ব্যয় । করিবার উদ্দেশ্যে রোমে এক আইন বিধিবদ্ধ হয়। রোমক মহিলাবৃন্দ স্বদেশ-প্রতিতে পুরুষগণ অপেক্ষ । নৃনি ছিলেন না, তাহারা অক্ষুব্ধ চিত্তে এই রাজ-বিধি পালন করিতে থাকেন। গ্রীস দেশান্তর্গত আর্গস নামক স্থানের এক ক্ষুদ্র অধিপতি ৰিপক্ষের সহিত এক যুদ্ধে স্বাধিকারভুক্ত এক ক্ষুদ্র গ্রাম হারাইলে, অধিবাসিনী মহিলারা প্রতিজ্ঞা করেন যে, যতদিন না সেই গ্রামের পুনরুদ্ধার হইবে ততদিন তাছারা অলঙ্কার পরিধান করিবেন না বা কোনো প্রকার বিলাসে লিপ্ত হইবেন না। জাপানের মহিলারা এতই উন্নতির সোপানে আরোহণ করিয়াছিলেন যে, যখন বৌদ্ধধৰ্ম্ম জাপানে প্রথম প্রবর্হিত হয় তখন ঐ ধৰ্ম্মের মূলতত্ত্বায়ুসন্ধানভার তিনজন রমণীর প্রতি দ্যস্ত হয় ; তাহারা ভারতবর্ষে আগমন করিয়া বৌদ্ধধৰ্ম্মের ইতিবৃত্ত সংকলন করেন। প্রকৃত শিক্ষিত হইলে রমণীগণ কিরূপ কাৰ্য্যক্ষম ও স্বদেশ-প্রেমিক হন, তাহার শত শত দৃষ্টান্ত ইতিহাস হইতে প্রদর্শন করা যাইতে পারে। সুতরাং স্ত্রী-শিক্ষা যাহাতে প্রসারলাভ করে, রমণীবৃন্দের যাহাতে স্বাস্থ্যোন্নতি হয়, সভ্যতার স্রোতকে তাহারা যাহাতে বেগশালী করিতে পারেন তাহার উপায় অবলম্বন করা আগু কৰ্ত্তব্য। আজ এই জাতীয় অত্যুত্থানের দিনে দেশের বিভিন্ন জাতিসমূহ যখন একই আদশের অভিমুখে অগ্রসর হইতে চেষ্টত হইতেছে, তখন আমাদের সকলেরই স্মরণ রাখা কৰ্ত্তব্য—cষ জাতিগঠনের ভার আমাদের উপর নহে, নারীগণের হস্তেই সন্ন্যস্ত। সন্মিলন প্রতি বৎসর একস্থানে না হইয় এক একবার উত্তরবঙ্গের এক একস্থানে হওয়া সঙ্গত বলিয়া বোধ করি। ইহাতে বিভিন্ন স্থানের সহিত আমাদের পরিচর্য স্থাপিত হইবে। এই সন্মিলনে যে সকল প্রবদ্ধ পঠিত হইবে এবং প্রদর্শনীতে যে সকল দ্রব্য প্রশিত হইবে তাহাতে যে জেলায় সন্মিলন বসিতেছে- সেই জেলার বিশেষত্ব থাক। আবখ্যক । সন্মিলন ভারতের ভিন্ন ভিন্ন ভাষা শিক্ষা করিবার ও ভিন্ন ভিন্ন প্রদেশের বাঙ্গালী ভাষা ও সাহিত্যের ও বাঙ্গালীর আশা আকাঙ্ক্ষার বিস্তার পরিচয় দিবার ব্যবস্থা করিতে পাৰিলে বড়ই ভাল হয়।