পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/৩৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬৯০ শক্তির তীক্ষত হারাষ্টয়া ইগরা যখন কুকুরের মত গন্ধ গ্রহণ করিয়া আহাৰ্য্য অনুসন্ধানাদি কবিতে পাবিত না, এবং তীক্ষ দৃষ্টির অভাবে দূরস্থ শত্রুর গতিবিধি লক্ষ্য করা যখন তাহাদের পক্ষে অসম্ভব হইয়া দাড়াইয়াছিল, তখন আত্মরক্ষার অন্য উপায় না থাকায় বুদ্ধির পরিচালনা করিয়া কাৰ্য্য সম্পন্ন করা ব্যতীত তাহীদের আর গতান্তর ছিল না। এই পরিবর্তনই ইহাদের উন্নতির পথ উন্মুক্ত করিয়া দিয়াছিল। ইহার পর পূৰ্ব্বোক্ত প্রাণীদিগের মধ্যে বুদ্ধি পরিচালনার কৌশল লইয়াই প্রতিযোগিতা চলিয়াছিল বলিয়া মনে হয়। বৃক্ষবিহারী প্রাণী হইতে যখন হস্তপদাদিযুক্ত মনুষ্যাকৃতি জীবের উৎপত্তি হইয়াছিল, তখন উহাদিগকে পশুপক্ষী বধ করিয়াই জীবন ধারণ করিতে হইত। বলা বাহুল্য এই কাৰ্য্য তাহাদের বুদ্ধিবিকাশের খুবই সাহায্য করিত। সমস্ত বৎসর ধরিয়া কোন স্থলেই হাতের গোড়ায় শিকার পাওয়া যায় না। কাজেই বুদ্ধিমান শিকারীকে ভবিষ্যতের চিস্তা অভ্যাস করিতে হইয়াছিল। যাহার এই চিন্তায় অনভ্যস্ত ছিল ক্ষুৎপিপাসা ও অনাহারে তাছাদের সকলকে সবংশে মৃত্যুমুখে পড়িতে হইত। এই প্রকারে কেবল একটিমাত্র উন্নতৰুদ্ধি নরাকৃতি জাতি পৃথিবীতে টি কিয়৷ থাকিতে পাবিয়াছিল। ইহাকেই আধুনিক মানবজাতির পিতামহ বলা যাইতে পারে। এই অসম্পূর্ণ মানবই ধীরে ধীরে পূর্ণতার দিকে অগ্রসর হইয়া আধুনিক মনুষ্যজাতির সৃষ্টি করিয়াছে। মনুষ্যসৃষ্টর ঠিক পূৰ্ব্বেকার ব্যাপারগুলি আলোচনা করিলে মনে হয়, অসম্পূর্ণ মানব কতকগুলি প্রাকৃতিক দানকে অব্যবহারে কার্যের অনুপযোগী করিয়া নিজের উন্নতি খুব দ্রুত কৰিয়া তুলিয়াছিল। এই স্বেচ্ছাকৃত নিঃসহায়তা মানুষকে থেরিয়া না দাড়াইলে, সেই মানুষ কখনই এতদিনে এখনকার মানুষে পরিণত হইতে পারিত না । সেই নিঃসহায়তাই মানুষকে গৃহবন্ত্র ও অস্ত্রাদি নিৰ্ম্মাণের কৌশল শিখাইয়াছে। . মানুষ যদি পক্ষীর স্তায় প্রকৃতিদন্ত বন্ধে দেহ আবৃত রাথিত, এবং তাহদের স্তায় পক্ষবিশিষ্ট হইয়া যথেচ্ছ গমনাগমন করিয়া সহজে আহার্য সংস্থান করিতে পারিত, তবে আজ আমরা মনুষ্যজাতিতে আধুনিক সভ্যতার প্রবাসী। - [ ৮ম ভাগ। লেশমাত্র দেখিতাম না, এবং উড়িবার কল আবিষ্কারের জন্য দেশের বড় বড় পণ্ডিতদিগকে চিন্তাকুল দেখিতাম না। প্রকৃতির বৈরিতাই পশুত্বে মনুষ্যত্বের আরোপ করিয়াছে। শ্রীজগদানন্দ রায়। c. স্বয়ংবহ যন্ত্র ।* অধ্যাপক যোগেশচন্দ্র রায় কর্তৃক লিখিত। বংগীয় সাহিত্য সন্মিলনে এই যে প্রবন্ধ উপস্থিত করি, তেছি, তাহাতে নূতন কথা কিছুই নাই। ভূমণ্ডলে নূতন না কি কিছুই নাই। থাক বা নাই থাক, আমরা পুৱা তনের দিকে তাকাইয়া সুখী হই, কখনও বা কদাচিং ক্ষুব্ধও হই। কিন্তু একথা নিশ্চিত, পুরাতনের সহিত নূতনের যোগ ঘটাইতে না পারিলে নূতন দ্বারা জাতীয় দেহের পুষ্টি হয় না। কালের স্রোত বহিয়া যাইতেছে। প্রাচীনের দিনে সূর্য এবং রাত্রে তারা দেখিয়া সেই এক-টানা শ্ৰেীতের বিভাগ করিতেন। কিন্তু দিবা ও রাত্রি ছোট ছোট নয়, পূৰ্ব্বাহপরাষ্ট্র ও ছোট নয়। দিলাভাগে উচ্চ বৃক্ষের ছায়, যষ্টব ছায়া, এমন কি আমাদের দেহের ছায় পরিমাণ করিয়া স্থূলত: কাল অবধারণ করায় বিচিত্র কিছু নাই। বোধ হয় ইহা হইতে দণ্ড অর্থে কাল-বিভাগ-বিশেষ হইয়াছে । - * কিন্তু ছায়াও স্বৰ্য-সাপেক্ষ। এই হেতু তাম্রী বা ঘটার @ा5शन ट्ठेग्राझिल । डामनिर्मिङ चाफेद निम्ना{ लटेंब्र ঘটা যন্ত্র হইত। ইহাব আকার মাথার খুলীর তুল্য। এই হেতু কোন কোন সিদ্ধান্তে ইহাকে কপাল-যন্ত্রও বলা হইয়াছে। ঘটের অধোভাগে সুহ্ম ছিদ্র থাকিত। স্বচ্ছ জলে ভাসায়া দিলে ঘটে ছিদ্র দিয়া জল প্রবেশ করিত এবং কিয়ং কাল পরে ডুবিয়া যাইত। অহোরারে-জ্যোত্তিৰে নক্ষত্র অঙ্গেরাত্রে-বাটি বার ডুবিতে পারে, এইরূপ প্রমাণের ঘটা নির্মিত হইত। যে সময়ে ঘটা একবার ডুবিত, সে সময়ের নাম ও ঘটী বা ঘটিকা । ঘট হইতে বাংগল ঘড়ী

  • রাজশাহীতে বংগীয় সাহিত্য পরিষদের বার্ষিক সম্মিলনে পত্ত্বি হইয়াছিল। w

4. ১২শ সংখ্যা । | শব্দ । ঘটতে ষাটি পল পরিমিত জল ধরিতে পারিত। ৬০ পলে এক ঘটিকা। বাংগল তেলের পলাতে সেই পল শব্দ রহিয়াছে। ঋগ্‌বেদাংগ জ্যোতিষে ঘটার পরিবর্তে প্রস্থ সংজ্ঞা আছে। বিষ্ণু পুরাণেও প্রস্থ সংজ্ঞা আছে। জল তৈলাদির মান পাত্রের নাম প্রস্থ ছিল। অতএব কত প্রাচীন কাল হইতে যে এদেশে ঘটী যন্ত্রের ব্যবহার আছে, তাহা বলিতে পারা যায়ু না । কিন্তু যে যন্ত্র দ্বারা কালজ্ঞানার্থ লোক বসাষ্টয়া রাখা আবশ্যক, তাহা কদাপি সকলের ব্যবহারযোগ্য হইতে পারে না। এই হেতু লল্লাদি জ্যোতিষী স্বেচ্ছামত ঘটী ১ম চিত্র। নাড়িকাযন্ত্র। নির্মাণের উপদেশ করিয়াছেন। এক অহোরাত্রে ঘট। কতবার ডুবিল তাহ জানিয়া ত্রৈমাশিক দ্বারা সেই ঘটী কাল পাওয়া যায়। ব্রহ্ম গুপ্ত ( খ্ৰীঃ ৭ম শতাব্দী) অন্য প্রকার ঘটা যন্ত্রের উল্লেখ করিয়াছেন। তিনি বলিয়াছেন, ইষ্টপ্রমাণ নলকের (সমপরিবর্তুল পাত্রের ) মূলে ছিদ্র করিয়া জল পূর্ণ করবে। এক এক ঘটা কালে জলস্রাব হেতু দলের উচ্চতা যত য'। কমিয়া যাবে, নলকের গাএ সেখানে স্বয়ংবহ যন্ত্র । ৬৯১ --- - -------- সেখানে অংক দিলে অনায়াসে কাল জ্ঞান হইতে পারবে। ১ম চিত্র দেখুন। ঘট যন্ত্রের প্রত্যেক নিমজ্জন না দেখিলে সময় জানা যায় না, নাড়িক যন্ত্রে সে অস্ববিধা নাই। বোধ হয় এই নাড়িক যন্ত্র নাম হইতে দ্বও বা ঘটার নামান্তর নাড়ী বা নাড়িকা হইয়াছে। শুধু এদেশে নয়, প্রাচীন মিশরে ও বেবিলোনিয়াতে এবং তথা হইতে গ্রীসে এবং যুরোপের অন্তান্ত দেশে জলস্রাব দেখিয়া সময় জ্ঞান হইত। শুধু প্রাচীন কালই বা কেন, খ্রীষ্টের ১৬শ শতাব্দীতে দেনমার্ক দেশীয় প্রসিদ্ধ জ্যোতিবিদ তায়কে ব্রাহি তাহার বেধ শালায় জল-ঘড়ী দ্বারা কাল পরিমাণ করিতেন। চীনেরা এখনও করে, এবং আমাদের দেশ হইতে তাবী এখনও তিরোহিত হয় নাই । কিন্তু আমাদের তাস্ত্রী ও যুরোপের জল-ঘড়ীর মধ্যে একটু প্রভেদ আছে। এদেশে তাস্ত্রীতে জল প্রবেশ দেখিয়া, যুরোপে পাত্র হইতে জল নিঃসরণ দেখিয়া কালজ্ঞান হইত। পাত্র হষ্টতে ছিদ্র পথে জল নিঃস্তত হইতে থাকলে সমকালে সম পরিমিত জল বহির্গত হয় না। কারণ পাত্রে জলের উচ্চতা যত কমিতে থাকে, জল-স্ৰাব-বেগ তত কমে। এই হেতু জলপাত্ৰ সৰ্ব্বদা জলপূর্ণ রাখিতে হইত। ২য় চিত্র দেখুন। আরও প্রভেদ আছে। গ্রীকদিগের গণনায় দিবা অর্থে সূর্য্যোদয় হষ্টতে স্বৰ্য্যাস্তকাল, এবং এই কালের দ্বাদশ ভাগের এক ভাগের নাম ঘণ্টা ছিল। স্বতরাং গ্রীষ্মকালে তাঁহাদিগের ঘণ্টা দীর্ঘ এবং শীতকালে হ্রস্ব হইত। এরূপ - অসমান ঘণ্টা জ্ঞাপক জল-ঘড়ী নির্মাণ করা সহজ ছিল না। ’ আমাদের সে অসুবিধা ছিল না ; জ্যোতিষে অপরিবর্তনীয় ২ নক্ষত্র অহোরাত্র, লৌকিক ব্যবহারে সাবন অহোরাত্র সমান ভাগ করলেই চলিত। স্বতরাং ঋতুভেদে ছোট-বড় ঘটা আবশুক হইত না । - পূর্বকালে নাড়িলা যন্ত্রের জল-স্ত্রা দ্বারা বহুবিধ যন্ত্র চালিত হইত। লন্স (খ্ৰীঃ ৬ষ্ঠ শতাব্দী) ব্রহমণ্ডপ্ত, ভাস্কর প্রভৃতি প্রাচীন খ্যাতনাম জ্যোতিষীগণ এই প্রকার যন্ত্র নুনাধিক বর্ণনা করিয়া গিয়াছেন। এমন কি, সেদিনকার মহামহোপাধ্যায় v চন্দ্রশেখর সিংহ সামন্ত মহাশয়ও এইরূপ