পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/৩৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ও ব্ৰহম গুপ্ত কখনও দেখেন নাই ; স্বর্য সিদ্ধাস্ত ও r প্রবাসী । - - ভাস্করাচার্যের সিদ্ধাস্তশিরোমণি তাহার সম্বল ছিল। তিনি বলিয়ছিলেন, এই যন্ধের সম্পূর্ণ বর্ণনা কোথাও পাই নাই, প্রাচীন সিদ্ধান্ত-লিখিত স্বত্র-জল-পারদ এবং অলাবু স্মরণ করিয়া নিজের অনুভব দ্বারা এক স্বয়ংবহ নির্মাণ করিয়াছিলাম। সে যন্ত্রের আকার এই। ৩য় চিত্র দেখুন। একটি চক্র দুই আধারে স্থিত আছে। চক্রের নেমিতে এক স্বত্র বেষ্টিত আছে। স্বত্রের এক অগ্র চক্রে বন্ধ ; অন্য অগ্র হইতে কিঞ্চিৎ পারদফুক্ত এক অলাবু লম্বিত আছে। এই অলাবু এক বৃহৎ জলকুণ্ডের জলে ভাসিতেছে। কুও হইতে জলস্রাব হইলে আলাবু निश्व१ामैौ হয়, তখন স্বত্র বদ্ধ চক্রট অল্পে অরে ঘুরিতে থাকে। বলা বাহুল্য, তাহার উদভাবনা শক্তির পরিচয়ে আশ্চর্য হইয়াছিলাম। আর বুঝিয়াছিলাম, আমাদের চিন্তাপ্রণালী অধুনা স্বতন্ত্র হইয়া পড়িয়াছে। কারণ যদিও অবিকল এইরূপ যন্ত্র ব্রহমগুপ্ত বলিয়া গিয়াছেন, তাহার একটি আর্য হইতে বস্তু জ্ঞান হওয়া দুরূহ।* কোন প্রকারে একটা গতি পাইলে তদ্বারা পুত্তলিকার নৃত্যের তুল্য অন্য বস্তুর গতি সম্পাদন করিতে পারা যায়। আমাদের পূৰ্ব্বাচার্যগণ নাড়িক যন্ত্র সাহায্যে গ্ৰহ নক্ষত্র o চক্রও খুৱাইতেন। আজিকালি বিদ্যালয়ে বিলাত ‘ওরেী যন্ত্র যেরূপ, সেকালে গোল যন্ত্র সেরূপ ছিল । জলস্রাব দ্বারা তাহ ঘূর্ণিত হইত। সুতরাং প্রচুর শিল্পনৈপুণ্য अ'नैः শুক হইত। ইহা দ্বারা লগ্নাদি কালজ্ঞানও হইত। লল্প এবং ব্ৰহম গুপ্ত কাল জ্ঞাপক বহুবিধ যন্ত্রের উল্লেখ করিয়াছেন। একটি এইরূপ। ৪র্থ চিত্র দেখুন। এক ৮ম ভাগ। ২য় চিত্র। জলঘড়ী। যন্ত্র রচনা আবশুক বিবেচনা করিয়াছিলেন। যে যন্ত্র আপনি ভ্রমণ করিতে থাকে, যাহা কোন মানুষ চালায় না, সে যন্ত্রকে প্রাচীনের স্বয়ংলহ বলিতেন। একদিন সামন্ত মহাশয়কে স্বয়ংবহ নির্মাণ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করিয়াছিলাম। তিনি লল্প వ్రై ব্রহ্মগুপ্তের টাকার অর্থান্তর ঘটাইয়াছেন। দ্বিবেদ মহাশয় মনে করিয়াছেন, জলস্রাবের আঘাতে চক্রটি ভ্রমণ করিবে । বস্তুত: জলগ্ৰাব- হেতু অলাবু নামিতে থাকে, সঙ্গে সঙ্গে চক্রটি ভ্রমণ করে। ব্রহ্মগুপ্তের • শ্লোকটি এই— কীল স্তোপরিগামিনি তৎপর্যয় স্বত্রকে ধৃতমলাবু। প্রাগবল্ললকে প্রক্ষিপ নাড়িক প্রবতি পানীয়ে । লল্প স্পষ্ট । যথা, জল কুণ্ডে হধশিদ্রে ঘটিকা কালাক্ষিতে জলক্রত্যা। গোলে বেষ্টন স্বত্রাগ্রবদ্ধতুৰ্থং ক্ষিপেৎ সরসম প্রবতি চ যথাযথাস্ত স্তথাস্থালাৰু গচ্ছমানমঃ ভ্রমল্পতি গোলকমন্তে৷ স্কুলৰ নার্জিতা: | ংবহ ঘটচক্র ।

  • ৩য় চিত্র।

এমন দুরূহ যে মহামহোপাধ্যায় পত্তিত হুধাকর দ্বিবেদী মহাশয়ও | ১২শ সংখ্যা । ] ৪র্থ চিত্র। স্বয়ংবহ নরমন্ত্র। মচুন্যমূৰ্ত্তির মধ্যভাগে মুখপৰ্য্যস্ত এক ছিদ্র আছে। তাহার উদরে অতি দীর্ঘ কিন্তু অত্যন্নপরিসর বস্ত্রখণ্ড আছে। মন্থয্যের মুখ মধ্যে স্থাপিত এক কীলক-নলের (মস্বণ ঋজু ণ্ডের উপরে স্থিত নলের বা আধুনিক কপিকলের চাকার ) উপর দিয়া বস্ত্রের এক অগ্র বহির্গত হইয়াছে। এই অগ্ৰে আবগুক পরিমিত পারদফুক্ত এক অলাবু বদ্ধ আছে। অলাবুটি এক কুণ্ডের জলে ভাসিতেছে। কুও হইতে জল যেমন নির্গত হইবে, মনুষের মুখ হইতে বস্ত্ৰও তেমন বহির্গত হইবে বস্ত্রের যত অঙ্গুলী বাহিরে আসিলে এক এক দণ্ড সময় হইত, তত অঙ্গুল দূরে দূরে বস্ত্রে গুটিকা বদ্ধ থাকিত। দুই দণ্ড গত হইলে দুইটি গুটিক, তিন দও গত হইলে তিনটি গুটিক, এই ক্রমে গুটিকা বহির্গত হইত। কত দণ্ড সময় গত, তাহা গুটিকার সংখ্যা দেখিয়৷ সাধারণ লোকে বুঝিতে পারিত। এইরূপ কোন যন্ত্রে এক নরমূৰ্ত্তি নিকটস্থ অন্ত নরমূৰ্ত্তির মুখে জল নিক্ষেপ রত, কোন যন্ত্রে বর মুখ দিয়া বধূর স্বয়ংবহ যন্ত্র । ৬৯৩ - মুখে গুটিকা প্রক্ষেপ করিত, কোন যন্ত্রে দুই মল্ল যুদ্ধ কতি, কোন যন্ত্রে ময়ুর সর্প গিলিত, কোন যন্ত্রে কাঠি নিক্ষিপ্ত হইয়া পটহে কিংবা ঘণ্টায় শব্দ করিত, ইত্যাদি। এই সকল কৌতুকজনক যন্ধের উদ্দেশ্য কালজ্ঞাপন। আজি কালি যেমন বিলাতী ঘড়ীতে নরনারীর মূৰ্ত্তির অঙ্গ বিশেষ চালিত করিয়া শিল্পী গ্রাম্য জনকে বিস্মিত করে, সেকালের জল ঘড়ীতে তেমনি করিত। পটহবাদ্য কিংবা ঘণ্টাবাদ্যের সহিত আজিকালির বিলাতী ঘড়ীর ঘন্টীবান্ধ তুলনা করা যাইতে পারে। কথিত আছে পূৰ্ব্বকালে—খ্ৰীষ্টজন্মের নাকি পূর্ক্সে– আলেকজান্দ্রিয়া নগরে কোন জ্যোতিষী কুণ্ডে জলস্রাব করাষ্টর ঘণ্টাঙ্কিত চক্র চালাইতেন। ৫ম চিত্র দেখুন। খ্ৰীঃ ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে কনস্টাটিনোপল নগরে এক চমৎকার পিত্তল ১টা হইতে ১২টা বাজাইত। খ্ৰীঃ ৯ম শতাব্দীতে সম্রাট শালমেনকে পারস্তাধিপতি এক জল-ঘড়ী উপহার দিয়াছিলেন। তাঁহাতে ১২ঘণ্টা জানাইতে ১২টা দ্বার ছিল। এক এক ঘণ্টায় এক এক দ্বার খুলিত, এবং যত ঘণ্টা সময় তত গুটিকা বহির্গত হইয়া এক পটহের উপরে পড়িত। মানুষের স্বভাব চিরদিন সৰ্ব্বত্র একই প্রকার আছে। শিল্পীর মন এক বিষয়ে আবদ্ধ থাকে না। যিনি একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেন, তিনি অন্য যন্ত্ৰ নিৰ্ম্মাণে ধাবিত হন। সেকালের আর্যগণ পারদ জল তৈল সাহায্যে চক্র ভ্রমণের প্রয়াস পাইয়াছিলেন। এরূপ স্বয়ংবহ যন্ত্রের উল্লেখ লল্লে (খ্ৰীঃ ৬ষ্ঠ শতাব্দী) প্রথম পাই। তারপর ব্রহ্মগুপ্তে, - তারপর ভাস্করাচার্যে (খ্ৰীঃ ১২শ শতাব্দী) সেই বই ' ভিন্নাকারে পাই। ভাস্করের বর্ণনা অনুবাদ করিতেছি। গ্রিন্থি কালশূন্ত লঘু কুষ্ঠিময় পন্ন বলেন ত্রপলী অল্পাৎ গামার কাঠের ] এক চক্র ভ্রম-যন্ত্রে [ झन-षट्च ] शिव করিকে। উহার নেমিতে সমপ্রমাণ, সমছিদ্রযুক্ত, সমগুরু অর যোজনা করিবে ? এই সকল অর, নদীর আবন্ধের হার একই দিকে কিঞ্চিৎ বক্র হইবে। যন্ত্রের একদিকে পারদ আর-মূলে এবং অন্যদিকে অর-অগ্রে অরেন্স অর্থাংশ" পারদ পূর্ণ করিয়া অরের ছিদ্রমুখ বন্ধ করিবে- এইরূপ, চক্র দুই আধারে স্থিত হইলে স্বয়ং ভ্রমণ করিবে। কারণ .