পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

q8 গ্রামগুলি, আমাদের মতে, শুধু দক্ষিণাত্যের আদিম আদর্শ নহে, পরস্তু সম্ভবত: সমস্ত ভারতবর্ষের আদিম আদর্শ। এই প্রথম আদর্শ-গ্রাম আৰ্যদের পূৰ্ব্বে গঠিত হয়, আর্যের আসিয়া তাহার কোন পরিবর্তন করে নাই। অতএব, দাক্ষিণাত্যে ও মধ্যভারতে সাধারণ স্বত্বাধিকার অথবা অবিভক্ত স্বত্বাধিকারের কোন নিদর্শন দেখা যায় না। তবে দেখ, যে বর্গটি সৰ্ব্বাপেক্ষা বৃহৎ তাহা গণনার বাহিরে— এচলিত সিদ্ধান্তের বাহিরে পড়িয়া যাইতেছে। অবশু মেন ইহার প্রতিবাদে এইমাত্র বলিয়াছেন যে, এমন কতকগুলি গ্রাম আছে যেখানে আদিম আদর্শের গঠনটি ভাঙ্গিয় গিয়াছে। এখন সে গ্রামগুলি নাই, না থাকিলেও এককালে সেই গ্রামগুলির যৌথ স্বত্বাধিকার ছিল। ভূমির যে বিভাগপ্রণালী লইয়া তুমি প্রতিবাদ করিতেছ সে সময়ে উহা তর্কস্থলেই আসে নাই। এই বিভাগ প্রণালীর বাস্তবিকতা বহুকাল অস্বীকৃত হইয়াছিল। কিন্তু এই প্রণালীর নিদর্শন এখনও দেখা যায়; তার সাক্ষী এই দেখ না একটা প্রথা আছে--Lেপ্রথা অনুসারে জমির বিনিময়ের জন্ত কিংবা পুনর্বণ্টনের জন্য,—যে সব ভূমি পূৰ্ব্বে বিলি হইয়া গিয়াছে তাহ সাধারণভূমির মধ্যে আবার ভূক্ত করা হয়; ইহা সাধারণ স্বত্বাধিকারের একটা বিশেষ লক্ষণ বলিতে হইবে। এই তথ্যটি সম্বন্ধে পৌএল কোন ব্যাখ্যা করিবার চেষ্টা করেন নাই। তিনি শুধু বলিয়াছেন, ইহাতে একটা সাম্যপূহ প্রকাশ পায় মাত্র। সেই সব জাতিবিশেষের অন্তভূক্ত প্রত্যেক ব্যক্তিই প্রতিবেশীর সমান পরিমাণ ভূমি পাইতে চাহে। আর কিছু না, শুধু কথাটা এই—যাহাতে কোন সম্পত্তির বেশী বৃদ্ধি না হয়, তাই তাহ হইতে কিয়দংশ বাহির করিয়া লইয়া, সুবিধার জন্য আর এক অংশের মধ্যে উহাকে আনা হয়। - যাহাই বল না কেন, এই কাৰ্য্যের মধ্যে সাধারণ অধিকারের একটা ভাব আছে। এ ভাবট খুব চোখে পড়ে। উত্তর প্রদেশের কোন কোন গ্রামেও ইহা লক্ষিত হয়। সে কথা পরে বলিব। যাই হউক, এই ধ্বংসদশাগ্রস্ত দাক্ষিণাত্যের গ্রাম্যসমাজগুলি আদিম আদর্শের পরিচয় দেয় না। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে, পঞ্জাব প্রদেশে, উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে, এবং গাঙ্গেয় উপত্যকায়, প্রবাসী। [ ৮ম ভাগ। | এই আদর্শটি অক্ষুন্নভাবে,–জীবন্তভাবে সংরক্ষিত্ত্ব হইয়াছে। - | অতএব, এই কৌতুকাবহ নমুনাটি খুব নিকট হইতে নিরীক্ষণ করা আবশ্যক। দাক্ষিণাত্যের গ্রামগুলিতে কতকগুলি সাধারণ লক্ষণ দেখিবামাত্র চোখে পড়ে। এই গ্রামগুলি কোন প্রধানের দ্বারা পরিশাসিত হয় না ; পরস্তু f মুনিসিপালিটির দ্বারা পরিশাসিত হয়। এই মুনিসিপ্যালিটির | ২য় সংখ্যা । ] বাহিক। আবার গোড়ায় ফিরিয়া যাওয়া যাক। বংশতালিকা দৃষ্টে সপ্রমাণ হয় যে, বর্তমান ভূস্বামিগণ সেই সব উচ্চাধিকারবিশিষ্ট রাজা কিংবা ঠাকুরের বংশধর যাহার নিজ প্রাধান্সের অধিকারস্থত্রেই সমস্ত গ্রামটি প্রাপ্ত হয়। চিরপ্রথানুসারে, পরে এই ভূস্বামীর পুত্রপৌত্ৰাদি গ্রামটিকে অধিকার করিতে লাগিল, এই বংশ ক্রমেই বিস্তৃত হইতে লাগিল, অবশেষে গ্রামটি এই বংশেরই সম্পত্তি হইয়া গেল; BBBB BBB BBBB BBBBBBB Bi BTSAD DDDD DDDD DDD SDDB BBB DDD DDDS সমাজ, সাধারণের হইয়া, খাজনার হিসাবে একটা থো । টাকা দিতে স্বীকৃত হয়-পরে আপনাদের মধ্যে অংশ বণ্টন : করিয়া আদায় করিয়া লয়। এই প্রমাণটি সারবান হইলেও, সমবেত সমাজতন্ত্ররূপ সিদ্ধান্তে উপনীত হইবার পক্ষে যথেষ্ট নহে ! এইবার তবে চূড়ান্ত তথ্যটি তোমাদের সম্মুখে উপস্থিত করি —ব্যক্তিগত স্বত্বের হিসাবে ভূমি বিভক্ত হয় না, খণ্ডথগুরূপে জমির বণ্টন হয় না ; সমস্ত গ্রাম সমবেতভাবে জমির চাস করে, অথবা প্রজাবিলি করিয়া তাহাদের দ্বারা চাস করায়। পঞ্চায়ং ফসল ভাগ করে। ইহাই সমবেতস্বত্বাধিকারবিশিষ্ট গ্রামের অক্ষুণ্ণ জীবন্ত দৃষ্টান্ত। যে দৃষ্টান্ত মেনের নিকট স্বনিশ্চিত বলিয়া প্রতিভাত । হইয়াছিল,—অধুনা আরও সঠিক ঐতিহাসিক তথ্যের আবি স্কারে, এবং পৌএল-কর্তৃক রাশি রাশি রিপোর্টের অনুসন্ধান । ফলে, অধুনা জানা যাইতেছে যে ঐ দৃষ্টান্তটি আসলে ঠিক নহে। যে আদর্শগ্রামের অবলম্বনে মেন একটি সিস্তান্ধ খাড়া করিয়া তুলিয়াছিলেন, আসলে তাহ হইতে ওরূপ সিদ্ধান্ত স্থাপন করিবার কোন স্থায্য হেতু নাই। প্রথমতঃ রাজস্ব সংগ্রাহকদিগের রিপোটে প্রকাশ পায়, উত্তর প্রদেশে শুধু যে এই সমবেত-অধিকারেরই আদর্শ ছিল । তাহা নহে, সেখানে দুইটি বিভিন্ন আদর্শ বৰ্ত্তমান ছিল—এবং এই উভয় আদর্শের মধ্যে যে দুইটি সাধারণ লক্ষণ তাহার বিষয় পূৰ্ব্বেই বিবৃত করিয়াছি ; সে দুইটি কি? না, মুনিসিপ্যালিটি এবং রাজস্বের জন্য সমবেত দায়িত্ব। উভয় আদর্শের মধ্যে শুধু এই দুই বিষয়েই ঐক্য—ইহার বাহিরে উহারা বিভিন্ন। যে প্রথম গ্রামটিকে মেন আদর্শরূপে গ্রহণ করিয়াছেন উহ বংশবিশেষের সম্পত্তি ; এবং তাহার দ্বিতীয় গ্রামটি কোন ক্ষুদ্র শাখা-জাতির সম্পত্তি। প্রথমটির যে সমবেতত্ব সে শুধু ! ধিকারিগণের ঈর্ষা, কিংবা প্রজাদের দ্বারা ভূমি কৰ্ষিত হইত বলিয়া। কিন্তু দাক্ষিণাত্যে রীতিমত ভূমির অংশবিভাগ না থাকিলেও, বংশ-সোপানের ধাপ অনুসারে, প্রত্যক উত্তরাধিকারী, অল্পাধিক পরিমাণে খাজনা কিংবা ফসলের অধিকারী। অতএব, অবিভক্ত পারিবারিক সম্পত্তি—ইহাই প্রকৃত কথা। এ কথা ত সকলেই জানে যে, আমাদের পরিবার অপেক্ষ হিন্দু পরিবার বহুবিস্তৃত ও ঘনিষ্ঠ ঐক্য বন্ধনে বদ্ধ। রোমানদিগের দ্যায়, হিন্দু পিতা, ভূসম্পত্তির একমাত্র স্বত্বাধিকারী নহে, পরস্তু সমস্ত ভূসম্পত্তিই পারিবারিক সম্পত্তি। পরিবারের অন্তৰ্ভত ব্যক্তি মাত্রই ঐ স্বত্বের অংশী। দ্বিতীয় আদর্শের গ্রামটি—একটি ক্ষুদ্র শাখা-জাতি কর্তৃক স্থাপিত হয়। উহার উৎপত্তি এবং ঐতিহাসিক অবস্থা— এই উভয়ের মধ্যে একটা ঘনিষ্ঠ যোগ আছে। কিন্তু উহার মধ্যে অবিভক্ত স্বত্ব আদেী নাই। এই জাতির অন্তভূক্ত প্রত্যেক ব্যক্তির একটা অংশ আছে-একটা সমান অংশ আছে। প্রথম আদশটির মধ্যে,—জন্ম-সম্বন্ধ-অনুসারে, বংশ সোপানের ধাপ-অমুসারে যেরূপ এই অংশের তারতম্য হয়, এই আদর্শের মধ্যে সেরূপ কোন তারতম্য হয় না। কিন্তু আমার মনে হয়, সমবেত স্বত্বাধিকারের সিদ্ধাস্ত হইতে এখনও আমরা বহুদূরে রহিয়াছি। সমবেত স্বত্বাধিকারের অস্তিত্ব আমরা এখনও উপলব্ধি করিতে পারি নাই। অবশু, পুৰ্ব্ব-ক্রয়বিক্রয় ঘটিত স্বত্বাধিকার, স্বজাতির বাহিরে ভূমির হস্তান্তরীকরণ নিবারণের নিয়মাবলী, দাক্ষিণাত্যে প্রচলিত ভূমির সাময়িক বিনিময়—এই সমস্ত প্রথা দেখিয়াই মেন ভ্রমে পতিত হইয়াছিলেন ; এই প্রথাগুলি হইতে সহসা মনে হয় যেন ব্যক্তি অপেক্ষা জাতির কতকগুলি উচ্চতর স্বত্বাধিকার ছিল। সমসাময়িক ভারত।


q& - -------------- এখনতবে, চরম সিদ্ধান্তটিকি ? গ্রামের সমবেত স্বত্বাধিকার ছিল কি ?—না, ছিল না। মেনের মতবাদটি তথ্যের রাজ্য ছাড়াইয়া বহু উদ্ধে উঠিয়াছে। আর ব্যক্তিগত স্বত্বাধিকার ? সে কথা বলিতেছি। বলিতেছি মাত্র—তাহার অধিক নহে। দলিলাদির সাহায্যে, B. Powell এই বিষয়ে যেরূপ বিশ্নে ষণ করিয়া দেখাইয়াছেন, তাহাতে সমস্ত অস্পষ্ট সিদ্ধান্তের উচ্ছেদ হইয়াছে। প্রচলিত ব্যক্তিগত স্বত্বাধিকারের অস্তিত্ব, এমন কি, যে স্থলে ভূসম্পত্তি অবিভক্ত, সে স্থলেরও ব্যক্তিগত স্বত্বাধিকারের অস্তিত্ব তিনি বেশ দেখাইয়া দিয়াছেন। কিন্তু গ্রন্থকারের মত যাহাই হউক না কেন, তাহার বিশ্লেষণ হইতে একথাও কি স্পষ্টরূপে জানা যাইতেছে না যে, ব্যক্তিগত স্বত্বাধিকার—বংশগত উচ্চতর স্বত্বাধিকারকে রহিত করে নাই! সকলের মধ্যেই এই বিস্ময়জনক তথ্যটি বিদ্যমান – छूमिब সাময়িক বিভাগ কিংবা বিনিময়। B. Powell ইহার মধ্যে শুধু দুৰ্জয় সাম্যম্পৃহা দেখিতে পান। যদি সমস্তই সমবেত সম্পত্তি হয়, যদি সকলে মিলিয়া সাধারণ ভাবেই জমির চাস করে তাহা হইলে, ভূমির কোন অংশবিশেষ অল্প উৰ্ব্বরা হউক অধিক উৰ্ব্বরা হউক, বৃহৎ হউক, ক্ষুদ্র হউক, তাহাতে কি আইসে-যায় ? সে কথা সত্য, কিন্তু এই ব্যাপারটা সম্ভব হয় না যদি ঐ বংশ নিজস্ব অধিকার ও কর্তৃত্ব বজায় না রাখে। এই ভাবে সীমাবুদ্ধ হইলে, প্রত্যেক ব্যক্তির স্বত্বাধিকার, প্রতিনিধির স্বত্বাধিকারে পরিণত হয় ; তাহ ছাড়া আর কিছুই নহে। এই স্বত্বাধিকারের মধ্যে একটা অস্থায়িতার ভাব, আপাত-ব্যবহাৰ্য্যতার ভাব, প্রত্যাখ্যেয়তার ভাব রহিয়াছে। কিন্তু প্রত্যাখ্যান করিবে কে ? ভূমি অংশে অংশে বিভক্ত হইলেও, যে “গোষ্ঠী” (clan) নিজস্ব স্বত্বাধিকার কখন ত্যাগ করে নাই, সেই গোষ্ঠী স্বকীয় শ্রেষ্ঠ অধিকার স্বত্রেই উহ! প্রত্যাখ্যান করিতে পারে। যে কালে, স্বত্বাধিকারের ভাবটা একটু আচ্ছন্নভাবে ছিল, যে জাতি (race) অসঙ্গতির জন্ত আম্বে কুষ্ঠিত হইত না, সেই কালে ও সেই জাতির মধ্যে দুইটি বিভিন্ন স্বত্ব যে একাধারে থাকিবে তাহাতে আশ্চৰ্য্য কি ? এস্থলে ব্যক্তিগত স্বত্ব ও সমবেত স্বত্ব-পরম্পরকে বহিষ্কৃত করে না –সীমাবদ্ধ করে মাত্র । যে সিদ্ধান্ত শুধু ব্যক্তিগত স্বত্বাধিকারের উপর স্থাপিত,