পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>8bー হয়। এইরূপে রাজ্যাধিকার শুদ্ধ খাসিয়া শোণিতেই আবদ্ধ রাখা হয় । থীসিয়ারা অন্তান্ত জাতি অপেক্ষা আপনাদের শারীর বিশেষত্ব অবিকৃত রাথিয়াছে। ১৮২৬ সালে খাসিয়াদিগকে তাহাদের তিরুতজিংহ নামক এক রাজার সাহায্যে প্রথম বশীভূত করিয়া শ্ৰীহট্ট ও আসামের মধ্যে সংযোগ স্থাপিত হয়। ১৮২৯ সালের ৪ঠা এপ্রেল অজ্ঞাত কারণে (ইংরাজের মতে অ-কারণে ) সামুচর লেপ্টেনেণ্ট বেডিংফিল্ড ও লেপ্টেনেণ্ট বার্টন নিহত হন। ইহার ফলে দীর্ঘকালব্যাপী যুদ্ধাবসানে ১৮৩৩ সালে সমগ্র খাসিয়া পৰ্ব্বত ইংরাজ-অধিকৃত হয় এবং খাসিয়াদের রাজা তিরুতসিংহ আত্মসমর্পণ করে । তখন খাসিয়া পৰ্ব্বতে বংশানুক্রমিক রাজার অধীনে কতকগুলি অধিষ্ঠান দেখা গিয়াছিল ; এক এক রাজার অধীনে ২০ হইতে ৭০ খানা গ্রাম। সমগ্র জাতি একজন প্রধানের অধীনে থাকে অথচ প্রত্যেক লোকই অপরের কৰ্ত্তব্য নিয়মিত করিয়া সাধারণতন্ত্রের মত ব্যবহার করে। তিরুতসিংহ সকলের অভিপ্রায় না জানিয়াই ইংরাজের সহিত সংশ্লিষ্ট হইয়াছিল বলিয়াই পূৰ্ব্বোক্ত হত্যাকাও সংঘটিত হইয়াছিল। এতদ্দেশের এক একটা পৰ্ব্বত ৬• • • ফুট পৰ্য্যন্ত উচ্চ । নিম্নভূমি হইতে ২০০০ ফুট উচ্চে কৃষিকার্য্যোপযোগী ভূমি আছে। তাহাতে কমলা ও পাতিলেবু, আনারস, কঁঠাল, আম, স্বপারী, কলা ও টেপার প্রভৃতি ফল প্রচুর জন্মে। খাসিয়া পৰ্ব্বতের স্বাভাবিক সংস্থান ও দৃশু ভিন্ন আর একটি বিশেষত্ব আছে ; নানা আকারের স্মরণপ্রস্তর সকল দেশের সৰ্ব্বত্র দেখিতে পাওয়া যায়। এই সকল প্রস্তর বোধ হয় মৃতব্যক্তির স্মরণচিহ্নরূপে স্থাপিত হইয়া থাকিবে। এইসকল স্মারকচিহ্ন এইরূপ :—বড়, চেপ্টা, গোলাকার একখণ্ড প্রস্তর ছোট বড় নানা আকারের খাড়া পাথরের অগঠিত খুঁটির উপর বসানো থাকে যেন নানা আকারের বসিবার টুল স্থাপিত হইয়াছে ; এই সকলের উপর গ্রামবুদ্ধদিগকে বসিয়া গল্প গুঞ্জব করিতে দেখা যায়। এই টুলের মত স্মরণচিহ্ন ব্যতীত পথের ধারে বিচিত্র গঠনের চৌকা স্তম্ভও দেখা যায়। খাসিয়াদিগকে যদি জিজ্ঞাসা করা যায় যে তাহাদের পুৰ্ব্বপুরুষগণ কেন এত কষ্ট করিয়া এই সকল প্রস্তর স্থাপন করিয়াছিল, তাহা হইলে তাহারা উত্তর করে, প্রবাসী । [ ৮ম ভাগ। আপনাদের নাম রক্ষার জন্য। ঠিক এই প্রথা উত্ত্ব সিংতুমের হো জাতির মধ্যে পাওয়া যায় ; হয়ত ইহার এককালে একই জাতি ছিল । খাসিয়াদিগের অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়া এইরূপে অনুষ্ঠিত হয় :শব ৪৫ দিন কখনো বা ৪৫ মাস গৃহে রাখা হয় ; অধিক দিন রাখিতে হইলে শব থোঙ্গোলো গাছের গুড়ির মধ্যে রাথিয়া ধোয়া দিয়া শুকাইয়া লইতে হয়। অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়া সকল আয়োজন শেষ হইলে শব পোড়াইয়া ফেলা হয়। একটা মাচা করিয়া মহা আড়ম্বরের সহিত চারি জনে শব বহন করিয়া দাহস্থানে লইয়া যায়, সঙ্গে সঙ্গে বাশের বঁাশন্তে বিষাদ সঙ্গীত হয় এবং দুঃখাওঁ বন্ধুবৰ্গ ক্ৰন্দন ও চীৎকার করিতে করিতে যায়। নির্দিষ্ট স্থানে উপস্থিত হই। শবটিকে ঢাকিয়া সকলের দৃষ্টি হইতে লুকাইয়া চারি-পা একটা বাক্সের মধ্যে রাপিয়া বাক্সের নীচে কাঠ ধরাইয়৷ অগ্নিসংযোগ করিয়া দেয় ; কখনো কখনো বাড়ী হইতেই এই বাক্সে করিয়াই শব দাহন্থানে আনিয়া অগ্নি সংযোগ করে। শব দাহ হইবার সময় স্বপারী, ফল প্রভৃতি মৃত ব্যক্তি আত্মার উদ্দেশ্যে বলি দেওয়া হয়। চারিদিকে চারিটা তীর নিক্ষিপ্ত হয়। দেহ দগ্ধ হইয়া গেলে ভষ্মরাশি মৃত্তাত্ত্বে ভরিয়া গৃহে লইয়া যায় ও এক শুভদিনে ভষ্মভাণ্ড প্রোধিত করিয়া সেই স্থানে প্রস্তরচিহ্ন স্থাপন করে ; এই কবর দেওয়ার দিন বিপুল ভোজ ও নৃত্যোৎসব হয়। এই নৃত্যে কুমারীগণ দলের মধ্য স্থলে ভূমিসন্নদ্ধ দৃষ্টি হইয়া দুই তিন সারিতে নৃত্য করে। এই উৎসব উপলক্ষ্যে স্ত্রীপুরুষ সকলেই আপন আপন সৰ্ব্বোত্তম পরিচ্ছদ পরিধান করে। পুরুষের ধুতি, রেশমী পাগড়ী, প্রচুর স্থচিশিল্পভূষিত জাম, রূপারভাঃি শিকল, সোণার হার, ময়ূরপুচ্ছ ও বিবিধ কারুশোভিত তু ধারণ করে ; স্ত্রীলোকেরা লম্বা ঘাঘরার উপর একথান কাপড় ডান বগলের নীচে দিয়া আল্লাভাবে লইয়া সৰ্ব্বাঙ্গ বেষ্টন করিয়া ডান কাধের উপর গিট বাধিয়া পরে ; মাথায় রূপার বেষ্টনীর সঙ্গে পশ্চাৎ দিকে লম্বা বর্যাফলকের মত একট গহনা উচু হইয়া থাকে। এক জাতির ভষ্ম এক শিলাতলে বা এক কবরস্থানে থাকে। স্বামী স্ত্রীর ভস্ম কখন মিলিত করা হয় না, কারণ উভয়ে পৃথক জাতীয়। স্ত্রী ও তাহার ৩য় সংখ্যা । ] চিতাভষ্ম স্ত্রীর মাতার চিতাভষ্মের সহিত রক্ষিত হয়, স্বামীর চিতাভষ্ম তাহার গোত্রীয় সমাধিক্ষেত্রে থাকে। এই জন্য সন্তানেরা মাতৃকুলের দায়াধিকারী হয়। বিবাহবন্ধন ইহাদের অত্যন্ত শিথিল। বিবাহ অনুষ্ঠানহীন। কোনো যুবকের প্রস্তাব যুবতী ও তাহার পিতামাতার অনুমোদিত হইলে বর কন্যার পরিবারভুক্ত হয় অথবা মাঝে মাঝে শ্বশুর বাড়ী আসে। দাম্পত্যভঙ্গও সচরাচর ঘটে, বাহার খুসি সে ভঙ্গ করে ; যখন উভয়ের অভিমতে ভঙ্গ হয়, তখন পরস্পরে পরস্পরের নিকট হইতে গোট কয়েক করিয়া কড়ি লইয়া প্রকাশ্য সভায় ফেলিয়া দেয়। সস্তানেরা মাতার নিকটেই থাকে। খাসিয়ারা পুষ্ট পেশীর জন্য বিখ্যাত ; স্ত্রী পুরুষ সকলেরই পেশী খুব পুষ্ট ও দৃঢ়। ইহাদের বর্ণ গৌরলাল ; যুবজনের হান্তদীপ্ত মুখত্ৰ দেখিতে প্রতিকর ; কিন্তু চেপ্টামুখে বাকী চোথে সৌন্দৰ্য্য বড় বিরল, অধিকন্তু সৰ্ব্বদা পান চিবাইয়া বড় নোংরা হইয়া থাকে, মুখ হইতে পানের ছোপ কথন পরিষ্কার করে না। তাহাদের পরিচ্ছদ প্রায়ই সুন্দর রঙীন হয়, কিন্তু তাহ ধূলিমলিন হইয়া থাকে, দেহও কখনো স্বানের আস্বাদ জানে না। ইহারা খুব বিশ্বাসী সৎ ভূত্য হয়, কিন্তু বড় অলসপ্রকৃতি। ইহারা বস্ত্রবয়ন করিতে জানে। চাল, জোয়ার, বাজরা, কচু প্রভৃতি মূল, সৰ্ব্বপ্রকার মাংস ও শুটকী মাছ ইহাদের খাদ্য । এক এক দলের এক এক দ্রব্য নিষিদ্ধ অস্পৃশু খাদ্য। খাসিয়াদের পরমেশ্বরে বিশ্বাস থাকলেও বনপৰ্ব্বতের উপদেবতার উপরই আস্থা অধিক। ইহাদের কোনো মন্দির বা দেবমূৰ্ত্তি নাই। ইহারা ডিম ভাঙিয়া শুভাশুভ নির্ণয় করে। যতক্ষণ পর্য্যন্ত না ইহারা আপনাদের ইচ্ছামত চিহ্ন দেখিতে পায় ততক্ষণ ডিম ভাঙিতে থাকে, এ জন্য প্রায়ই শুভফলষ্ট নির্ণত হয়। মুরাপান করিবার পূৰ্ব্বে ইহারা দেবতাকে নিবেদন করে ; তর্জনী তিনবার স্বরামধ্যে ডুবাইয়া সেকেলে লোকের অশ্বখামাকে তেল দিবার উপায়ে অঙ্গুষ্ঠ ও তর্জনীর সাহায্যে অঙ্গুলিলগ্ন স্বরা উভয় স্বন্ধে ও পাশ্বে ছিটাইয়া দেয়। সস্তানেরা স্ত্রীর মাতার গোত্রীয় ; স্ত্রী ও সস্তানদিগের । রাজদরবারে সাধারণ দণ্ড ছিল জরিমানা ; কখনো বৈজ্ঞানিক সারসংগ্রহ। >85. কথনো সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করিয়া দোষীকে সপরিবারে রাজার দাস করা হইত। কখনো বা জলবিচার হইত-বাদী প্রতিবাদী একসঙ্গে কোনো পবিত্র সরোবরের দুই ধারে ডুব দ্বিত এবং যে অধিক গণ ডুবিয়া থাকিতে পারিত তাহারই জিত হইত। এই বিচার উকিল প্রতিনিধি দ্বারাও হইতে পারিত। এই জন্য দীর্ঘশ্বাস, অধিকদমওলা উকিলের দরকার পাসিয়াদেরো ছিল । খাসিয়ার শিশ দিতে খুব ভালো বাসে। বালকদের আমোদ লাটিম ঘুরানো ও চৰ্ব্বি মাপানো বাশে উঠা। কাছাড়ের অধিদাসীরা খাসিয়াদিগকে মিকি বলে - - মুদ্রা-রাক্ষস । বৈজ্ঞানিক সারসংগ্রহ। তাপ ও অালোকের চাপ । আজ পঞ্চাশ বৎসর গত হইল জগদ্বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল সাহেব তাপ-আলোক বিদ্যুৎ ও চুম্বক প্রভৃতির শক্তিকে এক ঈথরেরই তরঙ্গ-আবর্তনাদির ফল বলিয়া সিদ্ধান্ত করিয়াছিলেন। বৈজ্ঞানিক সাধারণ এই সিদ্ধান্তে সেই সময় বিশ্বাস স্থাপন করেন নাই। জৰ্ম্মাণ পণ্ডিত হেলমহোজ স্বাধীনভাবে গবেষণা করিয়া ম্যাক্সওয়েলের কথারই অভ্রান্তত দেখাইয়াছিলেন, কিন্তু তথাপি বৈজ্ঞানিকগণ নব সিদ্ধান্তে বিশ্বাস করিতে পারিলেন না। ইহার পর সুপ্রসিদ্ধ বৈজ্ঞানিক হাজ সাহেব, এবং আমাদেরি স্বদেশবাসী মহাপণ্ডিত ডাক্তার জগদীশ চন্দ্র বস্ব মহাশয় কিপ্রকারে নানা পরীক্ষায় ম্যাক্সওয়েলের সিদ্ধান্তের সুপ্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন বিজ্ঞানজ্ঞ পাঠক তাহ নিশ্চয়ই অবগত আছেন। ম্যাক্সওয়েল সাহেব যখন আলোক ও বিছাতের পূৰ্ব্বোক্ত ব্যাপার লইয়া গবেষণায় নিযুক্ত ছিলেন, তখন তিনি ঘটনাক্রমে জানিয়াছিলেন, যদি ঈশ্বরেরই স্পন্দন ও আবৰ্ত্তনাদি আলোক, বিদ্যুৎ ও চৌম্বক শক্তির কারণ হয়, তবে কোন লঘুপদার্থের উপর আলোকপাত হইলে,

  • Col. Dalton ests Descriptive Ethnology of

- Bengal হইতে সঙ্কলিত।