পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>Qミ কোন পরীক্ষাতেই দেখা যায় নাই। ময়সন সাহেব ইহাতে হীরক প্রস্তুতের এক নূতন উপায় পাইয়াছিলেন। অল্পব্যয়ে কৃত্রিম হীরক প্রস্তুত করার উপায় উদ্ভাবনের জন্য ইনি বহুকাল ধরিয়া নানাপ্রকার পরীক্ষা করিয়া আসিতেছেন। এই নূতন তথ্যটি তাহার কার্যাকে অগ্রসর করিয়া দিবে বলিয়া মনে হয়। জনসমাগম অস্বাস্থ্যকর কেন ? বহুজনপূর্ণ সভাগৃহাদিতে অনেকক্ষণ থাকিলে শরীর নানাপ্রকারে অসুস্থ হইয়া পড়ে। ইহার কারণ জিজ্ঞাসা করিলে সকলেই বলেন, প্রশ্বাসের সহিত এবং লোমকূপ দিয়া শরীরের যে সকল দূষিত পদার্থ নির্গত হয়, তাহ দ্বারা জনপূর্ণ আবদ্ধ স্থানের বাতাস কলুষিত হইয় পড়ে। কাজেই আমরা যখন এই অবিশুদ্ধ বাতাস নিঃশ্বাসের সহিত গ্রহণ করি, তখন তাহা অনিষ্টকর হইয়া দাড়ায়। - ব্রেসলা স্বাস্থ্যরক্ষা-সভার Institute) প্রধান সভ্য ডাক্তার পল সাহেব এই ব্যাপারটি লইয়া কিছুকাল পরীক্ষা করিয়াছিলেন। পরীক্ষা শেষে জানা গিয়াছিল, জনপূর্ণ আবদ্ধস্থানে থাকিলে দেহের উত্তাপ রীতিমত বাহির হইতে পারে না। কাজেই শরীরে নানাপ্রকার পীড়ার উপদ্রব দেখা দেয়। মুক্ত স্থানে থাকিলে পাশ্বের বায়ুকে গরম করিতে এবং গাত্রনির্গত ঘৰ্ম্ম প্রভৃতি জলীয় অংশকে বাষ্পীভূত করিতে শরীর হইতে অনেকট তাপ বাহির হইয়া যায়। তা ছাড়া প্রশ্বাসের সহিত অনেকটা তাপ নিৰ্গত হয়। এই প্রকার তাপ নিৰ্গমন স্বাস্থ্যরক্ষার একটা প্রধান সহায়। পরীক্ষা করিয়া দেখা গিয়াছে কেবল বিশুদ্ধ বায়ুতে থাকিলেই শরীর সুস্থ থাকে না, সঙ্গে সঙ্গে তাপ পরিত্যাগের স্বব্যবস্থা থাকা চাই। সুশীতল গৃহের শতকরা ১৫ ভাগ অঙ্গরকবাষ্পমিশ্র বায়ু ব্যবহার করিয়া বহুলোককে স্বস্থ থাকিতে দেখা গিয়াছে। অথচ সম্পূর্ণ বিশুদ্ধ বায়ু দ্বারা শ্বাসপ্রশ্বাস করিয়া কেবল যথোপযুক্ত তাপ নিগমের অভাবে কেহই স্বস্থ থাকে নাই। স্বতরাং আবদ্ধ স্থানের বায়ুর উষ্ণতা যখন দেহের উষ্ণতার সহিত সমান হইয়া শারীরিক স্বাভাবিক তাপ নিৰ্গমন রোধ করে, তখন সঙ্গে সঙ্গে শরীর যে অসুস্থ হইয়া পড়িবে তাহাতে আর আশ্চৰ্য্য কি ? (Breslau Hygienic প্রবাসী । পরীক্ষা পূৰ্ব্বোক্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হইয়া ডাকা । সাহেব বড় বড় সভাগৃহের অধ্যক্ষ এবং নাট্যশালার কর্তৃপক্ষ দিগকে বলিতেছেন যে, গৃহে বায়ুর গমনাগমনের জন্য 烈 অর্থব্যয় না করিয়া তাহারা যদি গৃহগুলিকে আবশ্বকৰ্মত শীতল করিবার স্বব্যবস্থা করিতে পারেন, তবে লোকসমাগম প্রচুর হইলেও আবদ্ধস্থানে শ্ৰোতৃ ও দর্শকগণের স্বাস্থ্যহানি আর কোনই সস্তাবনা থাকিবে না। [ ৮ম ভাগ | শ্রীজগদানন্দ রায়। ] প্রীতি । > নিত্য মর্ত্যপুরবাসিগণ যেতেছে মৃত্যুভবনে ? যাক যাক, তবু উপেখি মরণ রহিব ফুল্ল বদনে । & হইব সিদ্ধ শবসাধনায় প্রেতবেষ্টিত শ্মশানে | বিভাতিবে প্রেম ছেম-দ্যোতনায় সন্তাপে শোক-রসানে । ○ দ্রুতধারে দূরে চলিছে জীবন ; যাক তবু প্রতি বহিব। নিমেষে যাহারা তেজিবে ভবন তাদেরি সেবায় রহিব । 8 পারে কি নাশিতে প্রীতির বীরতা জরা মরণের দৃপ্ত ? আমি কিরে ভবে হারাব ধীরতা চঞ্চল বলি বিশ্ব ? ঐবিজয়চন্দ্র মজুমদার । সমস্যা । আমি পথ ও পাথেয়” নামক প্রবন্ধে আমাদের কর্তব্য এবং তাহার সাধনপ্রণালী সম্বন্ধে আলোচনা করিয়াছিলাম। উক্ত প্রবন্ধটিকে সকলে যে অনুকূলভাবে গ্রহণ করিবেন এমন আমি আশা করি নাই । কোনটা শ্রেয় এবং তাহ লাভের শ্রেষ্ঠ উপায়টি কি তাহা লইয়াত কোনো দেশেই আজও তর্কের অবসান হয় নাই। মানুষের ইতিহাসে এই তর্ক কত রক্তপাতে পরিণত ষ্টোছে এবং একদিক হইতে তাহ বিলুপ্ত হইয়া আর এক কি দিয়া বারম্বার অঙ্কুরিত হইয়া উঠিয়াছে। আমাদের দেশে দেশহিত সম্বন্ধে মতভেদ এতকাল কেবল মুখে মুখে এবং কাগজে কাগজে, কেবল ছাপাখানায় এবং সভাক্ষেত্রে কথার লড়াই রূপেই সঞ্চরণ করিয়াছে। তাহা কেবল ধোয়ার মত ছড়াইয়াছে, আগুনের মত জলে নাই । কিন্তু আজ নাকি সকলেই পরস্পরের মতামতকে দেশের তিহিতের সঙ্গে আসন্নভাবে জড়িত মনে করিতেছেন, তাহাকে কাব্যালঙ্কারের ঝঙ্কার মাত্র বলিয়া গণ্য করিতেছেন না, সেই জন্ত র্যাহীদের সহিত আমার মতের অনৈক্য ঘটয়াছে তাহদের প্রতিবাদবাক্যে যদি কখনো পরুষতা প্রকাশ পায় তবে তাহাকে আমি অসঙ্গত বলিয়া ক্ষোভ করিতে পারি না। এ সময়ে কোনো কথা বলিয়া কেহ অল্পের উপর দিয়া নিস্কৃতি পাইয়া যান না ইহা সময়ের একটা শুভলক্ষণ সন্দেহ নাই । - তবু, তর্কের উত্তেজনা যতই প্রবল হোক, যাহাদের সঙ্গে আমাদের কোনো কোনো জায়গায় মতের অনৈক্য ঘটতেছে দেশের হিতসাধনে তাহদেরও আন্তরিক নিষ্ঠা আছে এই শ্রদ্ধা যখন নষ্ট হইবার কোনো কারণ দেখি না, তখন আমরা পরস্পর কি কথা বলিতেছি কি ইচ্ছা করিতেছি তাহা সুস্পষ্ট করিয়া বুঝিয়া লওয়া আবশ্যক। গোড়াতেই রাগ করিয়া বসিলে অথবা বিরুদ্ধ পক্ষের বুদ্ধির প্রতি সন্দেহ করিলে নিজের বৃদ্ধিকে হয়ত প্রতারিত করা হইবে। বুদ্ধির তারতম্যেই যে মতের অনৈক্য ঘটে একথা সকল সময়ে পাটে না। অধিকাংশ স্থলে প্রকৃতিভেদেই মতভেদ ঘটে। o সমস্যা । - >Q○ অতএব মতের ভিন্নতার প্রতি সম্মান রক্ষা করিলে যে নিজের বুদ্ধিবৃত্তির প্রতি অসম্মান করা হয় তাহা কদাচই সত্য নহে। এই টুকু মাত্র ভূমিকা করিয়া “পথ ও পাথেয়” প্রবন্ধে যে আলোচনা উত্থাপিত করিয়াছিলাম তাহারাই অনুবৃত্তি করিতে প্রবৃত্ত হইলাম। সংসারে বাস্তবের সঙ্গে আমাদিগকে কখনো আপস করিয়া কখনো বা লড়াই করিয়া চলিতে হয়। অন্ধতা বা চাতুরীর জোরে বাস্তবকে লঙ্ঘন করিয়া আমরা অতি ছোট কাজটুকুও করিতে পারি না। অতএব দেশহিতের সংকল্প সম্বন্ধে যখন আমরা তর্ক করি তখন সেই তর্কের একটি প্রধান কথা এই যে, সংকল্পটি যতই বড় হোক এবং যতই ভাল হোক বাস্তবের সঙ্গে তাহার সামঞ্জস্ত আছে কি না ? কোন ব্যক্তির চেক-বহির পাতায় কতগুলা অঙ্ক পড়িয়াছে তাহা লইয়াই তাড়াতাড়ি, উৎসাহ করিবার কারণ নাই, কোন ব্যক্তির চেক্ ব্যাঙ্কে চলে তাহাই দেখিবার বিষয় । সঙ্কটের সময় যখন কাহাকেও পরামর্শ দিতে হইবে তখন এমন পরামর্শ দিলে চলে না যাহা অত্যন্ত সাধারণ। কেহ যখন রিক্তপাত্র লইয়া মাথায় হাত দিয়া ভাবিতে থাকে কেমন করিয়া তাহার পেট ভরিবে তখন তাহাকে এই কথাটি বলিলে তাহার প্রতি হিতৈষিত প্রকাশ করা হয় না যে ভাল করিয়া অন্নপান করিলেই ক্ষুধা নিবৃত্তি হইয়া থাকে। এই উপদেশের জন্তই সে এতক্ষণ কপালে হাত দিয়া অপেক্ষ করিয়া বসিয়া ছিল না। সত্যকার চিন্তার বিষয় যেটা, সেটাকে লঙ্ঘন করিয়া যত বড় কথাই বলি না কেন তাহ একেবারেই বাজে কথা । ভারতবর্ষের সম্বন্ধেও প্রধান প্রয়োজনটা কি সে কথা আলোচনা উপলক্ষ্যে আমরা যদি তাহার বর্তমান বাস্তব অভাব ও বাস্তব অবস্থাকে একেবারেই চাপা দিয়৷ একটা খুব মস্ত নীতিকথা বলিয়া বসি তবে শূন্ত তহবিলের চেকের মত সে কথার কোনো মূল্য নাই ; তাহ উপস্থিতমত ঋণের দাবী শাস্ত করিবার একটা কৌশলমাত্র হইতে পারে কিন্তু পরিণামে তাহা দেনদার বা পাওনাদার কাহারও পক্ষে কিছুমাত্র কল্যাণকর হইতে পারে না। .