পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাৰ্ভিক উদ্ভিদবিজ্ঞানে গবেষণাবৃত্তি শ্ৰীযুক্তা লেউী অবলা বস্থ মহোদয় আচাৰ্য্য বস্তু মহাশয়ের ইচ্ছা অনুসারে উদ্ভিদবিজ্ঞানে গবেষণাবৃত্তি স্থাপনার্থ প্রেসিডেন্সী কলেজকে পঞ্চাশ হাজার টাকা দিতে চাহিয়াছেন । এই সংবাদের সহিত খবরের কাগজে এই থবর ও বাহির হইয়াছে যে, বাংলা-গবন্মেণ্ট এই টাকা লইবেন কিনা বিবেচনা করিতেছেন । প্রথমে অনুমান করিতে পারি নাই, ইহার মধ্যে বিবেচনা করিবার কি আছে । জ্ঞানবৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত লোকদিগকে বৃত্তি দেওয়া হইবে, এরূপ উদ্দেশ্যে দান ত যত পাওয়া যায় লুফিয়া লওয়াই উচিত । পরে গুজব শুনিলাম, এই দানের এই সত্ত্ব আছে যে, কেবল হিন্দু গবেষকদিগকে এই টাকা হইতে বৃত্তি দিতে হইবে, এবং তাহাতে সেক্রেটরিয়েটের কোন কমচারী নাকি আপত্তি তুলেন, এরূপ সাম্প্রদায়িক সৰ্ব বাংলা-গবন্মেন্টের নীতির { “পলিসির” ) বিরুদ্ধ। বটে। বাংলার রাজস্বের অধিকাংশ টাকা দেয় হিন্দুরা ; কিন্তু শুধু হিন্দুদের শিক্ষার জন্য যত সরকারী টাকা খরচ হয়, শুধু মুসলমানদের শিক্ষার জন্য নানা বাবতে তাঙ্গার অন্তত: পনর-ষোল গুণ বেশী সরকারী টীকা খরচ হয় । ইংরেজ ও ফিরিঙ্গীদের জন্যও সরকারী টাক] আলাদা করিয়া ব্যয় হয় । এই সাম্প্রদায়িকতা গবন্মেণ্টের পলিসির বিরুদ্ধ নহে । কিন্তু কেহ নিজের টাকা, সরকারী টাকা নহে, হিন্দুদের সুবিধার জন্য দান করিতে চাহিলে তাহ লওয়া গবন্মেন্টের পলিসির বিরুদ্ধ ! ধন্য পলিসি ! আমরা যাহা শুনিয়াছি তাহ নিৰ্ভুল খবর হইলে এবং গবন্মেণ্ট-পক্ষ হইতে সত্য সত্যই ঐরুপ আপত্তি হইয়া থাকিলে আমরা আশা করি লেডী বস্ব মহোদয় প্রেসিডেন্সী কলেজকে টাকা দিবার প্রস্তাব প্রত্যাহার করিবেন এবং উদ্ভিদবিজ্ঞানের গবেষণায় উৎসাহ দিবার জন্য অন্য ব্যবস্থা করিতে সমর্থ হইবেন । যুদ্ধ চালাইতে ব্রিটেনের প্রতিজ্ঞ কিছু দিন পূর্বে খবর বাহির হইয়াছিল যে, ব্রিটেন মোটামুটি তিন বৎসর যুদ্ধ চালাইবার নিমিত্ত প্রস্তুত হইয়াছেন । তখন পোল্যাও লড়িতেছিল। তাহার পর বিবিধ প্রসঙ্গ—যুদ্ধ চালাইভে ব্রিটেলের প্রতিজ্ঞ తాహి রাশিয়া যুদ্ধে নামে, এবং তদনন্তর রাশিয়া ও জামে নী পোল্যাগু ভাগ করিয়া লইয়াছে, এবং পোল্যাণ্ডের রাজধানী ওয়াস অসাধারণ দেশভক্তি সাহস ও শৌর্য্যের সহিত অনেক দিন লড়িয়া আত্মসমপণ করিতে বাধ্য হইয়াছে। এ অবস্থায় মনে হইতে পারে যে, যে-দেশের স্বাধীনতা ও অথগুত্ব রক্ষার নিমিত্ত ফ্রান্স ও ব্রিটেন যুদ্ধে নামিয়াছে, তাহা যখন পরহস্তগত হইয়াই গিয়াছে, তখন আর যুদ্ধ করিয়া কি ফল ? প্রকাশ, রাশিয়া ও জামে নীও ঐরূপ কথা বলিয়া ব্রিটেন ও ফ্রান্সকে যুদ্ধে বিরত হইয়া শাস্তিস্থাপন করিতে বলিবে, এবং ইটালীরও মত সেক্টরূপ । যদি কোন দস্থ্যদল কোন গৃহস্থের অনেক লোককে মারিয়া সৰ্ব্বস্ব লুটিয়া লয় ও ঘরবাড়ী দখল করে এবং তাহার পর বলে, আমাদিগকে ভদ্রলোক বলিয়া মানিয়া লও, ডাকাতি ও নরহত্যার কোন প্রতিকার অনাবশ্যক ও অসম্ভব, তাহা হইলে ব্যাপারটা যেমন হয়, ইহাও সেইরূপ । ব্রিটেন ও ফ্রান্স বলিয়াছে, হিটলারির ( Hitlerismএর ) উচ্ছেদ না করিয়া তাহারা থামিবে না । ইহা প্রশংসনীয় প্রতিজ্ঞ । ব্রিটেন যে যথাসাধ্য চেষ্টা করিবে, তাহার প্রমাণ তাহার বজেটে পাওয়া যায় । এবার যেরূপ উচ্চ হারে সে দেশে ইন্‌কম্‌-ট্যাক্স বসিয়াছে, তাহা সে দেশের ইতিহাসে অভূতপূৰ্ব্ব । পৌণ্ডে সাড়ে সাত শিলিং ইন্‌কম্ ট্যাক্স ইতিপূৰ্ব্বে কখনও বসে নাই । বিলাতী ও ধান প্রধান অনেক কাগজে হিটলারের বিরুদ্ধে যেরূপ তীব্র মন্তব্য প্রকাশ করা হইয়াছে, স্টালিনের বিরুদ্ধে সেরূপ নহে । তাহাতে অকুমান হয়, ইংরেজরা এখনও মনে করে যে, স্টালিন যদিও পোল্যাণ্ডের একটা অংশ গ্রাস করিয়াছে, তথাপি জামেনীর পক্ষ অবলম্বন করিয়া ফ্রান্স ও ব্রিটেনের বিরুদ্ধে লড়িবে না। কি হইবে বলা যায় না । কিন্তু যদি রাশিয়া, এবং ইটালীও জামেনীর পক্ষ অবলম্বন করিয়া লড়ে, তাহা হইলে যুদ্ধটা আরও ঘোরতর ও অধিকতর দীর্ঘকালস্থায়ী হইতে পারে । ( ১৪ই আশ্বিন, ১লা অক্টোবর । ) পরে ১৫ই আশ্বিন সংবাদ আসিয়াছে, যে, মুসোলিনি একটি শান্তি-প্রস্তাব পেশ করিবেন ।