পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অগ্রন্থায়ণ —অম্বখ আছে এক জনের, সতীশ বাবুর ভায়ের, এ অঞ্চলের সব ডাক্তারই দেখেছেন কিন্তু জর ছাড়ছে না। প্রায় তিন মাস হয়ে গেল। তাছাড়া আরও একটা কাজ আছে । —কি ? —ওঁদের জমিদারীতে একটা ফৌজদারি হয়ে গেছে : একটা লোক মারাও গেছে, তারই পোষ্টমর্টেম রিপোর্টট আজ নাকি পেয়েছেন ওঁরা, তাই আমাকে যেতে লিখেছেন এক বার । মোটর পাঠিয়েছেন, আপনাকে দিয়ে রিপোর্টটা এক বার দেখিয়ে নিতে চাই, কি ভাবে জেরা করলে স্ববিধে হবে । —বেশ চলুন ; দাড়ন, আমি আমার ব্যাগটা নিয়ে নি। রাস্তায় চলিতে চলিতে বিমল বদিবাবুকে বলিল— আমাদের হাসপাতালে ওষুধ কিছু নেই, তার একটা ব্যবস্থা করে দিন আপনি । এই কথা বলতেই নন্দী মহাশয়ের কাছে গেছলাম আমি | —কি বললেন তিনি ? —তিনি বললেন, আগামী মিটিঙে কথাটা পাড়বেন ! —মিটিঙে পেড়ে তো সবই হবে, টাকা কই, ওষুধের দোকালের ধরেই এখনও শোধ হয় নি । কিছুক্ষণ নীরবে চলিবার পর বদিবাৰু প্রশ্ন করিলেন— কত টাকার ওষুধ হ’লে চলে আপনার আপাতত ? —কিছুই তো নেই, শ-পাচেকের কম হ’লে কি ক’রে চলবে । —পাচ শ টাকা ! বলেন কি মশাই ? —কিছুই ওষুধ নেই যে? —দেখি । সতীশ বাবুর ভাইকে পরীক্ষা করিয়া তাহার কালাজর বলিয়া সন্দেহ হইল । সতীশবাবু শুনিয়া বলিলেন—সে কি মশাই, কালাজর শুনেছি আসাম অঞ্চলে হয়, কুলিদের। বিমল হাসিয়া বলিল-আজকাল সৰ্ব্বত্রই হয় । —ভদ্রলোকদেরও ? —#s; মির্শেক 蟻 ১৯৭ সতীশবাবু কিছুক্ষণ নীরব থাকিয়া বলিলেন—তাহলে উপায় ? —রক্তটা আজ নিয়ে যাই, পরীক্ষা করে তার পরে ঠিক জানাব। —রক্ত কি আপনিই পরীক্ষা করবেন ? আপনার কি সব যন্ত্রপাতি— –এর জন্যে যা দরকার তা আমার আছে। বদিবাবু সম্মিত দৃষ্টিতে সতীশবাবুর দিকে চাহিলেন। বিমলের রক্ত পরীক্ষা করিবার সমস্ত সরঞ্জাম আছে এ কুতিত্ব যেন তাহারই ! সতীশবাবু বলিলেন--সিভিল সার্জন একবার দেখেছিলেন, তিনিও রক্তপরীক্ষার কথা বলেছিলেন, কিন্তু জগদীশবাবু মান করলেন বলে আর হয় নি। বললেন, এমনই শরীরে রক্ত নেই, রক্ত পরীক্ষা ক’রে আবার খানিকটা রক্ত নষ্ট ক’রে লাভ কি ? রক্ত নিলে আবার কোন অনিষ্ট-টনিষ্ট হবে না তো । দেখছেন তো কি রকম দুৰ্ব্বল ! —ন, কোন অনিষ্ট হবে না। বিমলের কথায় যতটা না হউক বদিবাবুর আগ্রহে সতীশবাবু অবশেষে রক্তপরীক্ষা করাষ্টতে রাজি হইলেন। রক্ত লইবার সময় সমারোহ ব্যাপার পড়িয়া গেল । এক জন মাথায় হাওয়া করিতে লাগিল, সতীশবাবু ও দুই জনে দুই পাশে দাড়াইয়া রোগীকে ভরসা দিতে লাগিলেন, সতীশবাবুর মা পূজার ঘরে গিয়া সভয়ে ঠাকুরদেবতার শরণাপন্ন হইলেন, বাড়ীর কমবয়সী ছেলেমেয়ের উৎসুক হইয়া দ্বারপ্রাস্তে ভিড় করিয়া দাড়াইল । বাড়ীর চাকর-দাসীদের মুথেও একটা সশস্ক ভাব ফুটিয়া উঠিল। সমস্ত দেখিয়া শুনিয়া বিমলও একটু ঘাবড়াইয়া গেল। রোগীর তো কথাই নাই, তিনি-চোখ বুজিয়া নিজীবের মত পড়িয়া রহিলেন । ভগবানের রূপায় নির্বিবস্নেই সমস্ত হইয়া গেল, কোনরূপ অঘটন ঘটিল না । বিমল রক্ত লইয়া বাহিরের ঘরে আসিয়া বসিল । সতীশবাবু ব্যস্তসমস্ত হইয়া আসিয়া প্রশ্ন করিলেন – একটু দুধ খাইয়ে দেওয়া যাক, কি বলেন ? , -हिन ।