প্রবাসী سين ్సరి8ు দ্যায়তীৰ্থ বাধা দেন নাই | স্বীকার করিয়াছিলেন, রাজভাষা, সাংসারিক প্রয়োজনেও একটু দরকার। ইস্কুলের পড়াটা শেষ করাই ভাল । শশিশেখর প্রথম বিভাগে বেশ কৃতিত্বের সহিত ম্যাটি কুলেশন পাস করিল। তাহার স্কুলের এক জন শিক্ষক ন্যায়ুতীর্থকে অনুরোধও করিল, আপনি শশীকে কলেজেই পড়তে দিন । ভবিষ্যতে ও খুব ভাল ফল করবে। আঙ্কে কাচা বলেই শশী বুজি পেলে মা, নইলে সংস্কৃতে ইংরেজীতে ও খুব ভাল ফল করেছে। হায়তীর্থ প্রসন্ন হাস্তোর সহিত বলিয়াছিলেন, আপনি ভালবাসেন শশীকে, আপনার কল্যাণ হোক । কিন্তু আপনি যা বলেছেন, সে তয় না মাষ্ঠীর মশায় । —কেন ? ইংরেজী খারাপ কিসে? তেমনি হাসিয়াই স্থায়তীৰ্থ বলিলেন—না না, ইংরেজী বিদ্যার উপর আমার বিদ্বেষ নেই কিছু, তবে আস্থা নেই । আর আমাদের বংশগত বিদ্যার উপর একটা বিশেষ শ্রদ্ধা এবং বিশ্বাস দুইই আছে । ইংরেজী জ্ঞানের দৃষ্টিট নিতান্তই ইহলৌকিক, চৰ্ম্মচক্ষুর দৃষ্টির ওপারে আর তার গতি নেই । অথচ অবাঙ-মনস-গোচরের সাধনা আমাদের কুলধৰ্ম্ম । স্বধৰ্ম্মে নিধনং শ্রেয় ; नी । মাষ্টার ক্ষুণ্ণ হইয়। বলিলেন—আমাদের ইচ্ছা ছিল শশিশেখর সংস্কৃত এবং ইংরেজী দুইয়েই পণ্ডিত হয়। ন্যায়তীৰ্থ বলিলেন—ওটা নিতা স্তুষ্ট বিলাতী ধরণে পিণ্ডর ধার ব্যবস্থা মাষ্ঠীর মশাই । জীবনের সাধন। একমুখী হওয়াই ভাল। মন দ্বিধা বিভক্ত হ’লে অবস্থা হবে গরুর ক্ষুরের মত, দ্রুত চলার শক্তি হারিয়ে যাবে। জন্মাস্তরের ফের বেড়ে যাবে । মাষ্টার মহাশয় একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিলেন শুধু, মুখে কিছু বলিলেন না । ন্যায়তীৰ্থ বলিলেন—আর শিখলেও তে খানিকট । কাজ অনেকট ওতেই চলে যাবে । মাষ্টার হাসিলেন, বলিলেন--ও যা শিখেছে তাতে ভাল করে কথা কওয়াও চলে না, ন্যায়তীৰ্থ মশাই ! এ অনেক দিনের কথা । ইহার পর শশিশেখর লু্যায়তীর্থের কাছেই কয়েক বৎসর পড়াশুনা করিয়া ব্যাকরণ সুতরাং ও অতুরোধ আর করবেন পরীক্ষণ দিল, তার পর সাহিত্য-অলঙ্কার পড়িয়া পড়িতে আরম্ভ করিল। এই সময়েই নু্যায়তীর্থ তাহাকে নবদ্বীপে পাঠাইয় দেন। কারণ জিজ্ঞাসা করিলে বলিয়াছিলেন, চিকিৎসকের যেমন আপনার পরমাত্মীয়ের চিকিৎসা করা উচিত নয়, এও তেমনি আর কি ! আমার অনেক গুলি ছাত্র, শশী এখানে পড়লে শিক্ষা আমার পক্ষপাত দুষ্ট হ’তে পারে । শশিশেখর নবদ্বীপে আসিয়৷ থায় পড়িতে পড়িতে পিতার চোখের আড়ালের সুযোগ পাইয়া সংস্কৃতের সঙ্গে সঙ্গে গোপনে ইংরেজীর চচ্চাও আরস্ত করিল । মনীষী পিতার মেধাবী সন্তান সে, তাহার উপর ছিল জ্ঞানের প্রতি প্রগাঢ় অতুরাগ | স্যায়ের উপাধি পরীক্ষণ দিবার পূৰ্ব্বেষ্ট সে পাশ্চাত্য দর্শন মোটামুটি পড়িয়া ফেলিল । শাস্ত্রের সঙ্গে সঙ্গে ভাষা ও তাঁহার আয়ত্ত ত ইয়াছে । এ সংবাদ ন্যায়তীর্থের কাছে অতি যত্নে সে গোপন করিয়। রাখিয়াছিল । আজ তাহা এমনি এক অভাবনীয় ঘটনাসংস্থানে উত্তেজনাময় অবস্থার মধ্যে প্রকাশিত হইয় পড়িল । শশিশেখর মনে মনে শঙ্কিত হইয়াত বাউী ফিরিল । প্রশাস্থ মুখেই হায়তীৰ্থ বসিয়া ছিলেন। তাহাকে ঘিরিয়। ইতিমধ্যেই একটি ক্ষুদ্র জনতা জমিয়া উঠিয়াছে । এক দিকে টোলের ছাত্রের দাড়াইয়া আছে, হায়তীর্থের কয়েক জন বন্ধু ও মুগ্ধ ভক্ত একখানি কম্বল বিছাইয়া আসর করিয়া সম্মুখেই বসিয়াছে, গ্রামের কতকগুলি কিশোর ও যুবক ছেলেও আসিয়াছে, এমন কি সদগোপ-পাড়ারও জন তিনেক মণ্ডল আসিয়া বারান্দার নীচে উপু হইয়। বসিয়া আছে । কোন একটা কথা হইতেছিল। শশিশেখর আসিয়া দাড়াইতে কথাটার যেন মোড় ফিরিয়া গেল। ন্যায়তীর্থের বন্ধু হিরণ্যভূষণ চক্রবত্ত শশীকে দেখিয়াই বলিয়া উঠিলেন— এস, বাবাজী এস। তোমার কথাই হচ্ছিল । তুমি আমাদের মুখ উজ্জল করেছ। মহৎ থেকেই মহতের উদ্ভব হয়, উপযুক্ত পিতার উপযুক্ত সন্তান তুমি । তোমা হ’তে বিপ্রনালীর গৌরব বজায় থাকবে। বলিহারি
পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।