পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আগ্রহণক্ষ্মণ ৰিৰিৰ প্রসঙ্গ—কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ সম্বন্ধে ভারত-সচিবের উক্তি ՀԳչ হইবে ; কিন্তু কোথাও এই দুটি জিনিষ মুসলমানদের জন্য অধিক থাকিলে সেই আধিক্য বজায় থাকিবে। (৬) পরীক্ষাসমূহে হিন্দু ও মুসলমান পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ও উত্তীর্ণের সংখ্যা জনাব জিন্না সাহেব সমান সমান চান কি না, অম্বুমান করিতে পারিলাম না। (৭) সমগ্রভারতীয় ও প্রাদেশিক লোকসংখ্যাতেও তিনি উভয় সম্প্রদায়ের সাম্য চান কি না, তাহাও অনুমান করিতে পারিলাম না । মহাত্মা গান্ধী গোলটেবিল বৈঠকের সময় মুসলমানদিগকে শাদা চেক দিতে চাহিয়াছিলেন । সুতরাং জনাব জিন্না সাহেব যে-অর্থেই হিন্দু-মুসলমানের সম্পূর্ণ সামোর দাবী করুন না কেন, গান্ধীজীর তাহাতে সন্মত হওয়া একেবারেক্ট বা সর্বাংশেই অসম্ভব বলা योंध्र न | যুক্ত প্রদেশে চাকরীতে হিন্দুমুসলমান সাম্য জনাব জিন্না সাহেব যদি হিন্দু ও মুসলমানদের জন্য সমান সমান চাকরী চীন, তাহা হইলে সব প্রদেশে ও সব স্থলেই যে মুসলমানেরা জিতিবে এমন নহে । আগ্ৰা-অযোধ্যা প্রদেশের ব্যবস্থাপক সভায় যখন বর্তমান যুদ্ধ বিষয়ক প্রস্তাব সম্বন্ধে বিতর্ক হইতেছিল, তথন ( তাৎকালিক ) অন্যতম মন্ত্রী ডক্টর কৈলাসনাথ কাটজু, “মুসলমান স্বাৰ্থ বিপন্ন", এই রবের উত্তরে বলেন, ইঙ্গ মিথ্যা। সরকারী চাকরীতে মুসলমানদের স্থান সম্বন্ধে তিনি বলেন, “ডেপুটি কালেক্টরদের মধ্যে শতকরা ৫০ জন মুসলমান, পুলিস বিভাগে মুসলমান চাকর্যেদের সংখ্যা-শতকরা যাটেরও উপর।” মনে রাখিতে হইবে, যুক্ত প্রদেশের অধিবাসীদের শতকরা ১৪ জন মুসলমান এবং শতকরা ৮৪ জন হিন্দু, বাকী অন্যান্য সম্প্রদায়। ংগ্রেস ও মুসলিম লীগ সম্বন্ধে ভারত সচিবের উক্তি কংগ্রেস ভারতবর্ষের নিমিত্ত স্বাধীনতার দাবী করিয়াছেন এবং ব্রিটেন কি কি লক্ষ্য সম্মুখে রাখিয়া বৰ্ত্তমান যুদ্ধ চালাইতেছেন তাহা পরিষ্কার ভাষায় বলিতে ভারত-সরকার ও ব্রিটিশ-সরকারকে আহবান করিয়াছেন । বড়লাট ও ভারত-সচিব এ বিষয়ে একাধিক বক্তৃতা করিয়াছেন ও বিবৃতি প্রচার করিয়াছেন। তাহাদের দৈর্ঘ্য ও সংখ্যা ষেরূপ, তাহাতে কোন মাসিকের বিবিধ প্রসঙ্গে সবগুলির সমুদয় প্রধান প্রধান কথারও আলোচনা করিবার দুরাকাঙ্ক্ষা সম্পাদকের না হওয়াই ভাল। আমরা তাহাদের কেবল দুএকটা উক্তি সম্বন্ধে কিছু বলিব। এখানে অবাস্তুর একটা কথা বলি। এখন ব্রিটিশ রাজনীতিক ও রাজপুরুযেরা এবং জনাব জিন্না সাহেৰ ও তাহার দলভুক্ত লোকেরা ভারতবর্ষে স্বরাজ ও গণতন্ত্র স্থাপনের বিরুদ্ধে যত আপত্তি করিতেছেন, আমরা ২২ বৎসর পূর্বে সেগুলা খণ্ডন করিয়াছিলাম। আমাদের সেই সব বক্তব্য “স্বরাজের উদ্দেশে” (“Towards Home Rule") নাম দিয়া পুস্তকাকারে তিন পণ্ডে একাধিক বার পুনমুদ্রিত হইয়াছিল। সেগুলি নিঃশেষে বিক্ৰী হইয়া গিয়াছে । ভারত-সচিব তাহার একটি বক্তৃতায় বলিয়াছেন, ভারতবর্ষের প্রধান প্রতিনিধি-সভা দুটি, কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ ; কংগ্রেস হিন্দুদের এবং মুসলিম লীগ মুসলমানদের প্রতিনিধি। এই উক্তি একাধিক অসত্য কথার সমষ্টি । কংগ্রেসের সভ্যদের মধ্যে হিন্দু, মুসলমান, খ্ৰীষ্টিয়ান, পারসী, শিখ, বৌদ্ধ প্রভৃতি নানা সম্প্রদায়ের লোক আছেন—শুধু হিন্দু নহে ; যদিও ভারতবর্ষে হিন্দুদের সংখ্যা খুব বেশী বলিয়া হিন্দু কংগ্রেসীরাই সংখ্যায় অধিক। কংগ্রেস কেবল হিন্দুদের প্রতিনিধি ইহা যেমন মিথ্যা, উই সব হিন্দুর প্রতিনিধি ইহাও সেইরূপ মিথ্যা । অগণিত হিন্দু কংগ্রেসের সভ্য নহে, এবং কংগ্রেসবিরোধী হিন্দুও অনেক আছে। হিন্দু মহাসভা সমুদয় হিন্দুর প্রতিনিধি বলিয়া আপনার দাবী ঘোষণা করে। তাহা সত্য না হইলেও উহা যে বিস্তর হিন্দুর প্রতিনিধি তাহাতে সন্দেহ নাই । কংগ্রেস কেবলমাত্র তাহার হিন্দু সভ্যদের প্রতিনিধি নহে ; ইহা ভারতবর্ষের নানা ধৰ্ম্মসম্প্রদায়ের