२२ প্রবাসী >N38や বুদ্ধ, চীনদেশ মুণ্ডিতশির, শ্মশ্র গুম্ফবিশিষ্ট অতীত ও বর্তমানের উজ্জ্বল ও মধুর ভাব ও ঘটনা শিল্পের বিস্তৃত ক্ষেত্র হইয়া উঠিয়াছিল, সুন্দরকে প্রকাশ করিতে সৌন্দর্য্যের চর্চা আবশ্বক হইয়াছিল। অন্য দেশের মত ইহা বাহিরের রূপসাধনা নয়, মানুষের অন্তরের অস্তস্তলে যে সৌন্দয্য ও সুসঙ্গতি আছে তাহাই প্রকাশিত করিবার এই ; চেষ্টা । বুদ্ধ ছিলেন গৃহত্যাগী মহাশ্রমণ, এই কারণে শিল্প ব্যাহত হইবার কথা, কিন্তু তাহার জীবনে যে রূপাতীত সৌন্দৰ্য্য বিকশিত হইয়াছিল তাহার স্বযম ও সৌরভ শিল্পীকে মুগ্ধ করিয়াছিল—সে মাটি, কাঠ, পাথর ও ধাতুতে তাহাকে রূপ দিতে চাহিয়াছিল, রেখা ও বর্ণদ্বারা তাহাকে অঙ্কিত ও রঞ্জিত করিতে চেষ্টা করিয়াছিল। এশিয়াব্যাপী বিস্তৃত বৌদ্ধ ধৰ্ম্মক্ষেত্রের এই যে শিল্পজাগরণ তাহার একটি প্রধান লক্ষণীয কথা এই যে, ইহাতে আর্য্য, দ্রাবিড়, হেলেনীয়, ইরাণীয়, মঙ্গোলীয় ও দ্বীপান্তরীয় জাতিসমূহ যে যার নিজের ভাব প্রকাশ করিবার অবসর পাইয়াছিল। বৌদ্ধ সজা অবশ্ব নিয়ম বাধিয়া দিয়া শিল্পশাস্ত্র রচনা করিয়াছিল, কিন্তু বিচিত্র দেশের বিচিত্র জাতি তাহাদের বিচিত্র মনোভাবকে সম্পূর্ণভাবে শিল্পশাত্মঘারা প্রভাবিত হইতে দেয় নাই। তাহাদের মনের মুক্তিদাতাকে তাহারা মনের মত করিয়া গড়িয়াছিল। আমরা যদি এশিয়া মহাদেশের বহু অঞ্চলের বুদ্ধমূৰ্ত্তিগুলি আলোচনা করি তবে এই কথাই আমাদের মনে জাগে যে বুদ্ধ দেশগত ও জাতিগত বিচিত্রতাকে দমন না করিয়া বরং ফুটাইয়া তুলিয়াছেন—যদিও এই বিচিত্রতার মধ্য দিয়া জ্ঞান ও সৌন্দৰ্য্যগত ঐক্যের বাণীই প্রকাশ পাইবার চেষ্টা করিয়াছে । শিল্পীর হাত বিভিন্ন ধরণে কাজ করিয়াছে বটে, কিন্তু বুদ্ধ এশিয়ার হৃদয়কে এক করিয়া দিয়াছিলেন। আর বুদ্ধ যে ব্যক্তিত্ববাদ প্রচার করিয়াছিলেন তা শিল্পে পরিস্ফুট হইয়া উঠিয়াছে। ফলে বুদ্ধ-কল্পনায় শিল্পস্বাধীনতা চরম বিকাশ প্রাপ্ত হইয়াছে। শিল্পহিসাবে ভালমন্দের তুলনা অপেক্ষা প্রকাশের আকুতিই হইল লক্ষ্য করিবার বুদ্ধ, কোরিয়ার পথের ধারে এইরূপ মূৰ্ত্তি দেখা যায়
পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।