مه ' -سسسحخانه মনোহর শুধু ডাকিলেন, উমা। উমা হাসিয়া বলিল, “উমা তো মরেছে, কেন বার বার তাকে ডাকছ! একটি কথা শোন। শুনবে ? একটু থামিয়া বলিল, “রামায়ণ-মহাভারত যে মিথ্যে নয় সে-কথার নজির রেখে গেলাম। কিন্তু, উঃ, বুকে বড় ব্যথা গো।" মনোহর দাস বলিলেন, “আমি এত পথ ভেঙে কষ্ট করে ছুটে এলাম, তুমি দূরে দাড়িয়ে রইলে? সবাই বললে, তুমি মরেছ, আমার বিশ্বাস হয় নি।
- ८ङ्कन श्ा नि ? “কি জানি। আমি জানতাম যে, আমায় যে সত্যিকারের ভালবেসেছে—সে অামায় না জানিয়ে কোথাও যেতে পারে না, এমন কি পরলোকেও না।’
‘তুমি জানতে ? উমার স্বর আগ্রহকম্পিত। 'জানতাম বই কি, উমা। তাই তো আবার দেখা হ’ল আমাদের।” উমা আনন-আপ্লুত স্বরে বলিল, “আমিও এই আশায় বেঁচে আছি। নইলে দেহ যেদিন নোংরা হ’ল সেদিনই তো মরতাম।” মনোহর দাস চমকিত হইলেন। Tউমা তাহার চমক লক্ষ্য করিয়া কহিল, তুমি কেন আমায় শিখিয়েছিলে দুঃখের পর মুখ আছে, রামায়ণমহাভারত মিথ্যে নয় ? কেন পুণ্যির লোভ আমার মনে জাগল ? দেখ দেখি আমাকে—এই কাপড়, দেহ, এই গহনা—কোথাও দুঃখকষ্ট আছে কি আজ ? সোনার পৈছায় অপরাহ্লের সূৰ্য্য-কিরণ পড়িয়া জলিয়া ਮੌਂਗ । মনোহর দাস একদৃষ্টিতে বহুক্ষণ উমার মুখের পানে চাহিয়া দীর্ঘনিশ্বাসের সঙ্গে কহিলেন, ‘না উমা, তোমার বড় দুঃখ । প্রবাসী 89סאל উমার দুই চোখ দিয়া জলধারা গড়াইয়া পড়িল । - ভাবে সে কাদিয়া বলিল, “আমি অবুঝ, আমায়ু মাপ করবে ? আবার মনোহর দাস বাহু বাড়াইলেন, ছিন্নমূল পাদপের মত উমা তাহার পায়ে লটা য়া পড়িল । তার পরের কাহিনী সংক্ষিপ্ত। বহুদিন পরে মনোহর দাস গ্রামের অভিমুখে যাত্রা করিলেন। উমা সঙ্গে নাই। এবারের মৃত্যু-সংবাদ অলীক নহে। উমা নাকি প্রায়শ্চিত্ত করিয়াছে। সে-কালের রূঢ় সমাজের ভয়ে নহে, আত্মগ্লানিতে ও মনোবিকারে সে সত্যই দেহত্যাগ করিয়াছে। বিদায়কালে সুবলকে যে পালা-গানের খাতাখানি দিয়া গিয়াছিলেন, সে পালা গান মনোহর দাস বাংলায় পা দিয়াই এক অপরিচিত পল্লীর বারোয়ারিতলায় শুনিলেন। সহস্ৰ লোককে র্তাহার নায়ক-নায়িকার ব্যথায় অশ্র বিসর্জন করিতে দেখিলেন। মনোহর দাসের মুখের জ্যোতি প্রখর হইয়া উঠিল। যে ব্যথা একদিন তাহার হৃদয়ে আবদ্ধ ছিল, আজ দেশময় তাহ! ছড়াইয়া দিতে পারিয়াছেন। তাতার যেবেদনা—সে তো শুদ্ধমাত্র তাহারই নহে। বিশ্বব্যাপী সে-বেদনার আস্বাদ বহু নরনারীই যে লাভ করিয়াছেন । তিনি ও উমা ভালবাসার হোমাগ্নি জালিয়া বন্ডর তপস্যাকে আজ সফল করিতে পারিয়াছেন। ধন্য তিনি--আa v_i উমা । উমাকে হারাইয়াও মনোন্তর দাস আবার তাহাকে নূতন করিয়া পাইলেন। ভালবাসার অদৃষ্ঠ শক্তিতে মনোহর দাস আজ শক্তিমান । হাতে তিনি আবার শরের কলম তুলিয়া লইলেন, সম্মুখে মেলিয়া ধরিলেন বৃহৎ খাতা। মানুষ মনোহর দাসের মৃত্যু হইল, কবি মনোহর দাস বাচিয়া উঠিলেন।