পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

tகை তিনি যে জমিদার স্বরূপে সাঁওতালদের বেগার ধরছেন, এতে আমার আপত্তি আছে । ওরা আমার দাদন খেয়ে রেখেছে। আমার দাদন-দেওয়া কুলী বেগার ধরলে আমার কাজের ক্ষতি হয় । বুঝলেন ? -ञांग्रख्छ ईT । —আচ্ছা—তা হ’লে আপনি যান ওঁর কাছে। মজুমদার চলিয়া গেল। বিমলবাবু কাগজ-কলম লইয়। বসিলেন । কিছুক্ষণ পরই এক জন চাপরাসী আসিয়া সেলাম করিয়া দাড়াইল, বলিল—এসেছে ! মুখ না তুলিয়াই বিমলবাবু বলিলেন–নিয়ে আয়। আসিয়া প্রবেশ করিল ধে ব্যক্তি, সে এখানকার নূতন মদের দোকানের ভেণ্ডার। লোকটি একটি প্রণাম করিয়া দাড়াইল। বিমলবাবু চাপরাসীটাকে বলিলেন— যা তুই এখান থেকে। চাপরাসীটা চলিয়া গেল। বিমলবাবু বলিলেন— দেখ, আমার জন্তেই তোমার এ দোকান। লোকটা সঙ্গে সঙ্গে বিনয়ে কৃতজ্ঞতায় শতমূখ হুইয়৷ বলিয়া উঠিল—দেখেন দেখি—দেখেন দেখি, হুজুরই আমার মা-বাপ— —হঁ্যা । বাধা দিয়া বিমলবাবু বলিলেন—হঁ্যা। একটি কাজ তোমাকে করতে হচ্ছে । সাওতালদের মাথায় একটা কথা তোমাকে ঢুকিয়ে দিতে হবে। কৌশলে ! বুঝেছ ?—দরজাটা ভেজিয়ে দাও। ર 8 মজুমদার এই দৌত্য লইয়া ইন্দ্র রায়ের সম্মুখে উপস্থিত হইবার কল্পনায় চঞ্চল হইয় পড়িল । ইন্দ্র রায়ের দাস্তিকতা-ভরা দৃষ্টি, হাসি, কথা স্বতীয় শায়কের মত আসিয়া তাহার মর্থস্থল যেন বিদ্ধ করে। আর তাহার নিজের বাক্যবাণগুলি যত শাণ দিয়া শাণিত করিয়াই সে নিক্ষেপ করুক, নিক্ষেপ-শক্তির অভাবে কঁাপিতে কঁাপিতে নতশির হুইয়া রায়ের সম্মুখে যেন প্রণত হইয়াই লুটাইয়া পড়ে। তবে এবার পৃষ্ঠদেশে আছেন সক্ষম রধ বিমলবাবু, বিমলবাবুর আজিকার এই বাক্য-শায়কটি মধু স্বতীয়ই নয়—শক্তির বেগে তাহার গতি অকম্পিত কালিনী 83 এবং সোজা ! মজুমদার একটি সভয় হিংস্রতায় চঞ্চল श्हेग्न ऊँठेिल । নানা কল্পনা করিতে করিতেই সে চর হইতে নদীর ঘাটে আসিয়া নামিল। চরের উপর নদীর মুখ পৰ্য্যস্ত রাস্তাটা এখন পাকা হইয়া গিয়াছে, কালির বুকেও এখন গাড়ীর চাকায় চাকায় বেশ একটি চিহ্নিত রাস্তা রায়হাটের খেয়াঘাটে গিয়া উঠিয়াছে। ওপার হইতে মজুরশ্রেণীর পুরুষ ও মেয়েরা দল বাধিয়া চরের দিকেই আসিতেছে। কলের ইমারতের কাজেই ইহারা এখন খাটে, আগের চেয়ে মজুরিও কিছু বাড়িয়াছে। কতকগুলি চাষীও বেগুন, মূল, শাকসব্জী বোঝাই বুড়ি মাথায় চরের দিকে আসিতেছে । রায়হাটের চেয়ে জিনিষপত্র চরেই এখন কাটতি হয় বেশী, চরের মিস্ত্রীমজুরেরা দরদস্তুর করে কম, কেনেও পরিমাণে বেশী। এপারে যাহারাই আসিতেছিল তাহারা সকলেই মজুমদারকে সশ্রদ্ধ অভিবাদন জানাইল, মজুদারই এখন কলের ম্যানেজার। রায়হাটের ঘাটে আসিয়া মজুমদার বিরক্ত হইয়া উঠিল-পথে এক হাটু ধুলা হইয়াছে। চারি পাশে দীর্ঘকালের প্রাচীন গাছের ঘন ছায়ার মধ্যে হিম যেন জমাট বাধিয়া আছে। পথের উপর মানুষজনও নাই। মজুমদার চরের ম্যানেজারীত্বের গৌরবের গোপন অহঙ্কার নির্জনতার স্বযোগে প্রকাশ করিয়া ফেলিল—বেশ জোর গলাতেই, আপন মনেই সে বলিয়। উঠিল—ম-লক্ষ্মী যখন ছাড়েন, তখন এই দশাই হয় ! ছঃ-অতি দূপে হত। লস্ক-অতিমানে চ কৌরবাঃ । পথের দুই পাশে প্রাচীন কালের নৌকার মত বাকানো চালকাঠামো-যুক্ত কোঠ ঘরগুলির দিকে চাহিয়াও তাহার ঘৃণা হইল। বলিল— ছ:, কি সব জঘন্য চালকাঠামো ! সেকালের কি সবই ছিল কিম্ভূতকিমাকার! যত জবরজঙ—হাতীশুড়-পরী—সিংহী—এই দিয়ে আবার বাহার করেছে! ঘর করবে বাংলা চাল-সোজা - একেবারে পাকা দালান ঘরের মত । মোট কথা রায়হাটের সমস্ত কিছুকে ঘৃণা করিয়া ব্যঙ্গ করিয়া ইন্দ্র রায়ের সম্মুখীন হইবার মত মনোবৃত্তিকে ধেদৃঢ় করিয়া লইতেছিল। -