পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাৰ্ত্তিক নিৰ্ম্মোক qవా বৈকালে চেয়ারম্যান রাখাল নন্দীর সঙ্গেও দেথা হইল । নন্দী মহাশয় নিজের বাগানের একটি ছায়া-শীতল স্থানে শ্বেতপাথরের চৌতারার উপর বসিয়া তাম্রকুট সেবন করিতেছিলেন—অম্বরি তামাকের গন্ধে চতুর্দিক আমোদিত। নগ্নগাত্র, ক্ষৌরিকৃত মুখমণ্ডল, ভাসা-ভাস আরক্ত নমুন, মাংসল নাকের উপর স্বক্ষ একটি তিলক, গলায় কণ্ঠ, দক্ষিণ বাহুমূলে মাদুলি, মেদবহুল অতিপুষ্টদেহ নন্দী মহাশয় গরমে দারুণ কষ্ট ভোগ করিতেছিলেন । পিছনে দুই জন ভূত্য দাড়াইয় প্রাণপণে হাওয়া করিতেছিল। বিমলের সঙ্গে পরেশ-দাও গিয়াছিলেন । পরিচয় দিতেই অর্থাং বিমল চাটুজ্যে ব্রাহ্মণ-সন্তান এই বোধ মনে স্পষ্টভাবে জাগরুক হক্টতেই নন্দী মহাশয় শরীরের গুরুভার সত্ত্বে - উঠিয়া দাড়াইবার চেষ্টা করিলেন এবং বেশ একটু ঝুকিয়া বিমলকে নমস্কার করিলেন। পরেশ-দা বলিলেন—বমুন, বসুন, আপনি বস্থন । —ওরে দুখান চেয়ার নিয়ে আয় শীগগির—ব্রাহ্মণসন্তান দাড়িয়ে থাকবেন আপনার আর আমি বসব, সে কি একটা কথা হ’ল ! ননী মহাশয় উঠিয়া দাড়াইলেন । বেশীক্ষণ অবশ্য র্তাহাকে দাড়াইতে হইল না,—দুইখানি চেয়ার শীঘ্রই আসিয়া পড়িল এবং সকলে উপবেশন করিলেন । নন্দী মহাশয় পুনরায় আদেশ করিলেন—ডাব নিয়ে আয়, বরফ দিয়ে আনিস । পরেশ-দা বলিলেন—আপনার বাড়ীতে বরফ ! নন্দী মহাশয় হাসিয়া বলিলেন—আপনাদের জন্তে রাখতে হয়, আমার মত সকলেই ত আর বাতুল নয়! পরেশ-দা বলিলেন—আপনি খান না তা শুনেছি । গড়গড়ার নলে একটি সুদীর্ঘ টান দিয়া ধূম উদগীরণ করিতে করিতে নন্দী মহাশয় বলিলেন—আমার কেমন যেন প্রবৃত্তি হয় না । সংস্কার ব’লে ত একটা জিনিষ আছে— কিছুক্ষণ তামাকে টান দিয়া নন্দী মহাশয় বলিলেন— খাব, আগে আমরা ইলেকট্রিসিটিটা এনে ফেলি, নিজের বাড়ীতে রেফরিজেরেটারে বরফ বানিয়ে তার পর খাব। দাড়ান না,— পরেশ-দ টাউনে ? —চেষ্টা তো করছি, একটা স্কীমও খাড়া করেছি, বাগড় দিচ্ছেন আমাদের মথুরবাবু-লোকটিকে ত জানেন-- অরগুণ নেই বরগুণ আছে— পুনরায় গড়গড়ায় টান দিতে লাগিলেন । আবার সহসা বলিলেন—ইলেকটি সিটি না হ’লে এই দারুণ গ্রীষ্মে কি কষ্ট বলুন তো—এই চাকর দুটাে হিমসিম থেয়ে যাচ্ছে, তবু দেহ শীতল হচ্ছে না! ওদেরও তো कठे शग्न ! আবার কিছুক্ষণ গড়গড়ায় টান দিলেন । তাহার পর সহসা বিমলের দিকে ফিরিয়া বলিলেন—আপনাদের হাসপাতালেও ত ইলেকটিক হ’লে নুবিধে হয়। বিমল বলিল--তা হয় বইকি ! নন্দী মহাশয় পুনরায় তাম্রকুটে মন দিলেন। সেদিন রাত্রে ডিট্রজ লণ্টন ধরিয়া অপারেশনের কথাটা বিমলের মনে পড়াতে সে পুনরায় বলিল-ইলেকটি সিটি হ’লে খুব স্ববিধে হয়। রাত্রে ইমারজেন্সি অপারেশন ইলেকটি সিটি না থাকলে হওয়া অসম্ভব । নন্দী মহাশয় চক্ষু বুজিয়া তামাক টানিতেছিলেন। তামাক টানিতে টানিতেই বলিলেন—ঐ পয়েণ্টট টুকে দেবেন ত আমাকে— হঠাৎ এই পয়েন্টটা টুকিয়া লইয়া কি হইবে বিমল ঠিক বুঝিল না, তথাপি বলিল—আচ্ছা! ডাব আসিল । দুই-চারি কথার পর পরেশ-দা ও বিমল গাত্রে!থান করিলেন । আসিবার প্রাক্কালে নন্দী মহাশয় বলিলেন—হাসপাতালটার বড় বদনাম হয়ে গেছে মশাই আগের ডাক্তারের আমলে । আপনি একটু সামলেস্বমলে নিন আবার ! ==অচিন্তা বলিলেন—ইলেকটি সিটি হবে না কি জগদীশ বাৰু ডাক্তারের সহিতও আলাপ হইল। লোকটি অতিশয় মিষ্টভাষী । দেখিয়া মনে হয় তিনি কখনও কাহারও মনে ব্যথা দিতে পারেন না । কাহারও কথার প্রতিবাদ করা, এমন কি ইঙ্গিতেও কাহারও মনে