পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

مين . প্রবাসী ృతి8ఆ আঘাত দেওয়া যেন তাহার পক্ষে অসম্ভব। মুখে হাসি সৰ্ব্বদা লাগিয়াই আছে। সামনের দিকে নীচে গোটা দুই দাত নাই, হাসির ফঁাকে ফঁাকে ফোকলা দাতের ভিতর দিয়া লাল টুকটুকে জিবের ডগাটি প্রায়ই দেখা যাইতেছে। বিমলের পরিচয় পাইয়া একমুখ হাসিয়া বলিলেন—আমুন আহন—আপনার কথাই হচ্ছিল একটু আগে ! থামুন এই কটা সেরে নিই, তার পর কথা কইছি আপনার সঙ্গে— সমবেত কয়েক জন রোগী-রোগিণীকে লক্ষ্য করিয়া তিনি বলিলেন—আসুন আপনারা ঘরের ভেতর— পরেশ-দা বিমলকে বলিলেন—আমার ডাকের সময় হ’ল, আমি চললাম, হরেন বেচারা এক সামলাতে পারবে না। তুমি আলাপ-টালাপ ক’রে এস-বুঝলে ? পরেশ-দা চলিয়া গেলেন, বিমল এক বসিয়া রহিল। খানিকক্ষণ পরে জগদীশবাবু বাহির হইয়া আসিলেন । র্তাহার সঙ্গে একটি ছোকরা বলিতে বলিতে বাহির হইল— তেতো ওষুধ আমার বউ খেতে পারবে না ডাক্তারবাবু, এ ওষুধটা মিষ্টি হবে ত? জগদীশবাবু সহান্ত দৃষ্টিতে তাহার পানে এক বার চাহিলেন। ফোকলা দাতের ফাকে জিবের ডগাটুকু বারদুই উকি দিয়া গেল। বলিলেন--আমি তোমার বউকে চিনি না? ঠিক ওষুধ দিয়েছি। আজ দেখে, ঠিক থাবে— ছোকরা পুলকিত হইয়া চলিয়া গেল । জগদীশবাবু সম্মিত মুখে বিমলের দিকে চাহিয়া চেয়ারে উপবেশন করিলেন এবং ভ্র কুঞ্চিত করিয়া খানিকক্ষণ তাহার মুখের দিকে চাহিয়৷ রহিলেন । - বিমল একটু হাসিয়া বলিল—এলাম আপনাদের আশ্রয়ে— জগদীশবাবু কিছু না বলিয়া তেমনই ভ্র কুঞ্চিত করিয়া চাহিয়া রহিলেন । বিমল একটু অস্বস্তি বোধ করিতে লাগিল, তাহার পর বলিল –দেখছেন কি আমন ক’রে ? জগদীশবাবু বলিলেন—আশ্চৰ্য্য চওড়া ত আপনার কপাল !—তাহার পরই তাঙ্গার মুখখানি হাসিতে উদ্ভাসিত হইয়া উঠিল। ফোকলা দাতের ফাকে জিব উকি মারিতে লাগিল । এ পর্য্যস্ত বিমলকে কপাল লইয়া কেহ প্রশংসা করে নাই। সে হাসিয়া বলিল—এ-কথা আর তো কখনো শুনি নি ! জগদীশবাবু বলিলেন-আমি বলছি, খুব চওড়া কপাল আপনার— বিমল কি বলিবে চুপ করিয়া রহিল। জগদীশবাবু বলিলেন—কেমন লাগছে জায়গাটা ? -भन्म कि ! —হাসপাতাল কেমন দেখলেন ? —এখনও দেখবার সময় পাই নি, চার্জ নিতেই আজ সমস্ত সকালটা গেল । কাল থেকে দেখা যাবে ভাল ক’রে । আজ বিকেলটা আপনাদের সঙ্গে দেখাশোনা করতেই কাটল— —বেশ, বেশ-ভূধরবাবুর সঙ্গে দেথা হয়েছে ? —না, কে তিনি ? —তিনি আমাদেরই এক জন—এখানেই প্র্যাকটিস করেন । বাজারের ভিতর তার ডিসপেনসারি। বিমল প্রশ্ন করিল—এখানে ফিল্ড কেমন ? —ঐ কোন রকমে গ্রাসাচ্ছাদন হয়ে যায় আর কি আমাদের ক-জনের । এবার উঠতে হবে আমাকে, তিনটে কল বাকী আছে এখনও— জগদীশবাবু উঠিতেছিলেন, বিমলও উঠিয়া দাড়াইয়াছিল এমন সময় একটি যুবক আসিয়া প্রবেশ করিল। ফিন্‌ফিনে আদির পাঞ্জাবি গায়ে, পায়ে পেটেণ্ট লেম্বারের পাম্পশু, সাবান দেওয়ার জন্য মাথার চুল উসকোখুসকো, হাতের আঙলে দামী পাথর-বসানো আংটি। বেশ সভ্যভব্য সুন্দর চেহারা । —আহন, আম্বন অমরবাবু, তার পর খবর কি, কেমন আছেন— বিমল অমরকে এখানে দেখিবে প্রত্যাশা করে নাই । সে সবিস্ময়ে বলিল-আমর তুই এখানে ! অমর বলিল—বিমল যে, আরে তুই কোথা থেকে ? —আমি যে এখানকার হাসপাতালে ডাক্তার হয়ে এসেছি !