পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাৰ্ত্তিক পাকা-দেখা ፃዊ গোরাদিৰ গনশার পানে আড়চোখে এক বার চাহিয়া ঘোংলাকে প্রশ্ন করিল, “আপনি গোকুল চাটুজ্জের ভাগনে গণেশচন্দ্রের কথা বলছেন, মেসোমশাই ? ... হীরের টুকরো --” হীরের টুকরো’—এত প্রশংসায় গোফদাড়ির অন্তরালে রাডিয়া উঠিতেছিল, মুখটা ফিরাইয়া লইল । একটি ট্রের উপর গুটিচারেক র্কাচের গেলাস ও একটা এনামেলের জাগের এক জাগ ঘোলের সরবৎ আসিল । ত্ৰিলোচন নয়, অন্য একটি ছোকরা আনিয়াছে । গোরাচাদ যখন চতুর্থ গ্লাসে চুমুক দিয়াছে, ত্রিলোচন আসিয়া বলিল, “নিন। আপনারা গা তুলুন এবার একটু ” গোরাচাদের হাতের গ্লাসটা আর একটু হইলে পড়িয়া টেবিলে আছাড় খাইত, কোন রকমে সামলাইয়া লইয়া ত্ৰিলোচনের পানে উদাস ভাবে চাহিয়া রহিল । ত্রিলোচন গৃহকর্ধার পানে চাহিয়া বলিল, “খালি মালাইকারীট বাকী ছিল, গিয়ে দেখি হয়ে গেছে। পরিবেশন করিয়ে এলাম।” একটা ধিক্কারের দৃষ্টতে গোরাচাদের পানে চাহিল,— অর্থাং এই জন্যেই সরবত এতক্ষণ আটকে রেখেছিলাম, কিন্তু কপাল মন্দ তোর • • গৃহকৰ্ত্ত বলিলেন, “বেশ করেছ, অত দূর থেকে আস, আবার ফিরে ধেতে হবে । ...তা হ’লে এবার উঠতে হবে একটু।” তিন জনে উঠিল, গোরাচাদ উঠিয়া কোমরের কাপড়টা আলগা করিয়া দিল । গনুশা শুনিতে না পাইবার কথা বলিয়া বসিয়াছিল, ঘোৎনা ঝু কিয়া উচ্চৈঃস্বরে বলিল, “উঠন, একটু মিষ্টিমুখ করার জন্যে এরা বড় পীড়াপীড়ি করছেন ।” শুনিতে পায় নাই, শুধু আন্দাজে বুঝিয়াছে এই ভাবে একটু হাসিয়া গল্শা উঠিয়া পড়িল । নিমন্ত্রিত বুদ্ধ বলিলেন, "খুব অল্প কথা কন দেখছি।” ঘোৎনা বলিল, “যেমন মিতভাষী, তেমনি মিতাহারী, তেমনি অমায়িক ...” গোরাচাদ আহাৰ্য্যের এত কাছাকাছি হওয়ায় সব ভুলিয়া গিয়াছে, অন্যমনস্ক হইয়া বলিল, “জামাই যা হবে•••’ ত্রিলোচনের কনুইয়ের গুতা খাইয়া থামিয়া গেল । বেখাপ্পা কথাটা শুনিয়া সবাই ঘুরিয়া দেখিয়াছে, ঘোষনা গৃহকতার মুখের দিকে চাহিয়া বলিল, “বর এ-বিষয়ে ঠিক তার ঠাকুরদাদার মতষ্ট হবে । এ আপনি মিলিয়ে নেবেন । গোরাচাr-rমানে, আমাদের অসীমকুমার বাবাজী কিছু ভুল বলেন নি।” সবার অলক্ষ্যে “অসীমকুমার বাবাজী’র দিকে একটা অগ্নিকটাক্ষ হানিল । তিন জনে আসিয়া আসনে বসিল । গোরাচাদের জলাতঙ্কের মত দাড়াইয়া গিয়াছে, অন্যমনস্ক ভাবে গেলাসটা সরাইয়া রাখিল । কে. গুপ্তকে শিখাইয়া রাখা হইয়াছিল, সে সোজাসুজি একেবারে না বসিয়া ত্ৰিলোচনের দিকে চাহিয়া বলিল, “একটু জল প্রয়োজন ষে ; পদপ্রক্ষালন করতে হবে।” সকলে ব্যস্ত হইয়া উঠিল, “তাই তো, পুরুভমানুষ••• মনেই ছিল ন! কথাটা---আর আজকালকার যা সব পুরুত.যাও শীগগির এক ঘটি জল.” ত্রিলোচন দিব্যি সরঞ্জামটি দাড় করাষ্টয়াছে। লুচি, পটলভাজা, ডালনা, মুড়া দিয়া মূগের ডাল, মাংসের কোমর্শ, গলদাচিংড়ির মালাইকারী,—চাটনি ; ওদিকে দই, রাবড়ি, সন্দেশ, রসগোল্লা, ল্যাংড়া আম । ঘোংনা হাতে আচমনের জল লইয়া চক্ষু কপালে তুলিয়া বলিল, “এ যে এলান্তি কাণ্ড করেছেন ! এত খাওয়া যায় কখনও ? না খাবার আর আমাদের সে বয়স আছে ?” “অতি সামান্ত, বিদুরের আয়োজন”—বলিয়া বিনয় করিতে গিয়া বুদ্ধ হঠাং চকিত হইয়। বলিলেন, “এঃ, এ ষে মস্ত ভূল হয়েছে,—পুরুতঠাকুর ঐ এক সাটে বসবেন ?—” না, ঐসব থাকেন ? দেখছ সাত্ত্বিক প্রকৃতির লোক, এ কি তোমাদের কলকাতার হোটেল-মারা পুরুত ? আলাদা ঠাই ক’রে কিছু ফল আর একটু সন্দেশ এনে দাও।” কে. গুপ্তকে ন্যায়রত্ন মহাশয়ের নিকট হইতে নিষ্ঠা এবং শুচিত সম্বন্ধে একটা শ্লোক মুখস্থ করান হইয়াছিল, মনে মনে ভাল করিয়া ভাজিয়া সবে বেচারা আওডাষ্টতে যাইবে, মাথায় যেন বজ্ৰাঘাত হইল। সে মুখটা ফ্যাকাশে