পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৭১২ পয়সাকে ক্টোচার খুটে বেঁধে এবং এককুচে কাটাস্থপুরি চটু ক’রে মুখে ফেলে দিয়ে ফুর্ভির সঙ্গে আবার বললে, ‘চল— দেশের দিকে গানিকটা ত যাওয়া হবে ।’ জগা ও বন৷ একবাক্যে বলে উঠল—ধেৎ—তুই একটা কিছু না।’ ૨ জগা ও বন ট্রেনে চড়ে বসেছে । মধা প্লাটফরমে দাড়িয়ে কামরার দরজায় বুক বাধিয়ে একদৃষ্টে তাদের দিকে চেয়ে আছে। ঢঙা ঢং করে ঘণ্টা পড়ল। গার্ড নিশান দুলিয়ে হুইসেল দিলেন। উত্তপ্ত কড়াইয়ের উপর জল ঢেলে দিলে যেমন শব্দ হয়, তেমনি শব্দ এঞ্জিনের দিক হতে ছুটে এল । হঠাৎ মধা চাকে উঠে তার ক্টোচার খুট হতে এক টাকা তিন আনা বের করে ( কেন-ন, প্লাটফরম্ টিকিটের জন্ত চার পয়সা খরচ হয়ে গিয়েছিল ) জগার দিকে বাড়িয়ে ধরে বললে—‘ধরiভাই—এই যা সঙ্গে আছে—আর ত আনতে ভুলেই গেছি—এই নিয়ে আমার বাড়ির তাদের হাতে দিস— ।” তখন এঞ্জিন ছাপ স্তাপ শব্দে ট্রেনটাকে টেনে নিয়ে যেতে আরম্ভ করেছে। মধা প্লাটফরমের উপর দিয়ে সজোরে কাটতে ঠাটতে বললে—“আর বলিস্—আমি ভালই আছি—দু-এক মাসের মধ্যেই দেশে গিয়ে তাদের সঙ্গে দেখা করব ।” সমস্ত লৌহ-সরীসৃপট প্লাটফরমের গুহা ছেড়ে ঈষৎ বেকতে বেঁকতে মুক্ত আলোকে দেহ বিস্তার করেচে আর মধা দৌড়তে দৌড়তে তখনও বলচে, আর বলিস্ তেমন কষ্ট হয় ত রূপোর গয়নাই যেন দু-একখানা বেচে– আমি যাবার সময় আবার গড়িয়ে নিয়ে যাব।” কিন্তু এই শেষ কথাগুলো বোধ হয় জগা বনার কানে পৌছল ন!—তারা ই-স্বচক ভঙ্গীতে মাথা নেড়ে, তাদের পানের বুগলী হ’তে পান বের করে মুখে দিলে। মধ্য একজন কুলীর—‘এই আউর কাহা যাতা হায়' শৰে চম্কে উঠে চেয়ে দেখে সে প্লাটফরমের একেবারে শেষ সীমায় গিয়ে পড়েচে । থমকে দাড়িয়ে পড়ে সে ষ্টেশনত্যাগী ট্রেনকে চোখ প্রবাসী—ফাঙ্কন, ১৩৩৮ ছুটি দিয়েছে। এই বলেই সে তার সঞ্চিত পাচলিকে [ ७sं खॉं, २झ ५७ ASA SSASASA TTTAAASAAAS দিয়ে অমুসরণ করতে লাগল। ট্রেনের শেষ গাড়ীখানায় লাল আলো তার দিকে যেন নিষেধের রক্তচক্ষে চেয়ে বলতে লাগল—‘ফিরে যা।’ তৰু সে ফিরলে না। যতক্ষণ রক্তবিন্দুটি একেবারে না আঁধারের বুকে মিলিয়ে গেল— যতক্ষণ দূর চক্রের ঝক ঝকৃ’ শৰ প্লাটফরমের গোলমালের মধ্যে একেবারে না হারিয়ে গেল ততক্ষণ সে স্থিরনেত্রে দূর দিগন্তের পানে চেয়ে রইল। তারপর একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে ধীরে ধীরে প্লাটফরম বেয়ে ফিরতে লাগল । হাবড়া ষ্টেশনের গেট পার হয়ে সে ধীরে ধীরে উঠল হাবড়ার পোলের উপর । সে চলেইচে–চলেইচে—পোল আর ফুরোয় না। পোল যেন আগেকার চেয়ে দশগুণ বেশী লম্বা হয়েচে । আশপাশের জনশ্ৰোত তার ছপাশ দিয়ে দ্রুতবেগে বেরিয়ে যাচ্ছে—সে সকলের পিছনে পড়ে যাচ্ছে—কি স্ত্রীলোকের কি বালকের । কিন্তু তার সেদিকে খেয়াইল ছিল না। সে না-দেখছিল লোক, ন-দেখছিল নদী, ন-দেখছিল জাহাজ। সে দেখছিল একখান। ট্রেন মাঠের ভিতর দিয়ে নক্ষত্ৰবেগে ছুটে চলেছে, আর তারই একটি দীপ্ত কামরার মধ্যে তারই দুটি পরিচিত মুখ হাসির ফোয়ার ছোটাচ্ছে । ‘এই হঢ় যাও—উল্লু ব’লে একজন যগু হিন্দুস্থানী মধাকে ধাক্কা মেরে চলে গেল—কেন-না, মধা বোধ হয় টলতে টল্‌তে তার সামনে গিয়ে পড়েছিল। ধাক্কা অবশ্য এমন জোরে সে মারেনি যে মধার তা সামলান উচিত ছিল না, কিন্তু কেন জানি না মধা পড়ে গিয়ে গড়াতে গড়াতে একেবারে গাড়ীর রাস্তায় গিয়ে পড়ল। তার দুর্বল পা দুটোকে কুড়িয়ে নিয়ে সে উঠে দাড়াবার আগেই একখানা মোটর গাড়ী ছুটে এসে তার গায়ের উপর পড়ল। ড্রাইভার ই-ই করে ব্রেক বেঁধে ফেললে বটে, কিন্তু মধা আর উঠে দাড়াতে পারলে না। তার মুখ দিয়ে শুধু গে। গে৷ শৰ বেরতে লাগল। দেখতে দেখতে পোলের উপর ভিড় জমে গেল। কনেষ্টবলরা ঠেলে ঠেলে লোক সরাবার বুখা চেষ্টা করতে লাগল। পাচ-সাত মিনিটের মধ্যেই একখান এম্বুলেন্‌স গাড়ী