পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১১২ প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩৩৮ ৩১শ ভাগ, ১ম খণ্ড পূবে দ্বীপ শব্দের অর্থ দেওয়া গিয়াছে । সমুদ্র, বিস্তীর্ণ জলরাশি, যাহার এপার হইতে ওপার দেখিতে পাওয়া যায় না । ষ্টকার দৃষ্টান্ত সিন্ধু । সিন্ধু নদ, সিন্ধু সাগর। আবার, নদী-মাত্রের নাম সিন্ধু । যেমন, আমরা গঙ্গানামের অপভ্রংশ গাং দ্বারা নদীমাত্ৰ বুঝি। অর্থাৎ নদী হইলেও সমুদ্র নাম পাইতে পারে । জলরাশি বেষ্টিত ভূখণ্ড, দ্বীপ ; আর যে ভূখণ্ড দ্বারা জলরাশিবেষ্টিত, সেও দ্বীপ। দ্বীপের অন্য নাম অন্তরীপ, যে স্থানে যাইতে জল পার হইতে হয় । চতুর্দিকে জলত না হক্টতেও পারে । অগাধ-জল জলাশয়ের নাম, -ত্বদ। বাংলায় বলি দহ । পুরাণে বহ, সরস ও সরোবরের নাম আছে । সরোবর, বৃহৎ সরস বা সরসী। সরোবরে শ্ৰোত থাকে, অর্থাৎ তাহাতে নদীর জল আসে, নদীর আকারে বহিয়াও যায়। কিন্তু, হ্রদে ও সাগরে নদী প্রবেশ করে, কিন্তু, নির্গত হয় না। অতএব বৃহৎ হ্রদ, সাগর। ঐ সকল প্রামীন সংজ্ঞা বিস্তৃত হইলে সপ্তদ্বীপ খুজিয়া পাগুরা যাইবে না । তথাপি জম্বুদ্বীপ ব্যতীত অপর ছয় দ্বীপের নদী, পর্বত, প্রভৃতির বতর্মান নাম নির্ণয় কঠিন । পৌরাণিকের প্রত্যেক দ্বীপেই সপ্ত পর্বত, সপ্ত নদী, দখিতেন । কিন্তু সকল দ্বীপে নববর্ষ পান নাই ; ব্ৰহ্মাণ্ড-পুরাণে ও বায়ু-পুরাণে এই ছয় দ্বীপের নাম এক্ট,– প্লক্ষ বা গোমেদ, শান্মল, কুশ, ক্রৌঞ্চ, শাক, পুষ্কর । মৎস্য-পুরাণে নাম এট,—শাক, কুশ, ক্রৌঞ্চ, শান্মল, গোমেদ, পুষ্কর । নামের ক্রমে যেমন প্রভেদ, দ্বীপের বিস্তারেও তেমন কিছু কিছু প্রভেদ আছে । মৎস-পুরাণে একমত লিখিত হইয়াছে, অঙ্গ পুরাণে অন্ত মত । অতএব দুই পুরাণ মিলাইয়া দেখিতে হইবে । মৎসা-পুরাণ দেখি । ১ । শাকদ্বীপ। এই দ্বীপ লবণ-সমুদ্রকে বেষ্টন করিয়াছে । ( জেনাবৃত সমুদ্রোহয়ং দ্বীপেন লবণোদধি: ) । এই দ্বীপের একদিকে লবণ-সাগর, অন্যদিকে ক্ষীরোদসাগর । শাকদ্বীপের সাতটি কুলাচলের মধ্যে দেব ঋষিগন্ধব-সমন্বিত মের-গিরি প্রবদিকে অবস্থিত। ইহার নাম উদয়াচল । এখানে মেধ হয়, চলিয়া যায়, বৃষ্টি হয় না। কিন্তু, ইহার পশ্চিম পার্শ্বে জলধারা হয়। সব পশ্চিমে সোমক নামে অস্তগিরি। শাকদ্বীপে বর্ণাশ্রম ধম নাই, সর্বদা জেতাযুগসম কাল বতমান । পাচটি দ্বীপেষ্ট এইরূপ । সে দেশে দণ্ডধর (রাজা ) নাই। সে দেশে চতুৰ্বণ আছে। খামবৰ্ণ লোৰু মধ্যস্থলে, বাস করে । শাকদ্বীপ মেরুর পশ্চিমে অবস্থিত মের কে এই দ্বীপের পূর্বসীমা ধরিয়াছেন। মৎস্য-পুরাণ [ বায়ুপুরাণ SAMAAASA SAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAAAS মেরর পশ্চিমের এক প্রত্যন্ত পর্বতকে উদয়াচল বলিয়া প্রভেদ রাখিয়াছেন । ] শাকদ্বীপের উত্তরে লবণ-সাগর, এটি বলকাষ হ্রদ ; দক্ষিণে ক্ষীর-সাগর, এটি আরাল হ্রদ। ইহাতে সীরদরিয়া নদী পড়িতেছে । ( সে দেশের ভাষায় "সীর' অর্থে নদী ; ফার্সী ‘দরিয়া’ অর্থে সাগর । ফাসী ধীর , স” ক্ষীর অর্থও হইতে পারে। ) আরাল হ্রদের নাম ক্ষীরোদ ছিল। এই হ্রদ বৃহৎ, ক্রমশঃ বুজিয়া যাইতেছে । ইহার জল ঈষৎ লোনা । নদীর জল ছুক্ষবৎ শ্বেতবর্ণ। বলকায হ্রদের জল লোনা । ইহা দীৰ্ঘে ৩০ •, প্রস্থে ৫০ মাইল । শাক, শক একই । শাকদ্বীপ হইতে ভারতে ব্রাহ্মণ অসিয়া শাকদ্বীপী ব্রাহ্মণ নামে পরিচিত হইয়াছেন । ইহঁারা সূর্যোপাসক ও জ্যোতিষী। এখান হইতে ক্ষত্ৰিয় আসিয়া ভারতে শক-ভূপতি হইয়াছিলেন । উদয়গিরির পূর্বপার্শ্ব শঙ্ক, শীতগ্রীষ্ম প্রখর। কিন্তু, পশ্চিম পার্শ্ব তেমন নয়। বৎসরে ১•১২ ইঞ্চি বর্ষণ হয় । অল্পস্বল্প ক্লষিকমও হয় । শাকবৃক্ষ আছে বলিয়া শাকদ্বীপ নাম, ইহা পৌরাণিক ব্যাখ্যা। বস্তুতঃ সে দেশে শাক সেগন গাছ জন্মিতে পারে না। এ দেশ দেবদার,র। শাকদ্বীপের বর্ণনা হইতে আরও দুইটি বিষয় জানিতেছি । ক । স্থধের উদয়াচল ও অস্তাচল, এই দুই নাম শাকদ্বীপের দুই পর্বতের । এই দুই পবতের মধ্যস্থিত দেশের লোক পূর্বস্থিত পবতের উপর হইতে সূর্যোদয় দেখে, পশ্চিমস্থিত পবতের উপর দিয়া সুধাস্ত দেখে ( ৩য় চিত্র ) । আমরা বলি, স্বয পাটে বসিয়াছেন, .পাট পবত। উদয়াচল পূব দক্ষিণে এবং অস্তাচল পশ্চিম দক্ষিণে আয়ত হওয়া চাই । কাশ্মীরে এমন দুই পবত থাকিতে পারে, কিন্তু পঞ্চাবে নাই । থ। শাকাদি কয়েক দ্বীপে ত্রেতাযুগের অবস্থা চলিতেছিল। এই ক্রেতাযুগ বতমান পাজির জেতা নয় । স্বায়ুস্তৃব মন্থর ত্রেতাযুগে প্রিয়ত্রত রাজার কাল। সে যে বহু প্রাচীন কাল। পৌরাণিকের বিশ্বাস, জেতাযুগে লোকের বাদবিসম্বাদ ছিল না । ২ । কুশদ্বীপ। কুশদ্বীপ দ্বারা ক্ষীরোদ পরিবেষ্টিত। ইহা শাকদ্বীপের দ্বিগণ। ইহা স্থতোদক সমুদ্রদ্বারা পরিবেষ্টিত । ইহার সপ্তপর্বতের মধ্যে যষ্ঠ পর্বতের নাম মহিষ অন্ত নাম হরি। এই পর্বতে জল-জাত অগ্নি বাস করে। একটি পর্বতে বিশল্যকরণী ও মৃতসঙ্গীবনী নায়ী মহৌষধি আছে । এই পর্বত অতিশয় দীর্ঘ। নাম স্রোণ ও পুষ্পবান । এই দ্বীপে কুশস্তম্ভ ( কুশের ঝাড় ) আছে । - এই দ্বীপের একদিকে ক্ষীরোদ সাগর, জগুদিকে