পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২৬ ভদ্র পারঙ্গ ভাষায় কথা বলিতে পারিভ । হুগলী বন্দরে অতি গরীব অবস্থার পৌছিয়া স্থানীয় মুঘল অর্থাৎ পারদিক বণিকদের নিকট হইতে মালপত্র লষ্টয়া, তাই বাড়ি বাড়ি ফিরি করিয়! জীবিকানির্ববাহ কfরত । এই করে নবাব সুজা পার জামাতা রুস্তমজঙ্গের সঙ্গিত পরিচিত হইয়া, মিষ্ট কথায় তাঙ্গার মনের উপর প্রভাব বিস্তার করিয়া, তাহার অধীনে চাকরি পাইল । যখন রুগুম-জঙ্গ ঢাকার শাসনকস্থা নিযুক্ত হন, তিনি মীর হবিবকে ভাঙ্গার নায়েব করিয়া সঙ্গে লইয়া যান। মীর হবিব হিসাবপত্র স্বল্পভাবে দেখিয়া মিতব্যয়িতা দ্বার এবং চুরি বন্ধ করিয়৷ সরকারী আয় অনেক বুদ্ধি করে, এবং ত্রিপুর রাজ্য আক্রমণ করিয়| বেশ ধনলাভ করে । রুস্তম-জঙ্গ পরে কটকের শাসনকৰ্ত্তা হষ্টয়া গেলে, মীর হবিব সেখানেও তাহার নায়েবের পদ পায়, এবং দক্ষতার সহিত শাসন চালাষ্টয়া, জমিদারদের বাধ্য রাথিয়া, রাজস্ব বাড়াইয়া অভ্যস্ত প্রভাবশালী হয়। রুস্তম-জঙ্গের পরাজয় ও পলায়নের পর মীর হবিব আলীবর্দীর অধীনে চাকরিতে প্রবেশ করে, কিন্তু তাকার প্রতি অস্তরে বিষম বিদ্বেষভাব পোষণ করিতে থাকে । বদ্ধমানের নিকট মারাঠাদের হাতে বন্দী হইব। মাত্র মীর হবিব পূৰ্ণ ইচ্ছা ও উৎসাহে ভাহাদের সঙ্গে যোগ দিল, এমন কি বঙ্গে তাহদের প্রধান মন্ত্রী ও কায্যকারক হইয় দাড়াইল । [ রিয়াজ ২৯৯-৩৪২ ] । মে মাসের প্রথমে যখন নবাব এ সৈন্তগণ কাটোয় পৌছিয়া wম লইতেছিলেন. তখন মীর হবিব সাত শত উৎকৃষ্ট ঘোড়ায় চড়া মারাঠা সৈন্য সঙ্গে লইয়া রাতারাতি দ্রুত ফুচ করিয়া, মুশীদাবাদের অপর পারে দাহ পাড়ায় পৌছিয়া, তথাকার বাজার পোড়াইয়া দিয়া, ভাগীরথী নদী পার হইয়া মুশীদাবাদ শহরে চুকিল । কেল্লার নিকট তাহার ভ্রাত। মীর শরিফের বাড়িতে হবিবেব স্ত্রীপরিবার এবং সম্পত্তি ছিল । হবিব তাহীদের লইয়া গেল । এই সময় আলীবর্দীর ভ্রাতা হাজী আহমদ শহুর-রক্ষায় অসমর্থ হইয়া ভয়ে কেল্লায় লুকাইলেন । কেহই মারাঠাদের বাধা দিতে বা সম্মুখে প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩৩৮ [ ৩১শ ভাগ, ১ম খণ্ড আসিতে সাহস পাইল না । শহরের চারিদিকে কোন দেয়াল বা পরিপা ছিল না মীর হবিব ফডেচাদ জগৎ শেঠের বাড়ি লুঠিয়া প্রায় তিন লক্ষ টাকা পাইল । অন্যান্য মহল্লায় ধনীদের বাড়ি লুঠ করিয়া মারাঠারা তিরতকোনায় ( লালবাগের ৪ মাইল উত্তর-পশ্চিমে, এবং গঙ্গার অপর পারে ) রাত্রে বিশ্রাম করিতে গেল । কিন্তু ইতিমধ্যে কাটোয়ায় আলীবর্দী খাঁ মারাঠা দলের মুশীদাবাদের দিকে রওনা হইবার সংবাদ পাইবা মাত্র রাভারাতি দ্রুতবেগে সেইদিকে অগ্রসর হইলেন, এবং শেযরাত্রে মানকরা ( বহরমপুর কান্টনমেন্ট হইতে ৪ মাইল দক্ষিণে ) পৌছিলেন, এবং প্রভাতে মুর্শদাবাদ প্রাসাদে ঢুকিলেন । র্তাহার আগমনের সংবাদ পাইবা মাত্র মারাঠারা ভিরতকোনো ও আশপাশের গ্রাম পোড়াইয়া দিয়া কাটোয়ায় শীঘ্ৰ ফিরিয়া গেল ( ৭ই মে ) । পৰ্ব্বদিনের লুঠের সময় ইংরাজ ফরাসী ও ডচ বণিকগণ কাসিমবাজারে নিজ নিজ কুঠী ছাড়িয়া যথাসম্ভব মালপত্র লষ্টয়া সরিয়া পড়িয়াছিল, কিন্তু নবাব প্রবল হইয়াছেন জানিয়া আবার ফিরিয়া আসিল । ( 8 ) ইতিমধ্যে গঙ্গার পশ্চিম পারের জেলাগুলিতে মারাঠা সৈন্য লুঠ করিবার জন্য ছড়াইয়া পড়িয়াছিল। তাহারা যে কিরূপে নানা নিষ্ঠুর অত্যাচার করিয়া টাকা আদায় করিত, স্ত্রীলোকদের দলবদ্ধভাবে ধৰ্ম্মনাশ করিত, ঘরবাড়ি পাড়াইত, তাহার হৃদয়বিদারক বর্ণনা সাহিত্য-পরিষৎ দ্বারা প্রকাশিত “মহারাষ্ট্র পুরাণে" আছে। এই বইটি পড়িলে কোন ভুক্তভোগীর রচনা বলিয়া বিশ্বাস হয় । আর একজন সেই সময়কার সাক্ষী, গুপ্তপাড়ানিবাসী কবি বাণেশ্বর বিদ্যালঙ্কার, তাহার “চিত্রচম্পূ”কাব্যে ব্রাহ্মণ পণ্ডিত, গর্ভবতী স্ত্রীলোক, আপোগও শিশু প্রভৃতি সকল শ্রেণীর দয়ার পাত্রের প্রতি মারাঠাদের হৃদয়হীন অত্যাচার কাহিনী লিখিয়া গিয়াছেন । ইংরাজ কুঠার কাগজপত্রেও বগীর হাঙ্গামার ফলে দেশ উৎস যাওয়া, বাণিজ্য বন্ধ, লোকের পলায়ন, এবং সৰ্ব্বত্ৰে ভয়ের সঞ্চারের অনেক উল্লেখ দেখা যায়। বৰ্দ্ধমানে প্রথম বৰ্গী আসিবার