পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] ঠিক তাহার বুড়োদাদা যেমন ছলিয়া দুলিয়া তেহাই দিয়া থাকেন তেমনি আবার তেহাই দেয় । এবারে গান শুনিয়া তাহার আর এক ফোট সন্দেহ রহিল না । চোঙের অধিবাসী সেই গায়ক ও বাদক-সম্প্রদায়কে দেখিতে ছেলের দল ঝুকিয় পড়িল, কিন্তু কলের ভিতরে হরসিত এমনি করিয়া দলগুদ্ধ পূরিয়া ফেলিয়াছে যে, কাহাকেও দেখিবার জো নাই । বুচি খুব কাছে দাড়াইয়াছিল, সরিয়া দূরে দাড়াইল । শঙ্কা হুইল—ঐ কলওয়াল কতলোককে ত পূরিয়াছে, যদি কাছে পাইয়া তাহাকেও পূরিয়া ফেলে—তখন ? কিন্তু টে পি বুচির চেয়ে দুবছরের বড়, বুদ্ধিও বেশী, সন্দেহ প্রকাশ করিয়া বগিল,--“বাক্স ত ঐটুকুন মোটে, বড় বড় মানুষ কি করে থাকে ?” বাক্সের ও মানুষের আয়তনের কারতম্য হিসাব করিলে মনে ঐ প্রকার সন্দেহের উদয় হইতে পারে বটে কিন্তু যখন স্পষ্ট মান্তষের গলা শোনা যাইতেছে তপন যেমন করিয়া এবং যত ঠাসাঠাসি করিয়াই হউক তাহারা ত আছে নিশ্চয় ! বাড়ধ্যে ঠিক সামনে বসিয়াছেন । গান-বাজনার আসরে এই স্থানটি তাহার নিত্যকালের । হরিপুরে কত মজলিস হইয়া গিয়াছে, কিন্তু এমন ওস্তাদ ত একজন আসিল না যে, তিনকড়ি বাড়ুষ্যের পায়ের ধূলা না লইয়া চলিয়া যাইতে পারিল । আগাগোড়া সভাসদ্ধ লোক বিমুগ্ধ হইয়া শুনিতেছে, কেবল রাম মিত্তির বলিলেন,— “গলায় মোটে দানা নেই, দেখছ বাড়য্যে ? যতই তোক টিনের চোঙা আর সেগুনকাঠের বাক্স তো । কে একজন নেপথ্যে মন্তব্য করিল,—“সক্কাল বেলা এই খরচাস্ত, মিত্তির মশায়ের গায়ের জাল কিছুতে মরছে नां ।” রাম মিত্তিরের সঙ্গে বাড়য্যের মিতালি সেই নকুড় গুরুর কাছে পডিবার কাল হইতে । কলের গানের জন্য সকলে ধরিয়া পড়িয় রাম মিত্তিরের একট। টাকা খরচ করাইয়া দিল, সেজন্ত মন খারাপ আছে নিশ্চয় । কিন্তু বাড়য্যের কেমন মনে হইল রাম তাহাকে খোসামোদ করিয়াই গানের নিন্দ করিতেছে—টাকার শোকে নহে । পিরোনাথ বলিল,—“ষাই বলুন কাক, এই নাপ তের পো মস্কোরতন্তোর জানে ঠিকৃ—ডাকিনী-সিদ্ধ। আমাদের বাড়ুষ্যে মশায় গান বাজনায় চুল পাকালেন, কত গানই গেয়ে থাকেন, এমন স্বরলয় শুনেছেন কখনও ? আসলে, ও মস্তোরবলে অঙ্গরী কিল্লরী সব ধ’রে এনে তাদের দিয়ে গান গাওয়াচ্ছে। তাদের গলার কাছে দাড়াবেন বাড়ুৰ্য্যে মশায় ? বলুন না।” গানের পর গান চলিল। একটা গানের এক জায়গায় বাঘ ভারী তানের প্যাচ মারিতেছিল। অশ্বিনী শীল অকস্মাৎ উচ্ছ্বাস ভরে বলিয়া উঠিল,—“কি কল বানায়েছে সাহেব কোম্পানী । দেবতা—দেবতা—বষ্মা বিষ্ণুর চেয়ে ওরা কম কিসে? বঁাড় যে মশায়, আপনার সেতারের টুং টাং আর রামপ্রসাদীগুলো এবার ছাডুন—” কলের বলবান রাগিণীর তলায় অশ্বিনীর গলা চাপ পড়িল বাড়য্যে তাহার সদ্ধপদেশ শুনিতে পাইলেন না । কিন্তু বাড়য্যের আর আছে কি ঐ সেকারের টুং টাং ছাড়া ? চক্‌মিলানো পৈতৃক প্রকাগু বাড়ীটা খ খ করে— চামচিকার বসতি। সেখানে থাকিবরি লোক তিনটি— মণ্ট, তার দিদিম, এবং তিনকড়ি বাড়য্যে স্বয়ং। নারাণীও ছিল—সেই সকলের শেষ । সাত বছর আগে মণ্ট কে ছমাসের এভঢ়কু রাগিয়া সে ৪ ফাকি দিয়া চলিয়া গেল । ছয় ছেলেৰ মা দাড়য্যে-গিল্পী একে একে সব কটীকে বিসর্জন দিয়া এষ্ট শেষের ধন মরামায়ের বুকের উপর আছাড় খাইয়া পড়িলেন। পাড়ার সকলে আসিয়া আর সাস্থন দিবার কথা খুজিয়া পায় না। কিন্তু বাড়য্যের চোপে জল নাই । রাম মিত্তির কাদেn-কঁাদে গলায় কহিলেন, “বুক বাধ বাছুধ্যে, ভগবানের লীলা ।” তখন লাডুয্যে স্ত্রীকে দেপাষ্টয়া বলিলেন—“ঐ যে অবুঝ মেয়েমানুষ উঠোনের ধূলোয় গড়াগড়ি যাচ্ছে, একে গিয়ে তোমরা প্ৰবোধ দাও—আমার কাছে আসতে হবে না ভাই ।” শুধু তিনি তাকের উপর হইতে সেতারটি নামাইয় দিতে বলিলেন। এতকাল বাদে কি-না অশ্বিনী শীল তাঙ্গকে সেতার বাজনা ছাড়িয়া দিতে বলিল । এক একটা গান হষ্টয়া গেলে হরসিত কাটা বদলাষ্টয়া আগের কাটা ফেলিয়া দিতেছিল। তাই কুড়াইতে ছেলেমহলে কাড়াকড়ি ! একবার আর একটু হইলে কলের উপর গিয়া পড়িত, হরসিত তাড়া দিয়া উঠিল । বাড়য্যে মন্ট কে ডাক দিলেন—“তুষ্ট দাছ, আমার কাছে আয়— এসে ঠাণ্ড হয়ে বোস ত—” নারাণীর সেই ছ'মাসের মণ্ট, এপন কত বড় হইয়াছে। কিন্তু মন্ট, আসিল না, উঙ্গর অনেক কাজ ৷ কাটা কুড়ানো ত আছেই, গানও লাগিতেছে বড় ভাল, তা ছাড়া চোঙের ভিতর বসিয়া যে গায়ক গাঠিতেছে তাঙ্গার মুৰ্বিদর্শন সম্বন্ধে একেবারে নিরাশ হইবার কারণ এখনও ঘটে নাই । ধখন ভাল করিয়া বুলি ফুটে নাই, বাড়ধ্যে তখন হইতেই মন্ট কে তবলার বোল শিখাইতে আরম্ভ করিয়াছিলেন। রোজ সন্ধ্যায় রাম মিত্তির প্রভৃতি দু’চারজন বঁাডুয্যে-বাড়ি • গিয়া বসেন । শ্রাবণ মাসে বুষ্টিবাদলা এক একদিন এমন চাপিয়া পড়ে ষে, কেহ বাড়ির, বাহির হইতে পারে না। ন পারুকু, তাহাতে এমন কিছু অন্ধবিধা ঘটে না । সেদিন মন্টর সেতারশিক্ষা ృలరి