পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

وين و ج) প্রবাসী—শ্রাবণ, ১৩৩৮ [ ৩১শ ভাগ, ১ম খণ্ড সকল প্রকারের নমুনাই ইহাতে আছে। আমার বিশ্বাস যে-সকল ফটোগ্রাফার এ-বিষয়টির কথা কখন শ্রবণ করেন নাই, তাহার এই ছবিগুলি দেখিয়া আমার কথায় আস্থাবান হইবেন । এই ছবিগুলি আমার নিজের গৃহীত নহে, আমার পুত্র ক্রমান মনোরঞ্জন শেঠ এগুলি তুলিয়া দিয়াছে ॥৭ + এই প্রবন্ধ রচনায় ঐযুক্ত গুরুদাস গুড়ের নিকট হইতে কোন কোন বিষয়ে সাহায্য পাইয়াছি সে জগু অনেক সুবিধা হইয়াছে । দেড় টাকা শ্ৰীসত্যভূষণ সেন স্থবল ছিল মহা সামাজিক লোক। আত্মীয় বন্ধুদের বাড়ী যাতায়াত, সকলের সহিত লৌকিকতা, আদর-আপ্যায়ন, এ-সকল বিষয়ে তাহার উৎসাহ ছিল অক্লাস্তু । ইহাতে তাহার সময়ের অপব্যয় হইত যথেষ্ট, সঙ্গে সঙ্গে অর্থব্যয়ও হইত অল্পস্বল্প । এইখানেই পত্নীর সহিত তাহার বিরোধ। সুপর্ণাও লোক মন ছিল না । সকলের সহিত মেলামেশা করিবার অভ্যাস তাহারও ছিল, কিন্তু অযথা অর্থব্যয়ে তাহার আপত্তিও ছিল স্পষ্ট । স্ববলের স্বাভাবিক মতিগডি স্থপর্ণায় সংসর্গ ও চেষ্টা সত্ত্বেও বিশেষ পরিবর্তিত হয় নাই । সুতরাং মাসের মধ্যে দুই-এক দিন পতি-পত্নীতে একটু মতান্তর, মনান্তরও প্রায় স্বাভাবিকই হইয়া উঠিয়াছিল । সেদিন এক বন্ধুর বাড়ীতে সন্ত্রীক স্ববন্ধের নিমন্ত্রণ ছিল । নিমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করিবার কোন উপায় ছিল না, কাজেই অন্ততঃ গাড়ীভাড়া বাবদে কিছু অর্থব্যয় জবশুম্ভাবী। পরামর্শে স্থির হুইল যে, মুবলের নাটকের বই কেনা বাবদে মাসিক বরাদ্ধ টাকা হইতে এই খরচট। সকুলান করিতে হইবে । স্ববলের মনে মনে হাসি পাইল বটে, কিন্তু সে পত্নীর সম্মুখে একটু বিষণ্ণ ও বিরক্ত মুখ করিতে বাধ্য হইল । স্বপর্ণ শহরে গাড়ীর বদলে ট্রামগাড়ীতে যাতায়াত অভ্যাস করিয়া লইয়াছে। প্রথম প্রথম স্থবল একটু ক্ষীণ আপত্তি উখাপন করিয়াছিল, কিন্তু স্থপর্ণার নিকট তাহ জামল পায় নাই। স্থপর্ণার এরূপ বেপরোয়াভাবে টাম গাড়ীতে যাতায়াতে তাহার বন্ধু-মহিলারা মনে মনে সকলেই তাহাকে বাহাদুর বলিয়া স্বীকার করিত বটে, কিন্তু সকলে মিলিয়া আলোচনা করিবার সময় মুখে তাহাকে নিন্দ করিতে অবঙ্গ কিছু মাত্র ক্রটি করিত না । বন্ধুর বাড়ীতে সেদিন একটু বিলম্ব হইয় পড়িল, ফলে ট্রামগাড়ীর সময়ও উত্তীর্ণ গুইয়া গেল । অগতা বাড়ী ফিরিবার জন্য গাড়ী ডাকিতে হইল। স্ববলের দুর্ভাগ্যক্রমে তখন আবার একথান। প্রথম শ্রেণীর গাড়া ছাড়৷ আর কোন গাড়ী পাওয়া গেল না । যথাকালে আবোল্পী দুইটিকে লইয়া গাড়ী রওনা হইল । অন্ধকার রাত্রি, বাহিরে টিপ টপ করিয়া বৃষ্টি পড়িতেছে, শঙ্গর অনেকটা নিস্তব্ধ হইয়া আসিতেছে । গাড়ীর ভিতরে নিস্তব্ধতা আরও গভীর। সে নিস্তব্ধতার অর্থ বুঝিতে স্ববলের একটুও বিলম্ব হুইল না । বেচারী নিরুপায় । নিরুপায় হইলেণ্ড একটু চেষ্টা করিয়া দেখিবার মত সাহস সুবলের ছিল । সে গাড়ীর অন্ধকারের মধ্যে আস্তে আস্তে সুপর্ণার হাতথানা কাছে টানিয়া লইল, তারপরে জিজ্ঞাসা করিল— ‘আজকার দিনট কেমন কাটল ?” অন্ধকারের মধ্যেই জবাব আসিল—“দিন তো কোন কালেই কেটে গেছে । রাতটাও তো কাটতে চলল। মুবল বুদ্ধি করিয়া হাত • খানা ছাড়িয়া দিল । একটু পরে প্রশ্ন হইল—‘ফাট ক্লাস গাড়ী ছাড়া কি শহরে আর গাড়ী ছিল না ? —সময় মত হ’লে পাওয়া মেত বই কি ।