১ম সংখ্যা ] - - - - - --- --- -----.-....م. - - -.... مسمم. ه-يم তাহা হইলেই বুড়ী সারাটা দিন তেতেপুড়ে এল, এখন তোরা আর তার পেছনে লাগিস্নে । কেন ইস্কুলে যাস কি করতে, মাষ্টারে পড়া বলে দেয় না ?” ইস্কুলের মাষ্টারের বেত এড়াইবার জন্যই যে ঘরে পড়া বলিয়া দেওয়া দরকার, তাহা বুড়ীকে কে বুঝাইবে ? রাধুরও শেলাই দেখাইবার, পড়া বলিয়া দিবার কেহ ছিল না। তাহার চেয়েও মুস্কিল ছিল এই যে, দিদিমা . আধুনিক সাজ-সজ্জা সম্বন্ধে একেবারে অজ্ঞ। তাহাকে যেভাবে স্কুলে যাইতে হইত, তাহাতে রাধু বেচারীর মান থাকিত না । কিন্তু দিদিমাকে বোঝান তাহার সাধ্য ছিল না । বেশী কিছু বলিলে, চড়চাপড় ত খাইতে হক্টতই, গালাগালিরও শেষ থাকিত না । , “বিবিয়ানী শিখেছেন, নিত্যি নূতন সাজ পোষাক চাই । :নবাবের বেটি, বাপ ত ঝাটা মেরেও জিগ গেয করে না,” ইত্যাদি শ্রুতিমধুর বাক্যে রাধু বেচারীর দুই কান বোঝাই হইয়া যাইভ। অগত্যা চোখের জল মুছিতে মুছিতে, ময়লা সেমিজ এবং ছেড়া ডুরে শাড়ী পরিয়াই তাহাকে স্কুলে যাইতে হইত। s মামী আসার পর হইতে তাহারা বাচিয়া গিয়াছে। কালু এখন হরদম বায়োস্কোপ দেখে, মাঝে মাঝে মাম মামার সঙ্গে যায়, একলা যাইবার পয়সাও মার্মার কাছে বেশ পাওয়া যায়। পড়া বলিয়া দিবার লোকেরও অভাব নাই। মামী নিজে ম্যাটিক ক্লাস পর্য্যস্ত পড়িয়াছে, কালুর ফিফথ ক্লাসের পড়া সে দিব্য বলিয়া দেয়। এবার বাৎসরিক পরীক্ষায় কালু প্রাইজ-স্বদ্ধ পাইয়াছে, রাধুও বাচিয়াছে। তাহার চক্ষুশূল, ছেড়া শাড়ী এবং ময়ল সেমিজ দুটা দূর হইয়াছে, সে এখন রকম-বেরকমের ফ্রক, জুতা মোজা পরিয়া স্কুলে যায় । মামী বলাতে মামা সব কিনিয়া দিয়াছে, ফ্রক ত প্রায় সবগুলাই মামী স্বন্দর কাজ করিয়া শেলাই করিয়া দিয়াছে। দিদিমা প্রথম প্রথম একটু-আধটু বকবিকি করিতেন, এখন আর কিছুই বলেন না। তরুর কিন্তু প্রাণ অস্থির হইয়া উঠিতেছিল। প্রায়ই বলিয়া সে প্রতিকারের উপায় ভাবিত, কিন্তু কিছুই ঠিক
- --------------
বিষে বিষক্ষয় তাড়া করিয়া আসিবে, “সৰ্ব, সবু, 8ማ.
*
করিয়া উঠিতে পারিত না । বাপের বাড়ি ত গায়ের উপর, স্বতরাং সেখানে যাইবার জন্ত আবদার করিয়াও কোনো লাভ নাই। আত্মীয়-স্বজন কেহই এমন বিদেশবাসী নাই, যাহার কাছে পলাইয়া যাওয়া যায় । আর ইহারা যাইতেই বা দিবেন কেন ? তরুর বড় দুঃখ হুইত, লেখাপড়া সে আরও থানিকদূর করিল না কেন ? সে যতটা শিথিয়াছে, তাহার উপর নির্ভর করিয়া স্বাধীনভাবে দাড়ান যায় না। আশ্রয়ের জন্ত স্বামীর উপর নির্ভর না করিয়া তাহার উপায় নাই। তাছার সন্তানাদি কিছুই হয় নাই যে তাঙ্গাদের লইয়াও একটু অশাস্তি ভুলিয়া থাকিবে । স্বামী মত করিলে সে বেশ পড়িয়া পরীক্ষা দিতে পারে, কিন্তু ইহাদের কাছে সে আশা করা বৃথা । স্বামীকে যদি বা সে বলিয়া কহিয়া রাজা করাষ্টতে পারে, শাশুড়া কোনোদিনও মত করিবেন না। কাজেই এই ভাবে পচিয়া মরা ভিন্ন তাহার উপায় নাই । অrজও নীচে রান্নাঘরে গিয়া সে দুষ্ট একবার আঁচল দিয়া চোখ মুছিল, তাহার পর নিপুণহস্তে স্বামীর চ, জলপাবার সব গুছাইয়া একটা ট্রে-তে করিয়া উপরে লইয়া আসিল । রমাপতি তখন কালুকে অঙ্ক বলিয়া দিতেছে, স্ত্রীকে • দেখিয়া বfলল, “এত যে বিদ্যের বড়াই কর, ছেলেটাকে একটু পড় ব’লে দিতে পার না ?” তরু ঠন্ করিয়া ট্রে-টা টেবিলের উপর নামাষ্টয়! রাখিয়া বলিল, “আমি ত আর একসঙ্গে দু-জায়গায় থাকৃতে পারি না ? বিদো জানি ব’লে ভেলকি ভ জানি না ?” বলিতে বলিতে তাহার গলা বন্ধ হষ্টয়া আসিল, চোখেও জল আসিয়া পড়িল । রমাপতি একটু নরম হইয়া গেল। বাস্তবিক তরুকে কষ্ট দিবার তাহার কোনো ইচ্ছা ছিল না। সে যদি তাহার প্রভুত্বটা স্বীকার করিয়া লয় এবং মায়ের কথামত, চলে, তাহা হইলে কোনো গোল থাকে না । কিন্তু “সোজা কথাটা তরুকে বুঝাইবে কে ? চেয়ার টানিয়া বসিয়া, চায়ের পেয়ালা তুলিয়া লইয় রমাপতি বলিল," চোখে জল এসে গেল? যাই।