পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

や>8 প্রবাসী—ভাদ্র, ১৩৩৮ [ ৩১শ ভাগ, ১ম খণ্ড AMAMAeeAMMAMA AM MMMMAMMMMMMS যায় যুদ্ধ থামিবার পর। মৃত্যুর পক্ষপাত নাই—শত্ৰুমিত্র নিকিবচারে তার ছায়া বিস্তারিত । ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ডের শেষে রক্তমাখা অগণ্য মৃতদেহ ঘাসের উপর আর পাথরের মাঝে দীর্ঘকাল পড়িয়া থাকে । নানশানে নিহত সৈন্ত দেখিয়া আতঙ্কে ও বিতৃষ্ণায় চোখ না ঢাকিয়া পারি নাই। এখানকার দৃপ্তও তেমনি বীভৎস, তবুও সেবারের মত জাতকাইয়া উঠিলাম না। কোনো কোনো সৈনিকের মুখ ও মাথা চূৰ্ণ হইয়া গেছে, মস্তিষ্কের সঙ্গে ধূলামাটির মাখামাখি । কাহারও বা নাড়ি ভূড়ি ছিড়িয়া বার হইয়াছে, তা থেকে রক্ত ঝরিতেছে । নানশানে শত্রুর মৃতদেহ দেখিয়া তাদের জন্য মায়া হইয়াছিল, তাদের প্রতি সহানুভূতি জাগিয়াছিল, কিন্তু এখানে তাদের ঘৃণা করিতে লাগিলাম। কেন, তাদের কি দোষ । তারাও কি যোদ্ধা নয়, তারাও কি কৰ্ত্তব্য করিতে গিয়া মরে নাই ? তাদের সঙ্গে কঠিন যুদ্ধের ফলে আমাদের এতগুলি সৈনিকের প্রাণ নষ্ট হওয়ায় আমাদের মনে শক্রর প্রতি এই ঘৃণার সঞ্চার । কেন তার প্রাণপণে বাধা দিল, কেন সহজে হার মানিল না ? কেন তারা খাতের মধ্যে নিরাপদে দাড়াইয় গৰ্ত্তের ভিতর দিয়া বন্দুকের নল বাহির করিয়া আমাদের সৈনিকদিগকে হত্যা করিল ? যুদ্ধের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা স্বাহাদের আছে, তাহার সাহসী ও দুৰ্জ্জয় শত্রুর মৃতদেহ দর্শনে এই ঘৃণা ও ক্রোধের উৎপত্তি অক্লেশে বুঝিতে পারিবে, যদিও এ মনোভাবের মূলে কোনো যুক্তি নাই । একটি খাতের মধ্যে দেখা গেল এক ক্লশ সৈনিক মরিয়া পড়িয়া আছে । তার মাথায় ব্যাণ্ডেজ বাধা । সম্ভবত প্রথম আঘাতের পরও সে সাহসের সঙ্গে লড়িয়াছিল, শেষে আমাদের দ্বিতীয় গুলি তার প্রাণ সংহার করিয়াছে। যে-সব সাহসী রুশ যোদ্ধা খাতের ভিতর থেকে ছুটিয়া বার হইয়াছিল, নিশ্চয় তাদেরই মৃতদেহ ওই বক্ষঃপ্রমাণ প্রাকারের পাশে ছড়াইয়া পড়িয়া আছে । আমরা ছড়মুড় করিয়া গিয়া পড়াতে ইহারাই খাতের বাহিরে আসিয়া জামাদের সঙ্গে কিরীচ ও ঘুসি দিয়া লড়িয়াছিল। ইছাদের কারও কারও বুকের মধ্যে স্ত্রী পুত্রের রক্তমাখা ছবি পাওয়া যায়। যুদ্ধ শেষ হুইবার পরই আমার ভৃত্য রুশেদের একটি ঝুলি (haversack) লইয়া উপস্থিত । তার ভিতর থেকে রকমারি জিনিষ বার হইল-মায় এক স্বট চীনা পোষাক ! সেটি যেমন আমাদের বিস্ময় উদ্রেক করিল তেমনি তার সাহায্যে একটা হদিসও মিলিল । রুশের সন্ধানী দূতেরা চীনা সাজিয়া আমাদের খোজখবর করিতে আসিত । এই যুদ্ধে আমরা কতকগুলি অকেজো ‘মেশিন-গান’ দখল করি । এই যন্ত্রকে আমরা সব চেয়ে বেশি ভয় করিতাম। মস্ত এক পান লোহার পাত ঢালের কাজ করে, তার মাঝ দিয়া লক্ষ্য স্থির করা হয় । উচু দিকে, নীচু দিকে, ডাইনে বায়ে অস্ত্র চলাফেরা করিবার সময়ও ঘোড়া টানা চলে। মিনিটে ছ’শ’র বেশি "বুলেট’ স্বতশ্চালিতভাবে নিঃসারিত হয়, যেন একটা দীর্ঘ অথণ্ড ‘বুলেটের শিক কামানের মুখ নিক্ষেপ করিতে থাকে । ‘হোস’ বা ক্যাম্বিসের নল দিয়া যেমন করিয়া রাস্তায় জল ছিটানো হয়, ইহা দ্বার তেমনি করিয়া "বুলেট” ছটানো চলিতে পারে । চালকের ইচ্ছামত ইহা অল্প বা বেশি জায়গা ব্যাপিয়া নিকটে বা দূরে গুলি চালাইতে সক্ষম । কেহ এই ভীষণ মারণাস্ত্রের লক্ষ্যস্থল হইলে বিদ্যুদ্বেগে তিন চারিটি গুলি তার দেহের একই জায়গা ভেদ করিয়া মস্ত আঘাতের স্বষ্টি করিতে পারে। বন্দুকে যেমন "বুলেট ব্যবহৃত হয় এ গুলিও তত বড়। একটি লম্বা ক্যাম্বিসের 'বেন্টে” এমনি অনেক গুলি পরানো থাকে, সেই ‘বেণ্ট’ ‘মেশিন গানের কামরায় (chamber) ভরা হয়-বায়স্কোপের ফিল্মের মত ঐ ‘বেস্ট চালিত হয় । কাছ থেকে শব্দটা হয় অতি দ্রুত ট্যাপ, ট্যাপ, ট্যাপ, কিন্তু দূর থেকে শুনিলে মনে হয় যেন স্তন্ধ নিঝুম নিশীথ রাতে কলের তাত চলিতেছে । শব্দটা ভয়ানক— শুনিলে গায়ে কাটা দেয় । রুশের এই যন্ত্র চালনায় বিশেষ পটু ৷ যতক্ষণ না আমাদের সৈনিকেরা খুব কাছে আসে ততক্ষণ তার চুপ করিয়া থাকে, তারপর যেই আমরা সোল্লাসে