৫ম সংখ্যা ৷ পোর্ট-আর্থারের ক্ষুধা శ్రీడిత ডাক্তার জিজ্ঞাসা করিল, তুমি কি আহত ? নয়, আপনাপন পরিমিত খাদ্যেরও মহামূল্য জলের ভাগও “কোমরের কাছে একটু—” আহতকে দিতে হয়, যথাসাধ্য সাবধানে তাদের বহন ডাক্তার যুদ্ধের ফল জানিতে উংস্থৰ । বলিলেন, “তুমি অনেক শক্ৰ মেরেছ নিশ্চয় ? জখম হ’ল কাদের দিকে বেশি ?” লোকটি চাপা গলায় বলিল, “এবারও জাপানের দিকেই বেশি ।” তারপর ভাক্তার তার কোমরের কাছে "সামান্ত আঘাত’ পরীক্ষা করিতে গিয়া চমকিয়া উঠিল। ডান দিকের উরুদেশের মাংস গোলার ঘায়ে বেমালুম অদৃশু হইয়াছে। যুদ্ধে বীরত্ব দেখাইয়াছে, কৰ্ত্তব্যে ক্রটি হয় নাই-ইহারই গৌরবে সে অস্থির। জানেই না যে ফোট ফোটা করিয়া তার প্রাণের শ্রোতেই ভাটা পড়িয়া আসিতেছে । মহা উৎসাহে আনন্দে সে যুদ্ধের গল্প করিয়া চলিল। “বেশ । হয়ে গেছে !” ডাক্তারের কথায় লোকটি দাড়াইয়। উঠিল, কিন্তু এক, পা-ও চলিতে পারিল না । লড়াইয়ের উত্তেজনায় এমন অবস্থায়ও লোকে হাটিতে বা দৌড়িতে পারে, কিন্তু তার পর স্বায়ুগুলা একবার ঢিলা হইয়া গেলে হঠাৎ যন্ত্রণায় . একেবারে কাবু হইয়া পড়ে। যুদ্ধ যখন চলিতে থাকে তখন ইতস্তত 'রেড ক্রশ’ নিশান যুদ্ধক্ষেত্রের আহতদিগকে আহবান করে। যে সব বীর যুদ্ধে মরিয়াছে, তারা এই সেবাসত্তেঘর কোনো সাহায্য পায় না, সমস্ত স্থবিধাই ভোগ করে আহতের, তাই কখনও কখনও তাদের মনে হয়, নিহতের কাছ থেকে যেন কিছু চুরি করিতেছে। যুদ্ধ স্বরু হইবার সঙ্গে লজেই ডুলি বাহকের ভুলি কাধে লইয়া যুদ্ধক্ষেত্রে বাহির হইয় পড়ে, ঘুরিয়া ঘুরিয়া আহতকে তুলিয়া তারা প্রাথমিক শুশ্রুয-শিবিরে লইয়া যায়। এই সব বাহকদেরও আসল যোদ্ধার মত নিভীক হওয়া চাই । গোলাগুলি তলোয়ার উপেক্ষ করিয়া আহতকে খুজিয়া বার করিয়া তাহাকে নিরাপদ স্থানে লইয়া যাইতে হয় । এই বিপদলস্কুল সেবার ভার তাদেরই উপর গুস্ত আছে। শুধু তাই এবার যেতে পার । ব্যাণ্ডেজ করা করিতে হয় এবং স্নেহে তাদের সাত্বনা দিতে হয় । দেশের হাসপাতালে ষে সব পীড়িত ও আহত সেনাকে ফেরত পাঠানো হয়, তাদের পোষাক সাদা, তারা ভাক্তার ও সেবিকাজের সঙ্গেহ সেবা শুশ্ৰুষা পাইয়া থাকে । কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্রের হাসপাতালে ব্যাপার অন্তরকম । সেখানে গ্রীষ্মকালে হতভাগ্য আহত সেনাকে ঝাক ঝাক মাছি আসিয়া আক্রমণ করে, তাদের নাকে মুখে পোকা পড়ে, কারও কারও হাত অকেজো হইয় পড়ায় সেগুলোকে তাড়াইতেও পারে না । ইচ্ছা থাকিলেও হাসপাতালের আরদালি আর কতটুকু সাহায্য করিতে পারে —একশো আহতের পিছনে একজনমাত্র আরদালি । দিনের ৰেলা প্রখর রৌদ্রে, রাত্রে বৃষ্টিতে বা হিমে তারা খোলা পড়িয়া থাকে। কখনও কখনও দীর্ঘকাল এমনিভাবে পড়িয়া থাকিয়৷ তাদের অবস্থা অকথ্য নোংরা হইয়া ওঠে, তখন ক্ষতের পরিচষ্যা করিবার আগে ঝরণার জলে ডুবাইয়া বুরুশ দিয়া ঘসিয়া ঘসিয়া তাদের দেহু সাফ করিতে হয়। * >b» অবিরাম চলা প্রকৃতি তাইপোশানের কেল্লাগুলোকে প্রায় অজেয় করিয়া রাখিয়াছিল, তা-ও যখন জাপানীর দখলে আসিল তখনো রুশের দমিয়া গেল না । কারণ তাইপোশানকে ঘিরিয়া তাদের আসল আত্মরক্ষার আয়োজন এখনও অব্যাহত আছে । ছুই তিনটা পরাজয়ে এমন কি আসে যায় ? এবার তার কাস্তাশান পাহাড়ে হটিয়া গিয়া সেখানে আক্রমণ প্রতিরোধের নূতন ব্যবস্থায় মন দিল— সেখানে তৃতীয়বার দাড়াইবার চেষ্টা হইবে । আমাদের একদিনের বিলম্বে উহাদের একদিনের সুবিধা । তাই দীর্ঘকাল যুদ্ধের পর শ্রাস্ত দেহের বিশ্রামের অবসর হইল না ; আমরা শক্রর পিছু পিছু অবিরাম ধাওয়া করিয়া চলিলাম বস্তাম্রোতের মত । উদ্দেশু, তাদের আত্মরক্ষার আয়োজন সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই তাহাদিগকে তাড়াইয়া প্রধান কেল্লায় ঠেলিয়া তোলা ।
পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৭৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
![](http://upload.wikimedia.org/wikisource/bn/thumb/c/cd/%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%80_%28%E0%A6%8F%E0%A6%95%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%82%E0%A6%B6_%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%97%2C_%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A5%E0%A6%AE_%E0%A6%96%E0%A6%A3%E0%A7%8D%E0%A6%A1%29.djvu/page674-1024px-%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%80_%28%E0%A6%8F%E0%A6%95%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%82%E0%A6%B6_%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%97%2C_%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A5%E0%A6%AE_%E0%A6%96%E0%A6%A3%E0%A7%8D%E0%A6%A1%29.djvu.jpg)