পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

QoS b নিবারণ বহুদশী ব্যক্তি, অপরে যে প্রকার ভাবুক, নটবরের জন্য র্তাহার দুশ্চিন্তা হইল না । বলিলেন— রোসো, এইবারে ঠিক—আর একটা দিন মোটে—কাল স্বধীর বাড়ি আসবে, কাল আর নয়, পরশু সকালের দিকে এসে একবার—পাই পয়সাটি অবধি হিসেব করে নিয়ে ষেও, নাও—কলকেটা ধর—বলিয়া হকা হইতে নটবরের হাতে কলিকা নামাইয়া দিয়া আবার স্বরু করিলেনশোনো নি নটবর, বল কি—শোনে নি, কানে তুলো দিয়ে থাক না কি ? আমার স্বধীরের মস্ত বড় চাকরী হয়েছে, দেড় শো টাকা মাইনে— কিঞ্চিৎ বাড়াইয়া বলা নিবারণের অভ্যাস, এ গ্রামে সকলেই ইহা জানে এ পাওনাদার এবং আত্মীয়স্বজনে বহুবার নিবারণের মুখে শুনিয়াছে—চাকরি ঠিক হয়ে গেছে, এখন সাহেব বিলেত থেকে পৌছতে যা দেরি । এবারে জার ভূয়ো নয়, আসছে মাসের পয়ল থেকে নিশ্চয়— । কিন্তু শেষ পর্যাস্ত সাহেব কখনও বিলাত্ত হক্টতে আসিয় পৌছে নাই এবং মাসেব পর মাস অনেক পহেলাই কালসমুদ্রে তলাইয়া গিয়াছে । সুধীরের চাকরির কথা তাই লোকে বড বিশ্বাস করে না । তবে এবারের কথা স্বতন্ত্র ! দোকানে বসিয়। হাপর টানিতে টানিতে নটবর ৪ যেন কাহার মূপে শুনিয়াছে, সুধারের ভারী কপাল-জোর, ভাল চাকরি পাইয়াছে । এখন ঐ দেড় শো টাকার কথা যদি বাদ-সাদ দিয়া অস্থত: সভ্যকার পচিশ টাকাতেও আসিয়া দাড়ায়, তবু নটববের তিন আনা আদায় হইবার উপায় হুইয়াছে। সে পুলকিত ङ्झेल । নিবারণ পুত্ৰগৰ্ব্বে স্ফীত হইয়া বলিতে লাগিলেন— সেদিন দাকোপার পাচ ঘোষের সঙ্গে দেখা—পিসি আর বেীকে নিয়ে কালীঘাট গিয়েছিল । সুধীর দেখতে পেয়ে এই টানাটানি—বাসায় না নিয়ে ছাড়লই না । পাচ বলে, দাদা, কর কি – মস্ত তিনমহল বাড়ি ভাড়া করেছে, ঝি-চাকর যে কতগুলো গুণে ঠিক করতে পারলাম না । মাইনে দেড় শো, আর উপরি—সকালে আপিসে যায় পালি পকেটে, সম্বোবেলা দু’পকেট যেন ছিড়ে পড়ে। টাকার বোঝা নিয়ে হেঁটে আসতে পারবে প্রবাসী—ভাদে, ১৩৩৮ [ ৩১শ ভাগ, ১ম খণ্ড কেন, গাড়ী করে ফিরতে হয়। দেখা হ’লে একবার পাচু ঘোষকে জিজ্ঞাসা করে দেখে। । নটবরের গা শিবু শির করিয়া উঠিল—এই সেদিনের স্বধীর । তাহার দোকামের সামনে দিয়া খালি গায়ে পালি পায়ে জেলেপাড়া হইতে মাছ লইয়া আসিত । বলিল—তা বেশ-বডড ভাল কথা, আর আপনার দুঃখ কি, চৌধুরী মশাই, রাজ্যেশ্বর ছেলে— . নিবারণ বিনয় প্রকাশ করিয়া বলিলেন—তোমরা পাচ জনে ভাল বললেই ভাল। পাচ যা বললে – বুঝলে— শুনে তাক লেগে যায় — পেত্যয় হামু না । রাজরাজড়ার কণগুই বটে। শুনেছ বোধ হয় এবার আমরা বাড়িসুদ্ধ কলকেতায় চলে যাচ্ছি, সুধীর এসে সেই সব ঠিক করবে-— নিবারণ চুপিচুপি কথা বলিবার লোক নহেন, বিশেষত্ত: ছেলের এই সৌভাগ্যের কথা । ঘরের ভিতর হইতে কিরণ শুনিতে পাঙ্গল, সুধীর দেড় শো টাকার চাকরি পাইয়। রাজা-রাজড়ার কাণ্ড আরম্ভ করিয়াছে । কিরণ একবার ও কলিকাতায় যায় নাই এবং সত্যকার রাজার। নে কি প্রকার কা গু করিয়া থাকে তাহণঃ সঠিক আন্দাজ করিতে পারে না । এ গ্রামে সথের থিয়েটার আছে, অতএব রাজা সে অনেকবার দেখিয়াছে—গায়ে জরির ঝকৃমকে পোষাক, মাথায় মুকুট । স্বধীরের মাথার উপর মুকুট বসাইয়া দিলে কি রকম দেখায় ভাঙ্গই সে সকৌ তুকে কল্পনা করিতে লাগিল । নিবারণ সত্যবাদী যুধিষ্ঠির নয়, তাহা কিরণ জামে । তবু আজিকার কথাগুলি মিথ্যা বলিয়া ভাবিতে কিছুতেই প্রাণ চাহে না । অনেকবার অনেক আশী কবিয়া শেষে সমস্ত মিথ্যা হইয়া গিয়াছে, এবারে মিথ্য হইলে সে মরিয়া যাইবে । এইটুকু জীবনে বে অনেক দুঃখ পাইয়াছে, সে এক সাতকাণ্ড রামায়ণ । ছেলেবেলায় কিরণের মা মরিয়া গেলে বাবা আবার বিবাহ করেন । নূতন ম! কিরণকে মোটে দেপিতে পারিত না, এখন আর তাহাকে বাপের বাড়ি লষ্টয়া যাইবার নামও কেহ করে না।--সন্ধা ঘনাইয় আসিয়াছে, বাদাম গাছের ফঁাকে চাদ উঠিল । কিরণের মনে