১ম সংখ্যা ৷ রমাপতি তাড়া দিয়া বলিল, “তুমি চল ত, নাহয় একটু আগে আমি নেমে যাব।” গাড়ী চলিতে লাগিল। জানলা দিয়া যথাসম্ভব ঝু কিয়া পড়িয়া রমাপতি দেখিতে লাগিল । শ্রদ্ধানন্দ পার্ক অবধি আর গাড়ী করিয়া যাইতে হইল না । রাস্তায় মহা ভিড়, লোকজন ছুটিয়া চলিয়াছে, পুলিসে লাঠি হাতে চতুদিকে তাড়া করিতেছে; নির্বিচারে যাহার উপর খুশী দুইচার ঘা বসাইয়া দিতেছে । গাড়োয়ান বলিল, “আপনি লেবে যান বাবু, অামি আর যাব না ।” তাহার পয়সা চুকাইয়া দিয়া রমাপতি নামিয়া পড়িল । সামনেই একজন খদ্দরধারী যুবককে দেখিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “মশায়, মেয়ের সব কি চলে গেছেন ?” যুবক বলিল, “চলে আর যাবেন কোথায় ? প্রিজন ভ্যান এসে দাড়িয়েছে, এর পর লালবাজার যাত্রা করবেন আর কি ?” রমাপতি পুলিসের ভিড়, লাঠি সব অগ্রাহ করিয়া উৰ্দ্ধশ্বাসে ছুটিয়া চলিল। দুচার ঘা যে তাহার পিঠে না পড়িল ভাহা নহে, কিন্তু সেদিকে মন দিবার তাহার তখন অবসর ছিল না । @ জেলখানার গাড়ীর কাছে আসিয়। তবে সে দাড়াইল । সম্মুখে চাহিয়া দেখিল একদল মেয়ে পুলিস-পরিবেষ্টিতু হইয়া গাড়ীর দিকে অগ্রসর হইয়া আসিতেছে। সকলের দিব্য হাসিমুখ, যেন বেড়াইভে চলিয়াছে, এবং তাহাঞ্জের বিষে বিষক্ষয় «I ਬਾਂ সৰ্ব্বপ্রথম তাহার চোখ পড়িল যাহার উপরে, সে তাহার পত্নী তরু । - রমাপতি পাগলের মত চীৎকার করিয়া উঠিল, “তরু, তরু ?” মেয়ের দল তখন কাছে আসিয়া পড়িয়াছে রমাপতি অনেক গুতা মারিয়া এবং থাইয়। তরুর অতি নিকটে আসিয়া দাড়াইল, তরু স্বামীর দিকে চাহিয়া বলি “ছোট অত্যাচারীর হাত থেকে রক্ষা পেতে হ’লে এড়ি অত্যাচারীর শরণ নিতে হয়, আমি তাই "লাম । স্বামিত্বের দাবি যতই বড় হোঞ্চ, পুলিসের দাবি তার চেয়েও কড়া ।” জেলের গাড়ী চলিয় গেল । রমাপতি থোড়াইতে খোড়াইতে বাড়ি ফিরিয়া আসিল । তাহার মা ছুটিয়া আসিলেন, “হ্যা রে, বউ কোথা ?” রমাপভি সংক্ষেপে বলিল, “জেলে ।” রাসমণি হাউ-মাউ করিয়া কাদিয়া উঠিলেন, “গুম, কি সববনেশে কাণ্ড !" রমাপতি গজ্জন করিয়া বলিল, “চুপ কর, চেচিও না । বউ ত গেছে, এর পর চাকরিও যাবে ।” পরদিন হাজতে অনেকের সঙ্গে রমাপতিও হাজির হইল। মিনতি করিয়া বলিল, “তরু, তুমি বল ত জামিন দিয়ে ছাড়িয়ে নিহ ।” তঞ্চ বলিল, “আমি যাব না । করে দেখছি ।” একটু জেলখানা বদল
পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।