পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংথ্যা ] ঝি বাইরের বারানায় শুইয়া ছিল-চাকর নীচে ছিল। জল খাষ্টতে উঠিয়া জরের ঘোরে কি একটা বধিয়া গিয়া কচুষ্ট ও কপালের খানিকট কাটিয়া গিয়াছে । অপু এখানে আজকাল ভভ আসিতে পারে না, অনেকদিন লীলাকে দেখে নাই । লীলার মুখ যেন রাঙা, অস্বাভাবিক ভাবে রাঙা ও উজ্জল দেখাইতেছে । কিন্তু গায়ের রংএর আর সে জলুস নাই । বিমলেন্দু শুষ্কমুখে বলিল—কাল রঘুয়ার মুখে খবর পেয়ে এসে দেখি এই অবস্থ । এখন কি করি বলুন ত ? বাড়ীর কেউ আসবে না, আমি কাউকে বলতেও যাব না, মাকে একখান টেলিগ্রাম করে দেব ? অপু বলিল—ম যদি না আসেন ? —কি বলেন ? এক্ষুনি ছুটে আসবেন—দিদি-অন্ত প্রাণ র্তার। তিনি যে আজ চার বছর কলকাতামুখে৷ হন নি । সে এই দিদির কাগুষ্ট ত । মুস্কিল হয়েচে কি জানেন, কাল রাত্রেও ভুল বকেচে, শুধু খুকী, খুকী, অথচ তাকে আনালে। অসম্ভব । অপু বলিল—আর এক কাজ করতে হবে, একজন নাস আমি নিয়ে আসি ঠিক করে । মেয়েমাছুষের নাসিং পুরুষের দ্বারা হয় না। ব’স তোমরা । দুই ভিন রাত্রে সবাই মিলিয়া লীলাকে সারাইয়৷ তুicল । জ্ঞান হইলে সে একদিন কেবল অপুকে ঘরের মধ্যে দেখিতে পাইয়। কাছে ডাকিয় ক্ষীণ স্বরে বলিল— কথন এলে অপূৰ্ব্ব ? রোগ হইতে উঠিয়াও লীলার স্বাস্থ্য ভাল হইল না । শুইয়া আছে ত শুইয়াই আছে, বসিয়া আছে ত বসিয়াই আছে । মাথার চুল, উঠিয়া যাইতে লাগিল । আপন মনে গুম্ হুইয়া বসিয়া থাকে, ভাল করিয়া কথাও বলে না, হাসেও না । কোথাও নড়িতে চড়িতে চায় না। ইতিমধ্যে কাশী হইতে লীলার মা আসিলেন । বাপের বাড়ী থাকেন, রোজ মোটরে আসিয়া দু’তিন ঘণ্টা থাকেন—অাবার চলিয়া যান । ডাক্তারে বলিয়াছে, স্বাস্থ্যকর জায়গায় না লইয়া গেলে রোগ সারিবে না । দুপুর বেলাটা কিন্তু একটু মেঘ করার দরুণ রৌদ্র নাই কোথাও । অপু লীলার বাসায় গিয়া দেখিল লীলা জানালার ধারে বসিয়া আছে । সে সব সময় আসিতে পারে না, কাজলকে এক বাসায় রাখিয়া আসা চলে না । ভারী চঞ্চল ও রীতিমত নিৰ্ব্বোধ ছেলে । তাহা ছাড়া রান্নাবান্না ও সমুদয় কাজ করিতে হয় অপুর, কাজলকে দিয়া কুটাগাছটা ভাঙিবার সাহাষ্য নাই, সে খেলাধূলা লইয়া সারাদিন মহা ব্যস্ত-অপু তাহাকে কিছু করিতে ৰলেও না, ভাবে—জাহা, খেলুক একটু । পুঘর মাদারলেস চাইল্ড ! - অপরাজিত Jebrఏ লীলা মান হাসিয়া বলিল—এস । —এর কোথায় ? বিমলেন্দু কোথায় ?... মা এখনও আসেম কি ? —ব’ল । বিমলেন্দু এই কোথায় গেল। নাস-ত নীচে, বোধ হয় খেয়ে একটু ঘুমুচ্চে । —তারপর কোথায় যাওয়ার ঠিক হ’ল--সেই ধরমপুরেই ? সঙ্গে যাবেন কে ?-- —ম আর বিমল । খানিকক্ষণ দুজনেই চুপ করিয়া রহিল। পরে লীলা তাহার দিকে ফিরিয়া বলিল-আচ্ছা অপূৰ্ব্ব, বর্ধমানের কথ। মনে হয় তোমার ? অপু ভাবিল—আহা, কি হয়ে গিয়েচে লীলা ! মুখে বলিল—মনে থাকৃবে না কেন ? খুব মনে আছে । লীলা অঙ্কমনস্কভাবে বলিঙ্গ-তোমরা সেই ওদিকের একটা ঘরে থাকৃতে—সেই আমি যেতুম— —তুমি আমাকে একটা ফাউণ্টেন পেন দিয়েছিলে মনে আছে লীলা । তখন ফাউণ্টেন পেন নতুন উঠেচে । মনে নেই তোমার ? লীলা হাসিল । অপু হিসাব করিয়া বলিল—ত ধর প্রায় আজ বিশ বাইশ বছর আগেকার কথা । লীলা খানিকটা চুপ করিয়া থাকিয়া বলিল—তুমি সেই সমুদ্রের মধ্যে, কোন ডুবো জাহাজ উদ্ধার করে সোন। আনবে বলেছিলে, মনে আছে তোমার ? সেই ষে মুকুলে পড়ে বলেছিলে ? কথাটা অপুর মনে পড়িল । হাসিয়া বলিল—হঁ্যা সেই—ঠিক । উঃ, সে কথা মনে আছে তোমার ! —আমি বলেছিলুম কেমন করে যাবে ? তুমি বলেছিলে জাহাজ কিনে সমূত্রে যাবে। অপু হাসিল । শৈশবের সাধ-আশার নিফলতা সম্বন্ধে সে কি একটা বলিতে যাইতেছিল, কিন্তু হঠাৎ তাহার মনে পড়িয়া গেল লীলাও এ ধরণের নানা অাশা পোষণ করিত, বিদেশে যাইবে, বড় আর্টিষ্ট হইবে ইত্যাদি— ওর সামনে আর সে কথা বলার আবগুক নাই । কিন্তু লীলাই আবার খানিকটা চুপ করিয়া থাকিয়া বলিঙ্গ-- যাবে না ? যাও যাও—পরে হাসিয়া বলিল— সমুদ্র থেকে সোনা আনবে তো তোমরাই—পোষ্ট্রে গ্রাডা থেকে, না ?--দেখো, এখনও ঠিক মনে করে রেখেচি— রাখি নি ? একটু চা খাবে ? - —ছুঃবু, বেলা চ খাব কি “বেজন্তে ব্যস্ত হয়ে না জীল । * লীল৷ বলিল—তোমার মুখে সেই পুরোণে গানটা