পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

RSS প্রবাসী—অশ্বিন, ১৩৩৮ [ ৩১শ ভাগ, ১ম খণ্ড বিষ্ণুচরণ যখন প্রবেশিকা পরীক্ষা দেয়, তখনই তাহার কয়েকটি সমবয়সী বন্ধুর বিবাহে লে বরষাজী গিয়াছিল। ভাল-মন্দ কিছুই সে বুঝিত না—তবু বিবাহ-উৎসবের একটা আমেজ নেশার মত তাহার মন স্পর্শ করিয়াছিল । সেই দিন হইতে মনের একটি প্রচ্ছন্ন অংশে সে আপনার বিবাহ কামনা করিত। প্রবেশিকা গেল, আই-এ পরীক্ষা গেল, অবশেষে বি-এ পরীক্ষার স্বর্ণসিংহদ্বারে বিষ্ণুচরণ ভীতি-উৰেল চিত্তে বায়কতক আঘাত পাইয়। ফিরিয়া আসিল—তৰু বাড়িতে কেহই তাহার বিবাহের নাম করে না । বিষ্ণুচরণ একেবারে भ{ाझड झहेम्न श्रृंज्जिज । - অবশেষে সেই দারুণ ছর্ধ্যোগময়ী রাত্রে বিষ্ণুচরণের বিবাহ হইয়া গেল। বিষ্ণু আশা করিয়াছিল অনেক, কিন্তু ষ্টেশনে নামিয়া এক অখ্যাতনামা দুৰ্গম পল্লীর উচুনীচু অসমতল অন্ধকার পথে পান্ধীর দোলায় মাথায় বায়কতক আহত হইয়া তাহার বহুদিনের মনগড়া রোমান্সের ভিত্তি অনেকখানি ধ্বসিয়া গেল । তবু রোমান্সের যেটুকু বাকী ছিল, বৃষ্টি আসায় তাহাও আর রহিল না । কল্পনাশক্তি প্রখর হইলে এই অত্যন্ত অপ্রীতিকর পারিপাখিকের মধ্যে বিষ্ণু হয়ত খানিকটা স্বপ্নরাজ্যের মায়া দিয়া অভাব পূর্ণ করিয়া লইতে পারিত, কিন্তু বিষ্ণুর কল্পনার একটা সীমা ছিল—তার উপর সমস্ত দিন উপবাসের পর ক্লাস্ত দেহে ও রুক্ষ্ম মনে কল্পনা থাকেই বা কতক্ষণ ? তথাপি বাসরঘরে বিষ্ণুর ব্যবহার মেয়েদের চোখে বেশ ভালই লাগিল । তাহাদের দেওয়া খাবার সে অষ্ণুষ্ঠিত মনে গ্রহণ করিল—গোপনে জানাল গলাইয়া ফেলিয়া দিল না । তাহাজের চিরকালের পুরাতন সব পরিহাস নিমের পাতার মত ডিক্ত লাগিলেও বিষ্ণু সেগুলিকে অবলীলায় ছোট ছোট উত্তরে স্তব্ধ করিয়া দিল। বিষ্ণু স্থপটু ৷ মেয়ের সহজেই বুঝিলেন বিষ্ণুর তেমন উৎসাহ নাই । কাজেই তাহারা একে একে একটু রাত্রি বেশী হইলেই বিদায় লইলেন । বাহারা রহিলেন, তাহার বাসৱ-জাগার উৎসাহ একটু কমিী জাগিলে লম্বা ঢালা বিছানার একধারে জড়সড় হুইয়া ঘুমাইয়া পড়িলেন । - শুভদৃষ্টির সময় ভাল করিয়া মুখ দেখা হয় নাই । ঘরের কোণে একটি গ্যাসের আলো প্রায় নিবিয়া জালিতেছে ; বিষ্ণু দীর্ঘকাল প্রতীক্ষা করিয়া আছে, তাহার অৰ্দ্ধজাগ্রত মনে বছ বিচিত্র ছবি কোথা হইতে ভাসিয়া আসিয়াছে আবার শূন্যে মিলাইয়া গিয়াছে ; একমুহূর্ত পরে বিষ্ণু অবগুণ্ঠন খুলিয়৷ যে-মুখ দেখিবে, সে মুখের সহিত তুলনা করিবার মত মুখ তাহার মনে একখানিও নাই । সেই স্তিমিত আলোকে কম্পমান হন্তে বিষ্ণু বধূর অবগুণ্ঠন একটু সরাইয়া দিল। বিষ্ণু প্রথমেই ভাবিল— এ যে একেবারে খুকী ; পরমুহূৰ্বেই তাহার মনে হইল,— এই বেশ ! কিন্তু কেন বেশ’ তাহ। ভাবিবার শক্তি তাহার হয় নাই । মনটা বড়ই ফাক-ফাক বোধ হইতে লাগিল, স্বপ্নলোকের স্বল্প একটু অনুভূতি তাহার মনের কোণে মুতপ্রায় ইয়া পড়িয়াছিল, সেটুকু যেন কোন এক যাদুমন্ত্রবলে মরুভূমির মধ্যে বিন্দু বারিকণার মত কোথায় বিলীন হুইয়া গিয়াছে । ষে-মালাটি ছিড়িয়া গিয়াছে, ছিন্নস্থত্র কুড়াইয় বিষ্ণু সেটিকে আবার গাঁথিতে চেষ্টা করিল । বিছানায় শুইয়। বিষ্ণু গুল্গুন করিয়া গান করে, ভাবে—অন্নপূর্ণ নামটা তেমন সুবিধার নয় । “আন্নাই বা কি এমন ভাল নাম ? আচ্ছা, ‘আকু’—তাই বা এমন কি ? ‘আ’-টি বদলাইয়া ‘র’ বসাইলে কেমন হয় ? “রাণু’ নামটি বেশ! যদিও শতকরা নিরানব্বই জন স্বামী এই নামেই তাহাদের স্ত্রীকে ডাকে, তবু বিষ্ণু এই নামই পছন্দ করিয়া লইল । রাণু অথবা রাণী, আর সে রাজা ! কি অদ্ভুত রাজা সে ! বিষ্ণুর বিস্ময় লাগিল। ছোট্ট একটি দশ বছরের খুকী রাণী, আর সে ছাব্বিশ বৎসরের রাজা ! চমৎকার! বিষ্ণু আপন মনেই বলিতে থাকে-কি-ই বা বায়ু আসে । এ রকম অনেক আছে । ঠাকুর্দাই ত একটি আড়াই বছরের মেয়ে বিয়ে ক’রে এনেছিলেন শুনেছি— · তখন তার বয়স পঁচিশ ! আর এর ত তৰু দশ বছর বয়স। এই বেশ । বিষ্ণুর আত্মীয়-পৰিজন জায়াকে পাইরা খুব খুশী