পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

b">8 অধিরাম গুলি চলিতে লাগিল । একজনকেও প্রাণ লইয়া ফিরিতে হইল না—পাহাড়ের গায়ে তাদের মৃতদেহ ছড়াইয়া রহিল মসীচিহ্নের মত । রুশেদের প্রচণ্ড একগুয়েম দেখিয়া অবাক হইয়া যাই । হয়ত তাহাদের কোনো জায়গা আক্রাস্ত হইয়াছে এবং তার এক অংশ বেদখল হইয়াছে, তখন অপর অংশের সৈন্তদের সেখান থেকে হটিয়া যাওয়া দরকার হইতে পারে—অস্তথায় হয় মুতু্য, নয় বন্দীদশা প্রাপ্তি । এমন অবস্থায়ও তারা স্থান ত্যাগ না করিয়া সেইখানেই লাগিয়া থাকে—যতক্ষণ না তার মারা পড়ে । সকলে মারা পড়িবার পর হয়ত একজনে আসিয়া ঠেকিয়াছে, তখন সেই একজনই গুলি চালাইতে থাকে । কাছাকাছি হইলে বন্দুকে কিরীচ চড়াইয়া সে লড়িতে থাকে যতক্ষণ না আত্মসমর্পণের চিন্তা তার মনে উদিত হয় । কেন্‌জান, তাইপোশান, আর তাকুশানে এমন ব্যাপার প্রায়ই ঘটিত । শুনিয়াছি, নানশানের যুদ্ধের পরে, কোথা থেকে কেহ জানে না, গুলি ছুটিয়া আসিয়া আমাদের জন দশেক লোককে জখম ও নিহত করে । চারিদিকে খোজ খোজ রব উঠিল, অনেক সন্ধানের পর দেখা গেল, রান্নাঘরে এক রুশ সৈনিক লুকাইয়া জানাল দিয়া নিৰ্ভয়ে পরমাগ্রহে গুলি চালাইতেছে । রুশবন্দীকে যখনই এরূপ করার কারণ জিজ্ঞাসা করিয়াছি, তারা উত্তর দিয়াছে— নায়কের হুকুম অনন্ত করিতে পারি না ! একজন মার্কিন সামরিক কৰ্ম্মচারী জাপানী সেনাদলের সঙ্গে কয়েকমাস মাঞ্চুরিয়ায় ছিলেন । তিনি বলেন, “জাপানী দলের মধ্যে, উচু থেকে নীচু পৰ্য্যন্ত সবার মধ্যে একটি সখ্যভাব ও একত্ববোধ বৰ্ত্তমান । তেমনটি আর কোনো জাতির সেনাদলের মধ্যে দেখা যায় না, এমন কি ইংলণ্ড বা গণতান্ত্রিক আমেরিকাতেও নয়। তাহাদের এই বিশেষত্ব মনকে আকর্ষণ করে।” কিন্তু রুশ সৈনিকের বিশেষত্ব ষে একরোখা সাহস—তাও আমাদের প্রশংসার যোগ্য । পোর্ট-আর্থার অঁাকড়াইয়া থাকার সময় তাদের গোলাগুলি রসদ ইত্যাদির যথেষ্ট অভাব ঘটে, তার ফলে সৈনিকের হাজারে হাজারে মারা পড়ে প্রবাসা—আশ্বিন, ১৩৩৮ [ ৩১শ ভাগ, ১ম খণ্ড তাদের দুরবস্থা হয় ঝোড়ো হাওয়ার মুখে দীপশিখার মত ; সেই নিরাশার মধ্যেও তারা অবিচলিত" ছিল, শক্ৰকে বাধা দেওয়ার দৃঢ় সঙ্কল্প এতটুকু শিথিল হয় নাই। রুশেদের সামরিক বিধিতে আছে—যুদ্ধে জয়মাল্য লাভ হয় কিরীচ ও রণস্থঙ্কারের দ্বারা ! গুলি ফুরাইয়৷ গেলে বন্দুকের ধাটের ঘায়ে শক্রকে নিপাতিত কর! বন্দুকের বাট যদি ভাঙে তবে কামড়াইয়া लां७ ! আক্রমণে ও বাধা দেওয়ায় তারা একরোখা, একথা খুব সত্য ; কিন্তু আবার নিজেদের প্রাণ বাচাইবার জন্ত তারা বিশেষ সতর্ক। রুষ চরিত্রের এই দুইটি বিশেষ লক্ষণ পরম্পর বিরোণী । “বরং ইটের টালি হইয়া লাচিয়া থাকিবে তবুও মণি হইয়া ভাঙিবে না”—মনে হইত ইহাই তাদের আদশ । জাপানী আদশ তার বিপরীত–মুন্দর মরণ বরণ করিও, কিন্তু অসম্মানের জীবন চাক্তি ও ন! ! শুনিতে প{ষ্ট এক বন্দী রুশ বলিয়াছিল—বাড়িতে আমার প্রেমিকা পত্নী আমার জন্য নিশ্চয়ই খুব ব্যাকুল হইয়া আছে । আমাদের নায়ক বfলতেন, জাপানী সেন। মাটির মূৰ্ত্তিব মত ভঙ্গুর , কিন্তু দেখিতেছি ঠিক তার উণ্টো, তার অম্বরের মত শক্তিমান । যুদ্ধে মারা যাওয়ার চেয়ে স্ত্রীর জন্য প্রাণটা রাখাই ভাল—আমি মারা পণ্ডিলে শোকে সে পাগল হইয়া যাইবে । জাপানীকে আঁটিতে পারিব না। তাদের হাতে মৃত্যু নিশ্চিত জানিয়াও লড়িতে থাকা মুখত নহে কি ? শত্রুর আঘাতের মুখে তাকুশান রক্ষা করা ও আয়ত্তে রাখা খুব कट्रेिन হক্টলেও আমরা তাই করিলাম, শেষ পৰ্য্যস্ত রুশের রণে ক্ষান্ত দিয়া তাদের অধিকারভুক্ত স্থান দৃঢ়তর করার চেষ্টায় নিরত হইল, এবং বিভিন্ন কেল্লা থেকে বড় বড় কামান অবিরাম দাগিয়৷ আমাদের কাজে বাধা দিতে লাগিল । তাকুশানের ষে পাশ শক্রর দিকে অবস্থিত সেই দিকটা স্বদূঢ় করা ; অবরোধের মাল-মসলা সংগ্রহ, অতিকায় কামানের ভিত্তি রচনা, শত্রুর ‘মাইন’এর খবর লওয়া, তাদের কাট