পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] সংস্কৃত নাটকের বর্তমান অবস্থায় পরিণতি । পূৰ্ব্বেই উক্ত হইয়াছে যে পূৰ্ব্বরঙ্গে সূত্ৰধার পারিপাশ্বিকদ্বয়ের সহিত কথোপকথনচ্ছলে নাটকের ‘প্ররোচনা' করিবেন এবং পরে “স্থাপক” নাটকের আরম্ভদ্যোতকরূপ স্থাপনা করিবেন। ইহাও বলা হইয়াছে যে পূৰ্ব্বরঙ্গ অতিবিস্তুত হইবে না। সাধারণতঃ যে-সকল সংস্কৃত নাটক আমরা দেখিতে পাই তাহাতে প্রথমেই নান্দী-পাঠ হইয়। থাকে, পরে স্বত্রধার অন্ত দুই এক জন পাত্র বা পাএীর সহিত কথোপকথনচ্ছলে নাটকের প্রস্তাবনা করেন ; স্থাপকের প্রবেশ দেখিতে পাওয়া যায় না ; নাটকের উপোদঘাত অংশ প্রস্তাবনা নামেই অভিহিত হইয়া থাকে। পূৰ্ব্বরঙ্গ পাছে অতিবিস্তৃত হইয় পড়ে এইজন্যই বোধ হয় নাট্যকারগণ পূৰ্ব্বরঙ্গের যাবতীয় অভিনয় { চারী, মহাচারী ইত্যাদি ] সঙ্কুচিত . করিয়া, প্ররোচনা ও স্থাপনা একত্র মিশাইয়া “প্রস্তাবনা” করিয়া থাকেন। কালিদাসের শকুন্তল হইতেই আমরা দৃষ্টান্ত উদ্ধার করি – নান্ধী—যা স্বষ্টিঃ স্ৰষ্ট রাদ্য ইত্যাদি। [ শকুন্তলায় কোন প্রকার পূজার কোন প্রসঙ্গ নাই ; পূজা হইত কি না নিশ্চিত বলা সুকঠিন । হয়ত পূজা হইত, পূজা নাটকের অন্তর্গত নহে বলিয়। তাহার উল্লেখ নাই। উত্তরচরিতে—“কালপ্রিয়নাথস্য যাত্রায়াং" কথার উল্লেখ আছে । হয়ত পূজার কোন প্রকার আয়োজন হইত। ] প্ররোচনা-পরিষদের অভ্যর্থনা ইঙ্গিতে করা হইয়াছে ৷ ‘অভিজ্ঞানশকুন্তল এই শব্দে নাটকের বস্তু নির্দেশ করা হইয়াছে । স্থাপনা—“কালিদাসগ্রথিতবস্তুনা” দ্বারা সূত্ৰধার কবির নাম নির্দেশ করিয়াছে। পরে নটীর গীতিমাধুর্য্যে মোহিত হইয়া নাটকের পরিচালনরূপ স্বীয় কৰ্ত্তব্য ভুলিয়াছে। ইহার দ্বারা, দুষাস্তের প্রতি অনুরাগবশতঃ শকুন্তলার তপোবনের কৰ্ত্তব্যে ক্রটি নির্দেশ করিয়া নাটকের আখ্যানভাগ জ্ঞাপন করিতেছে। পরে “তবাৰ্ম্মি গীতরাগেন” ইত্যাদি শ্লোকে নাটকের আরস্ত নির্দেশ করিয়া স্বত্রধার প্রস্থান করিল। . এইজন্ত সমস্ত উপোদঘাতটি প্রস্তাবনা নামে অভিহিত সংস্কৃত নাটকের উৎপত্তি ও পরিণতি 象 ס כי כל হইয়াছে। ইহাতে প্ররোচনা বা স্থাপনার পৃথকৃ নির্দেশ নাই । সম্প্রতি ত্রিবাস্তুর মহারাজের অনুগ্রহে “ভাস” কবির যে-সমুদায় নাটক প্রকাশিত হইয়াছে তাহাতে প্রস্তাবনার পরিবর্তে “স্থাপনা’র উল্লেখ দেখিতে পাওয়া যায় । ਭਂ কবি কালিদাসের বহুপূৰ্ব্ববৰ্ত্তী ( ৪র্থ শতাব্দী খৃঃপূঃ বা তৎপূর্ব) তাহার নাটকে নান্দীর শ্লোক দেখিতে পাওয়া যায় না । নান্দী পাঠ যে হইত তৎসম্বন্ধে কোন সন্দেহ নাই, কেননা তাহার নাটকের প্রথমেই “নান্দ্যন্তে" কথাটি দেখিতে পাওয়া যায়। ভাস কবির “স্বপ্নবাসবদত্তা”র আরস্ত এইরূপ ;– ( নন্দ্যিন্তে তত: প্রবিশতি স্বত্রধার: ) স্বত্রধার: উদয়নবেন্দুসবৰ্ণাবাসৰদত্তাবলে বলন্ত ' : পদ্মাবতীর্ণপূর্ণে। বসন্তকম্রে ভুজে পাতাম্ ॥

  • び奪ー

সূত্ৰধায়: ভূত্যৈমগধরাজস্ত মিন্ধৈঃ কন্যাম্বসারিভি: | ঘৃষ্টমুৎসাৰ্য্যতে সৰ্ব্বস্তপোবলগতে জনঃ ॥ এই শোকে নাটকের প্রথম দৃষ্ঠের ঘটনার স্বচনা করিয়া সুত্ৰধার “নিষ্ক্রান্ত" হইল। ইহাই হইল “স্থাপনা" । - ভাস কবির যে কয় খানি নাটক প্রকাশিত হইয়াছে সকলগুলিরই আরম্ভে “নান্দ্যন্তে ততঃ প্রবিশতি স্বত্ৰধারঃ" এবং উপোদঘাতের শেষে “স্থাপন।” এই শব্দ দেখিতে পাওয়া যায় । গ্রন্থে “নান্দী" লিখিত না থাকা এবং সুত্ৰধার কর্তৃক নাটকের আরস্ত, ইহা ভাসের বিশেষত্ব। সেইজন্য “বাণভট্ট” হর্ষচরিতের উপক্রমণিকায় লিখিয়াছেন— • মুত্রধারকৃতারগুৈনর্গটকৈ বহুভুমিকৈঃ। সপতাকৈৰ্ষশো লেভে ভাসে দেবকুলৈরিব ॥ স্থপতি দ্বারা গঠিত বহুভূমিক পতাকাশোভিত দেবমন্দির নির্মাণের ন্যায় স্বত্রধারকৃতারস্ত বহুপাত্রযুক্ত ও বহুসন্ধিসমন্বিত নাটক রচনার দ্বারা ভাস কবি ( প্রভূ৩ , যশোলাভ করিয়াছেন । নাট্যশাস্ত্রে আমরা তুদানীন্তন নাটকের যে পরিচয় পাই তাহার উপোদঘাত-অংশমাত্র পরবত্তী নাটকে পরিবৰ্ত্তিত হইয়া প্রস্তাবনারূপে পরিণত হইয়াছে । অন্যান্য অংশের বিশেষ কোন পরিবর্তন দেখিতে পাওয়া যায় না। নৃত্য যে পরবর্তী নাটকেও অন্তভূক্ত ছিল তাহার নিদর্শন জামরা “মালবিকাগ্নিমিত্রে” দেখিতে পাই । শকুন্তলা