পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

X 8 o জালা এর চেয়ে লক্ষগুণে বেশী হবে।” কথাটা পরাণের কানে গেল। সে ছুটিয়া আদালতে ফিরিয়া আসিল । “দোহাই ধৰ্ম্মাবতার, আপনি সুবিচার করুন। রমেশ বলছে ছাড়া পেলেই ও আমার ঘর দোর জ্ঞালিয়ে দেবে, আমাদের পুড়িয়ে মারবে ।” বিচারক আবার বুমেশকে ডাকিয়া পাঠাইলেন। সে অসিলে জিজ্ঞাসা করিলেণ,—“এ যা পলছে তা সত্যি ?” “আমি কিছু বলতে চাই না। আপনার ক্ষমতা আছে কাজেই আমায় বেত মারছেন ;–যেন একাই আমি দোষী! কিন্তু ও যে অত্যাচার কাছে তার কি কিছু সাজা নেই ?” সে আরও কি বলিতে চাহিতেছিল কিন্তু ক্ষোভে দুঃখে বলিতে পারিল না। তাহার তখনকার অবস্থা দেখিয়া সকলেই বুঝিতে পারিল যে সে ছাড়া পাইলেই পরাণের একটা-না-একট। অনিষ্ট কfরবেই করিবে । বৃদ্ধ বিচারক কিয়ৎক্ষণ নীরব থাকিয়া বলিলেন,— "ওহে দেখ, এক কাজ কর, কেন মিছে রেষাfরধি করছ ? আচ্ছ বাপু, তোমার কি গম্ভবতী স্ত্রীলোককে আমন ক’রে মারাটা উচিত হয়েছে ? তুমিই ভেবে দেখ দেখি, যদি একটা ভালমন্দ কিছু হ’য়ে যেত! এ কি উচিত হয়েছে বাপু ? বেশ, দোষ করেছ, স্বীকার কর, পরাণের কাছে মাপ চাও, সকল আপদ চুকে যাক । তা যদি তুমি করতে পার ত আমি এ বিচারফল প্রত্যাহার করতে রাজি আছি " " পেষকার দেখিল পরাণের টাকাটা হাতছাড়া হইয়। ধায়, কাজেই সে চুপ করিয়া থাকিতে পারিল না, বলিল, —“হুজুর এ যে অস্তায় কথা বলছেন। একবার যা হুকুম দয়েছেন সে ত কোনো ধারায় রদ করতে পারেন না।" বিচারক তাহাকে থামাইয়া দিয়া বলিলেন,-“চুপ কর । আমি তোমার সঙ্গে সে বিষয়ে তর্ক করতে চাই না । ভগবানকে মেনে চলাই, বিচারের প্রথম ধারা,— আর তিনি চান শান্তি !” বিচারক রমেশকে আবার সেই কথা বলিয়া সন্মত করিতে প্রয়াস পাইলেন। রমেশ কিন্তু সে কথায় কর্ণপাত করিল না । প্রবাসী—অগ্রহায়ণ, ১৩২১ [ ১৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড •“অtলচে বছরে আমার পঞ্চাশ বছর বয়স হবে ;– আমার উপযুক্ত বিবাহিত পুত্র রয়েছে, এই বুড়ে বয়সে পরাণ অামায় বেত খাওয়ালে, আমি আবার তারই কাছে মাপ চাইতে যাব ? কিছুতেই না ; অনেক সয়েছি আমি......পরাণ যেন কথাটা মনে ক’রে রাখে ।” আবার তাহার স্বর র্কাপিয়া উঠিল । সে আর কিছুই বলিল না। 獄 পরাণ সন্ধ্যার সময় গ্রামে ফিরিয়া আসিল । বাড়ীতে ঢুকিয়া কাহাকেও দেখিতে পাইল না। রমণীর নদীতে গা ধুইতে জল আনিতে চলিয়া গিয়াছিল ; পুত্রের তথনও মাঠ হইতে ফিরে নাই। পরাণ আপনার ঘরে বসিয়৷ ভাবিতে লাগিল । তখন তাহার মানসনেত্রের সম্মুখে সাজার কথা শুনিয়। রমেশের যে পরিবর্তন হইয়াছিল ধীরে ধীরে সেই মূৰ্ত্তি জাগিয়া উঠিল । সেই সময় তাহার মনে হইল তাহাকে যদি ঐৰূপ সাজ। কেহ দেওয়াইত তবে তাহার কিরূপ মনে " অবস্থা হইত ! হঠাৎ সে শুনিতে পাইল তাহার বৃদ্ধ পিতা পাশের ঘরে কাশিতেছে। সে ধীরে ধীরে উঠিয়া পিতার নিকট গেল। বৃদ্ধ বহুক্ষণ কাশিয়া জিজ্ঞাসা করিল,—“কি হ’ল ? রমেশের কিছু সাজা হ’ল নাকি ?” “হ্যা, পচিশ ঘা বেত দেবার হুকুম হয়েছে, আজই সাজ হবে !” রমেশের দুঃখে সাহানুভূতি প্রকাশ করিয়া বৃদ্ধ মস্তক আন্দোলন করিল। বলিল,—“বড়ই কাজটা খারাপ হ’ল। বড় ভুল করছ পরাণ। এর মন্দ ফল তোমার ওপর যতটা ফলবে, ততট। আর কারে ওপর ফলবে না ঞ্জেনে ।......বেশ, আদালত যেন তাকে বেত মারলে,--- কিন্তু তাতে তোমার লাভ কি হল বাপু ?” “এতে তার শিক্ষা হবে, এমন কাজ আর কখনও করবে না ।" “হ্যাঃ, আর করবে না সে ! না, আরো বেশী করে? করবে ? কিন্তু করেছে কি, আগে তাই বল ত ? তোমার চেয়ে তার দোষ কোনখানটার বেশী ?” g “কি না করেছে সে ? অার একটু হ’লেই আমার বউমাকে ত মেরেই ফেলেছিল ! আবার এখন ত অামার