পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] প্রভাতে মিলিল না, সন্ধ্যায় মিলিলেও মিলিতে পারে। তবে কি জান, অনৰ্থক লোকের মনে কষ্ট দিতে নাই, একদিন তোমাকেও হয়ত আমারই মত ভিক্ষা করিতে হইবে।” উঠিল এবং কহিল “তুই আমাকে শাপ দিতেছিস্ ? তোকে ভিক্ষঞ্চদিলাম না বলিয়া—” “বাপুহে, শান্ত হও, আমরা সন্ন্যাসী, কাম ক্রোধ লোভ মোহ বিবর্জিত, আমরা কখনও কাহাকে অভিশাপ দিই না। তবে কি জান—” “রাথ ঠাকুর তোমার তবে কি জান, অভিশাপ দিও না বলিতেছি।” “গুন, চক্রের পরিবর্তনে আজি তুমি রাজচক্ৰবৰ্ত্তী, কিন্তু কালি দীনহীন ভিখারীরও অধম হইতে পার—” “আবার । ঠাকুর ভাল হইবে না বলিতেছি।” “বাপু, তুমি ত এখনও প্লাজচক্ৰবৰ্ত্তী হও নাই।” “যদি হই ?” * * “এখনই হও, আমার কোনই আপত্তি নাই।” “ভাল ।” o “কিস্তৃ—” “আবার কিন্তু কেন ?" ”তুমি কখনও রাজচক্ৰবৰ্ত্তী হইবে না,—তাঙ্গাই বলিতেছিলাম।” “ঠাকুর মহাশয়ের কি সামুদ্রিক বিদ্যা অধীত আছে ?” “যাহা ছিল ক্ষুধাতৃষ্ণায় এখন তাহ ভুলিয়া গিয়াছি।” সন্ন্যাসী এই বলিয়। বস্ত্রমধ্য হইতে একটি চৰ্ম্মনিৰ্ম্মিত আধার বাহির করিল ও জলাশয় হইতে জল লইয়া হস্তপদ প্রক্ষালন করিল, পথিক উৎসুকনেত্রে তাহার কার্য্যকলাপ দেখিতে লাগিল । সন্ন্যাসী চৰ্ম্মাধার হইতে কিঞ্চিৎ কৃষ্ণবর্ণ তরল পদার্থ ভিক্ষণপাত্রে ঢালিয়া লইয় তাহার সহিত জল মিশ্রিত করিয়া পান করিল। তাহা দেখিয়া পথিক ব্যগ্র হইয় জিজ্ঞাসা করিল, “ঠাকুর মহাশয়, উহ। কি ?” সন্ন্যাসী প্রশ্নের উত্তর না দিয়া ভিক্ষাপাত্ৰ ধুইয়া বস্ত্রমধ্যে রক্ষা করিল এবং দণ্ডে ভর দিয়া উঠিল। পথিক পুনরায় ঞ্জিভূগো করিল, “ঠাকুর মহাশয়, কোথায় যাইতেছেন ?” ধৰ্ম্মপাল ! সন্ন্যাসীর কথা শুনিয়া পথিক ক্রোধে জলিয়া 鲁 ›«ግ সন্ন্যাসী গম্ভীরভাবে উত্তর করিল, “যেখানে ভিক্ষা পাওয়া যায়,—নগরে ৷” “আপনাকে একটা কথা জিজ্ঞাসা করিব ?” “একটা ছাড়িয় একশতটা জিজ্ঞাসা করিতে পার, কিন্তু বাপু, আমার সময় অল্প, এখনও • তিন ক্রোশ পথ স্থাটিতে হইবে।” & “যদি অনুগ্রহ করিয়া আমার দুইটা উষ্ট্রের একটায় আরোহণ করেন তাহা হইলে একপ্রহরের পরিবর্তে দেড়দণ্ডে পৌছিতে পারিবেন।” “বাপুহে, তুমি একমুষ্টি অন্ন দিতেই প্রস্তুত নহ, তোমার উষ্ট্রে আরোহণ করিতে চাহিলে ত আমার মাথাটাই কাটিয়া ফেলিবে ।” “দেব, অপরাধ হইয়াছে, দাসের অপরাধ মার্জন করিবেন!” “আমি তোমার কথায় ক্রুদ্ধ হই নাই, তুমি এখন কি বলিতে যাইতেছিলে বল ।” “ঠাকুর কি এই ভীষণ রৌদ্রে পায়ে হাটিয়া নগরে ৷ যাইবেন ?” o e “হঁ, গুরুপ্রদত্ত যে অমৃতরস পান করিয়াছি, তাহার বলে ক্ষুধা, তৃষ্ণা, উত্তাপ ও ক্লান্তি সমস্তই জয় করিয়াছি।” “সত্য নাকি ?” “বাপুহে, আমি কি তোমাকে মিথ্যা কথা শুনাইবার জন্য মধ্যাহ্নকালে এই প্রাচীন দেবমন্দিরে আসিয়াছি ?” “R), না, আমি কি তাহ বলিতে পারি।” “তবে কি ?” “এই বলিতেছিলাম কি—আমার নিবাস কানাকুজে । কান্যকুজে নিবাস বটে, কিন্তু অবস্থান করি প্রতিষ্ঠানে— এত উত্তাপ সহ্য করা অামীদিগের অভ্যাস নাই। তাই বলিতেছিলাম কি, যে, প্রভুর অনুগ্রহ হইলে— প্রভুর প্রসাদস্বরূপ —” “তুমি অমৃতরস পান করিতে চাও ?” “প্রভুর প্রসাদ পাইলে চরিতার্থ হইয়! যাই ।” “এখনই দিতেছি । সন্ন্যাসী এই বলিয়া বস্ত্রাভ্যন্তর হইতে চৰ্ম্মাধর বাহির করিয়৷ তাহা হইতে কিঞ্চিৎ তরল পদার্থ ভিক্ষণপাত্রে