পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৩২ ইাসপাতাল করিবার জন্য নিজের ঘরবাড়ী ছাড়িয় দিতেছেন। দান ত কত লোকে কত প্রকারেই করিতেছেন। তাহার পর, শত শত পুরুষ ও নারী যুদ্ধক্ষেত্রে আহত সৈনিকদের সেবাশুশ্রুষার জন্ত গিয়াছেন । যুদ্ধে মানুষের নৃশংসতা যেমন দেখা যাইতেছে, তেমনি মানুষের দয়া ও অপরের সেবা করিবার প্রবৃত্তিরও প্রমাণ পাওয়া যাইতেছে । কিন্তু প্রাণের চেয়ে বড় যে আরও কিছু আছে, তাহা দেখাইবার জন্য যুদ্ধই যদি একমাত্র উপায় হইত, তাহা হইলে মানুষের পক্ষে সেটা সৌভাগ্য বা সন্মানের বিষয় মনে করা যাইতে পারা যাইত না । বস্তুতঃ মানুষ যুদ্ধেই ষে প্রাণকে তুচ্ছ করিয়াছে, তাই নহে ৷ মাকুয নিজের ধৰ্ম্মবিশ্বাসের জন্য সবদেশেই ভীষণ উৎপীড়ন সহ করিয়াছে ; পুড়িয়া মরিয়াছে, প্রাণ দিয়াছে, কিন্তু তথাপি মিথ্যাচরণ করে নাই, বিশ্বাস ত্যাগ করে নাই । ধৰ্ম্মপ্রচারের জন্যও নানা ধৰ্ম্মের উপদেষ্টার। প্রাণপণ করিয়াছেন ও প্রাণ দিয়াছেন । ক্রীতদাসে পরিণত হতভাগ্য মানুষদের মুক্তির জন্য, প্রতারিত পাপব্যবসায়ে নিযুক্ত নারীদের উদ্ধারের জন্য, ভীষণ সংক্রামক ব্যাধিগ্রস্ত নরনারীর চিকিৎসা ও সেবা শুশ্রুষার জন্য, এবং এইরূপ আরো নানাবিধ লোকহিতকর কায্যের জন্য কত মহাত্মা প্রাণ দিয়াছেন। বৈজ্ঞানিক আবিক্রিয়ার জন্য, সুমেরু ও কুমেরু মণ্ডল ও অন্তব্রেস্থিত অজ্ঞাত দেশসকল t আবিস্কার করিবার জন্য, কত সাহসী পুরুষ প্রাণ দিয়াছেন । সুতরাং যদি কখন দেশে দেশে জাতিতে জাতিতে যুদ্ধ উঠিয়া যায়, তাহ হইলেও এরূপ আশঙ্কার কোন কারণ নাই, যে, যুদ্ধের বিলোপের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের চূড়ান্ত সাহস ও স্বাৰ্থত্যাগ উদ্দীপন, বিকাশ ও প্রদর্শনের সুযোগও লয় পাইবে । যুদ্ধের আর একটা ফল এই, যে, ইহার দ্বারা পৃথিবীর অলস, অকৰ্ম্মণ্য ও ভীরু, এবং রোগ, বিলাসিত বা ইন্দ্ৰিয়পরায়ণতায় জীর্ণ জাতিসকল সম্পূর্ণ বা অংশত লোপ পায় এবং তাঙ্গদের জায়গা দৃঢ়তর ও অধিক গুর কৰ্ম্মঠ ও সাহসী জাতি দখল করে । জীৰ্ণ জাতির সম্পূর্ণ বিলুপ্ত ন হইলে প্রবলতর জাতির সহিত সংমিশ্রণে বা তাহাদের প্রবাসী—অগ্রহায়ণ, ১৩২১ [ ১৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড সহিত সংস্পর্শে ও সংঘর্ষে ৩াহার ক্রমশ মানুষ হইয়া উঠে । অতএব রণস্থলে মৃত্যুর তাণ্ডব কেবল ভয়াবহ ব্যাপার নহে । , উহার সুফলও অাছে। তবে ইহাও ঠিক যে জীর্ণ জাতিকে স্থানচু্যত ব বিলুপ্ত করিবার উপায় একমাত্র যুদ্ধই নহে। শ্রমে প্রতিযোগিতায়, শিল্পদক্ষতার প্রতিষোগিতায়, বাণিজ্যের প্রতিযোগিতায়, অযোগ্যের স্থান যোগ্য অধিকার করি (芝び破l আমাদের বাংল। দেশে পচিশ বৎসর আগেও মুটে মজুর মিস্ত্রী মাঝে মাল্লা মুদি ময়রা মুছুদি বি চাকর রাধুনী আড়তদার প্রভূতির কাজ প্রধানত কাহার করিত এব: এখন কাহার করে, তাহার খবব লইলেই বুঝিতে পার যায়, বিনা যুদ্ধে বিন রক্তপাতে কেমন করিয়া কৰ্ম্মঃ আসিয়া অকৰ্ম্মণ্যকে কার্য্যক্ষেত্র হইতে হটাইয়া দেয় । যুদ্ধের আর এক ফল, পৃথিবীতে নানা দেশের ও নান জাতির সভ্যতার আদান প্রদান । আলেকৃঙ্গাণ্ডার যখন এশিয়ার নানা দেশ জয় করিয়৷ পঞ্জাবের কিয়দংশ দখল করিলেন, তখন গ্রীক ও হিন্দুর মধ্যে সভ্যতা ও নান বিদ্যার আদান প্রদান চলিতে লাগিল । যখন বিদেশী মুসলমানের। ভারতের নানা প্রদেশ দখল করিল, তখনও আবার এইরূপ বিনিময় চলিতে লাগিল । কিন্তু সভ্যতা বিস্তারের উপায় একমাত্র যুদ্ধই নহে বাণিজ্য ইহার অন্যতম উপায় । আরবের যে-সকল দেশ জয় করে নাই, যে-সব দেশে তাহার কেবল বাণিজ্যের জন্য ষাতায়াত কfরয়াছে, সেখানেও আরবীয় সভ্যতার আলোক কিয়ৎ পরিমাণে বিকীর্ণ হইয়াছে । কোন জাতির পক্ষে স্বেচ্ছাপুৰ্ব্বক অন্যান্য দেশের বিদ্যা শিক্ষা করা ও বিদেশী সভাত) দ্বার উদ্বুদ্ধ হওয়াও অসম্ভব নহে । জাপানীদের দেশ আধুনিক সময়ে বিদেশী দ্বার: বিজিত ও অধিকৃত হয় নাই । কিন্তু জাপানীরা পাশ্চাত বিদ্য। কল কৌশল খুব শিখিয়াছে, পাশ্চাত্য সভ্যত তাহাদিগকে খুব একটা ধাক্কা দিয়া তাহদের প্রাণটাকে সচেতন করিয়া তুলিয়ছে । জাপানের দৃষ্টাস্তের সমালোচনা করিয়৷ একথা বলা যাইতে পারে ষে জাপান বিজিত হয় নাই বটে, কিন্তু ইত। দেখিবার ভ দ্য বিদেশে যাই তে হয় না