পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ও আবিক্রিয়া, অকুমান ও প্রমাণ, যখন একই মাতুষে করে, তখন কল্পনা ও অনুমানের মূল্য সহজেই বুঝা যায়। কিন্তু যদি কল্পনা কেহ আগে করিয়া থাকে, এবং অবিক্রিয়া কেহ তাহার অনেক পরে করে, তাহা হঠলেও কল্পনা করাতেও যে বাহাদুরী থাকিতে পাবে, তাহ। কি অস্বীকার করা যায় ? প্রাচীন হিন্দুরা বন্দুকাfদ আগ্নেয় অস্ত্র আবিষ্কার করিয়া ব্যবহার করিতেন কিনা, ৩াগর আলোচনা অনেকবার বাংলা ও ইংরেজীতে হইয়। গিয়াছে । যদি তাহার এরূপ আবিক্তিয়া করিয়া থাকেন, ত, তাহাতে তাহাদের কতিত্ব আছে । কিন্তু যদি কেবল কল্পনাই করিয়া থাকেন, তাহাতেও ত মানসিক ক্ষমতার পরিচয় পাওয়া যায় । পুষ্পক রথের বর্ণন প্রাচীন সংস্কৃত নানা কাবো আছে। পুষ্পক রথে আকাশমার্গে ভ্রমণ কfরলে নীচের নানা প্রাকৃতিক দৃশু কেমন দেখায়, খুব উচু হইতে ক্ৰমে ক্রমে নীচে নামিলে পৃথিবী কেমন ক্রমশঃ অস্পষ্ট হইতে স্পষ্ট ও স্পষ্টতর হইতে থাকে, তাহার ও বর্ণনা আছে । যেমন রঘুবংশে ও উত্তর-রামচরিতে। আকাশে উঠিয়া দুষ্ট পক্ষ যুদ্ধ করিতেছে, এরূপ বর্ণনাও রামায়ণে আছে । এইসমুদয় বর্ণনা হইতে কেহ কেহ এরূপ সিদ্ধান্ত করিতে চান যে প্রাচীন হিন্দুর আকাশচারী ধান নিৰ্ম্মাণ করিতে জানিতেন, এবং এই -সব আকাশযান যাতায়াত, আমোদপ্রমোদ ও যুদ্ধের জন্য ব্যবহার কfরতেন । হিন্দুদের ঠিক পরেই মুসলমানেরা ভারতবর্ষে রাজত্ব করেন। মুসলমানের। এমন একটা জিনিযের কোনই বাস্তব চিহ্ন দেখিতে পান নাই বলিয়া, পুষ্পকরথ আদি আকাশযান সত্য সত্যই ছিল বলিয়া বিশ্বাস করিতে ইতস্ততঃ করি । কারণ, উহা ত দেবমূৰ্ত্তি বা দেবমন্দির নহে, যে, পৌত্তলিকতাবিদ্বেষী মুসলমানেরা নষ্ট করিয়া দিবেন। এমন কাজের জিনিষ নষ্ট না করিয়া তাহারা নিজেদের কাজে লাগাইবেন, এইরূপ অকুমানই তো অাগে মনে আসে । তাহা তাহারা কেন করিলেন না ? মুসলমানদের ও আগে যে-সব অসভ্য বিদেশী জাতি ভারত আক্রমণ ও ভারতে বসবাস করিয়াছিল, তাহারা সম্পূর্ণরূপে ভারতবর্ষীয় এবং হিন্দুসমাজ ভুক্ত হইয়। ভারতীয় সভ্যতা গ্রহণ করিয়াছিল ; এই জঙ্গ তাহাদের বিষয় বিবেচ্য নহে। তাহাদের মুসলমানদের মত এত বেশী ভাঙ্গিবার প্রবৃত্তি ছিল না বোধ হয় । যাহা হউক আমাদের এ আপত্তিরও হয় ত খণ্ডন আছে । কিন্তু যদি ধরিয়াও লওয়া যায় যে সে-কালে পুষ্পক রথ বা অন্য কোন প্রকারের আকাশযান বাস্তবিক ছিল না, উহা কল্পনা মাত্র, তাহা হইলেও আমাদের পূর্বপুরুষদের কল্পনার বৈচিত্র্য এবং ঐ কল্পনার বা স্তবে পরিণমনীয়তার প্রশংসা না করিয়া থাকা যায় না । বিবিধ প্রসঙ্গ—শেষ যুদ্ধ * ২৬১

  • জেপেলিন নামক আকাশজাহাজ ও অন্য কোন কোন আকাশযানে জার্মেনী যে উন্নতি করিয়াছে, তাহার সহিত জার্মেনীতে ইউরোপের অন্য কোন দেশ অপেক্ষা সংস্কৃত সাহিত্যের অধিকতর চর্চার কোন সম্পর্ক থাকিতে পারে না কি ? আমরা এরূপ বলিতেছি না ধে ইউরোপীয় আকাশ
  • যানগুলির কল্পন। সংস্কৃতসাহিত হইতে লওয়া হইয়াছে ।

কি ল ওয়া হইতেই পারে না, এমনও তো বলা যায় না । আরব্য উপন্যাসেব অণকাশে উডডায়মান ও আকাশচারী গালিচা হইতে ও রূপ কল্পনা আসিয়া থাকিতে পারে । কিছুদিন আগে কাগজে পড়িতেছিলাম যে ফ্রান্সে একরূপ কণমান নিৰ্ম্মিত হইয়াছে, যাহা হইতে এরূপ তীব্র বিষাক্ত গ্যাসপূর্ণ শেলু ছুড়া হইবে, যে, শক্ৰদের মধ্যে ঐ শেল পড়িয়া ফাটিয়া গেলেই গ্যাস মাকের মধ্যে যাইতে না যাইতেই ৫০০ গজের মধ্যে সব মানুষ মার। যাইবে । সত্যসতাই এরূপ কামান প্রস্তুত হইয়াছে কিনা জানি না। অfবার এরূপ শেলের কথাও পড়া যায়, যাহার ভিতরকার গ্যাস নিশ্বাসের সহিত গ্রহণ করিলেই শক্ররা অচেতন হইয়া পড়িবে । ইহাও অবিস্কৃত হয় নাই বোধ হয়। কিন্তু এইসব আfবক্রিয়ার গুজবের সঙ্গে আমাদের প্রাচীন সংস্কৃতশাস্ত্রের সম্মোহন অস্ত্রের খুব সাদৃশু আছে । এইরূপ বর্ণিত আছে যে সম্মোহন অস্ত্র দ্বারা শত্রুসৈন্তদিগকে সংজ্ঞাহীন করিয়া ফুেল হইত। আমাদের পূর্বপুরুষদের বাস্তবিক সম্মোহন অস্ত্র ছিল কি না, ঠিকৃ বলা যায় না। কিন্তু তাহদের কল্পনাট যে কখন-না-কখন বাস্তবে পরিণত হইবে ইহা মনে কর! যাইতে পারে । রামায়ণে নাগপাশের বর্ণনা আছে ; ভবিষ্যতে এরূপ বিষাক্ত গ্যাসপুর্ণ গোলা বা শেলু প্রস্তুত হইতে পারে, যাহা শক্রসৈন্যদিগকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত করিবে । তাহাদের চেতন থাকিবে, কিন্তু তাহার। হাত প। নাড়িতে ব। পাশ ফিরিতে পরিবে না । শেষ যুদ্ধ বৰ্ত্তমান ইউরোপীয় যুদ্ধে যেসকল জাতি প্রবৃত্ত হইয়াছে, তাহাজের কেহ কেহ এইরূপ দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ব্যক্ত করিতেছে ষে এই যুদ্ধটা এমন করিয়া করিতে হইবে, শক্রপক্ষকে এমন করিয়া বলহীন ও সৰ্ব্বস্বাস্ত করিতে হইবে, যেন ইহাত শেষ যুদ্ধ হয় । কিন্তু ইহণকে শেষ যুদ্ধ মানবীয় শক্তি কোন মতেই করিতে পারবে না । প্রথমতঃ, যদি এমনই হয় যে এই যুদ্ধের শেষে এক পক্ষ কেন দুইপক্ষই একেবারে নাস্তানবুদ ও সৰ্ব্বস্বাস্ত হইয় পড়ে, তাহা হইলেও এই-সব জাতি ছাড়া পুথিবীতে, ইউরোপে, আর ও তে। জাতি আছে। তাহাদের পরস্পরের মধ্যে কি জাতিগত বিদ্বেষ,