পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা | বারাস্তরে অন্য অস্ত বিষয়ে আলোচনা করি বার ইচ্ছা রহিল । গ্রেভলি সাহেবের অনুমতি অনুসারে এই প্রবন্ধ প্রকাশিত হইল । শ্ৰীদেবেন্দ্রনাথ মিত্র, এল, এ-ঞ্জি । প্রাচীন ও নবীন সাহিত্য ইউরোপে প্রাচীন সাহিত্য পড়িবার দিন ফুরাইয়া আসিয়াছে। শেলি, কীট্‌স, গ্যয়টের কথা ছাড়িয়া দিই, সেদিনকার কবি টেনিসন, ভিক্টর হুগো প্রভূতিই এখন অত্যন্ত সেকেলে বলিয়া গণ্য । এখনকার সাহিত্য-মজলিসে র্তাহীদের ডাক পড়ে ন!—নিতান্ত ছেলেছোকৃরার দল কাচা বাশের বঁাশ লইয়া দিব্য নিঃসঙ্কোচে সেথানে প্রবেশ করে এবং আসন গ্রহণ করে । তাহণদেরি গলায় মাল্য পড়ে --তাহাদেরি অভ্যর্চনায় রসিকচিত্তাকাশে আনন্দের রোস্নাই জ্বলিয় উঠে । পুরাণে কবিদের প্রেতাত্মার ছায়া মজলিসের প্রাচীরের বাহিরে বাহুড়ের মত পাখী ঝটুপটু করিয়া ঘুরিয়৷ বেড়াইতে পারে, কিন্তু তাহাদের সেই ছায়ার মধ্যে সাধ করিয়া ধরা দেয় কে ? পিরামিডের শতস্তর পাষাণপঞ্জরের মধ্যে যেমন কত কত সুন্দরী রাণী চিরনিদ্রায় নিমগ্ন, সেক্টরূপ প্রাচীন কবিদের যত সৌন্দর্য্য থাকুকৃ আজকালকার মানুষ তাহাদিগকে শতস্তর বিস্মৃতি-লোকের মধ্যে লুকাইয়। রাখিয়াছে । ক্রমশই তাহদের সৌন্দর্য্য সম্বন্ধেও মানুষের মনে সংশয় জন্মিতেছে। শেক্সপীয়রের কবিতাই যে সৰ্ব্বোৎকৃষ্ট কিম্ব র্যাফেলের চিত্রের যে তুলনা মিলেনা, একথা সম্পূর্ণরূপে স্বীকার করিতে এখনকার-কালের লোকের আপত্তি আছে। এ-সকল পুত্তলিকাকে ফুলের মালা, দীপের আলো এবং ধূপের দ্বারা আচ্ছন্ন করিয়া সাহিত্যের দেউলে চিরকালের মত অধিষ্ঠিত করিয়। রাখিবার বিরুদ্ধে মানুষ বিদ্রোহ ঘোষণা করিতেছে। এই বিদ্রোহকে কোনমতেই নিন্দনীয় বলিতে আমার মন সরে না। কারণ যা-কিছু বাধা—বাধা মত, বাধ৷ সংস্কার—তাহারি বিরুদ্ধে যে এই একালের বিদ্রোহ । প্রাচীন ও নবীন সাহিত্য so ○○ § ফস্তরাজ্যে একালের বিজ্ঞান বড় বড় সংস্কারের বদ্ধ জলের মধ্যে ঘূর্ণিপাকের স্বষ্টি করিয়াছে। বস্তুকে যে অত্যন্ত স্কুল ইন্দ্রিয়গম্য বলিয়া আমাদের বিশ্বাস ছিল সে বিশ্বাস একেবারেই ভ্রান্ত বলিয়া প্রমাণিত হইয়াছে। ক্রমে কোন একদিন জড়ে চেতনে ব্যবধান ঘুচিয়া গেলে--এই বাস্তব স্কুলজগৎ আমাদের চোখের, উপর বাম্পের মত মিলাইয়। যাইবে । মানসরাজ্যেও আধুনিক psychic researchesএর জন্য সংস্কারের আগণ থসিতে সুরু হইয়াছে। অামাদের মস্তিষ্কের দ্বারাই যে সকল মননক্রিয়। সম্পাদিত হয়, তাহা নহে—আমাদের অব্যক্তচেতন লোকের কাজ বড় সামান্য নহে। কিন্তু সে লোকের খবরাখবর কেমন করিয়া পাওয়৷ যাইবে ? সে এক রহস্যময় স্বপ্নরাজ্য ! বাহিরে অন্তরে বাধা সংস্কারের পরাভব ঘটিতেছে বলিয়াই একালে সমাজেও চিরন্তন সনাতনী প্রথা ও ব্যবস্থা আর রাজত্ব করিতে পাইতেছে না। সমাজের পাকা বনিয়াদে ঘন ঘন ভূমিকম্প সুরু হইয়াছে। স্ত্রীপুরুষের সম্বন্ধ বহুকাল ধরিয়া একরকম স্থির ও নির্ণীত হইয়া গিয়াছে বলিয়াই তো আমরা জানি। কিন্তু এ কালের স্ত্রীলোক সে-সকল সংস্কারকে সত্য বলিতে মোটেই রাজি নয়। স্ত্রীলোকের ক্ষেত্র অন্তঃপুরে, পুরুষের ক্ষেত্র বহিঃসংসারে—স্ত্রীলোক কেবল গর্ভধারণ করিবে, সন্তান পালন করিবে, পতিসেবা করিবে এবং গার্হস্থ্য জীবন যাপন করিবে—এই সনাতন ব্যবস্থাকে এ কালের স্ত্রীপুোক অস্বীকার কfরতেছে । বহির্জগৎটাকেও পুরুষের সঙ্গে তাঁহাদের সমানভাবে ভাগ করিয়া দখল করা চাই । এতকাল সেখানে পুরুষের স্থষ্টিক্রিয়া দেখ। গিয়াছে, এখন সেখানে স্ত্রীলোকেরও স্বজনী-প্রতিভা কাৰ্য্য করিবে । শিল্প, সাহিত্য, দর্শন, সমাজ ও রাষ্ট্রতত্ত্বে স্ত্রীলোক তাহার দিকৃটাকে জাগাষ্টয়া তুলিয়া এক নূতন তীব-জগৎ রচনা করিবে । এ এক আশ্চর্য্য আন্দোলন । আধুনিক যে কোন সাহিত্যগ্রন্থ খুলিলেই এই বিদ্রোহের বাণী সৰ্ব্বত্রই উদেঘাষিত হইতে দেখিতে বিলম্ব হয় না। ইবসেন, হাউপ টুমান মেটারলিঙ্ক, বানার্ড-শ, এচ, জি ওয়েল্স—ইহঁাদের নাটকের বা উপন্যাসের ধাক্কায় সমাজের