পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૭૧૭ হইতে পারে, তাহাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নাই। শুধু ব্রিটিশ সাম্রাজ্য রক্ষা এবং উহার অঙ্গীভূত ভারতবর্ষ রক্ষার জন্যও ভারতবাস দিগকে যুদ্ধক্ষম করিতে হইবে, বর্তমান যুদ্ধ হইতে যে ইংরেজ রাজপুরুষ এই শিক্ষা লাভ করেন নাই, তাহার বুদ্ধির প্রশংসা করা যায় না । সাহচর্য্য ও সমকক্ষত৷ যাহা হউক, এসকল হইতেছে ভবিষ্যতের কথা । ভূপেন্দ্র বাবু এখন আমাদিগকে যে রাষ্ট্রীয় আদর্শের কথা বলিতেছেন, তাহা, “সাহচর্য্য, সমকক্ষতা, সমান অংশীদারিত।” অর্থাৎ ইংরেজের শাসনকৰ্ত্ত এবং ভারত বাসীরা তাহণদের অধীন প্রজ, ঈহ! আদর্শ নহে । আদর্শ এই যে ভারতবাসা ও ইংরেজ সমান সমান, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সকল ব্যাপারে ও দেশে ইংরেজের যেমন অধিকার, ভারতবাসীর ও তেমনি অধিকার। বৰ্ত্তমান সময়ে এরূপ সমকক্ষত, সাহচর্য্য, সাম্য বা সমান অধিকার নাই । ভবিষ্যতে যে হওয়া আসস্তব, তাহাও বলা যায় না। কারণ অসম্ভব কেবল তাহাই যাহা অচিন্ত্য । আঁধার আর আলে৷ ভবিষ্যৎ কোন সময়ে এক হইয়৷ যাইবে, ইহা অসম্ভব ; কারণ ইহা অচিন্ত্য। কিন্তু ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে ভারতবাসী ও ইংরেজ সমান হইয়৷ যাইবে, ইহ। ওরূপ অচিন্ত্য নহে, এবং বর্তমান সময়ে ও কোন কোন ক্ষুদ্র বিষয়ে ভারতবাসীর ও ইংরেজের অবস্থ৷ ও অধি#1র আইনত এবং কার্য্যত এক । অতএব ভূপেন্দ্রবাবুর আদর্শ বাস্তবে পরিণত হইতে পারে না, এমন কথা কেহই বলিতে পারে না । পক্ষান্তরে ইহা যে হইবেই, বা সহজে হইতে পারে, বলা যায় না । সমকক্ষ তা, সাহচর্যা বা সমান অধিকারের অর্থ বুঝিতে চেষ্টা করিলেই তাহ প্রতীয়মান হইবে । তাহাও সাম্যের অর্থ ভারতবাসী ও ইংরেজের সমান অধিকার হইতে হইলে ভারতবর্যে দেশী লোকেরও লেফটেনেণ্ট গবর্ণর, গবর্ণর এবং গবর্ণর-জেনেরাল হওয়া চাই । দেশী লোকেরও অধস্তন সৈনিক কৰ্ম্মচারী হইতে আল্পস্ত করিয়া [ ১৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড প্রধান সেনাপতি বা জঙ্গী লাট হওয়৷ চাই । ভারতবর্ষ রক্ষার জন্য বহু রণতরী ও বহু আকাশযানের প্রয়োজন হঠবে। তাহাতেও নিম্নপদস্থ কৰ্ম্মচারী হইতে প্রধান নৌসেনাপতি ও আকাশসেনাপতি ভারতবাসীরও হওর। চাই । ইংরেজ ও ভারতবাসীকে সমান হইতে হইলে, ইংরেজ যেমন নিজের দেশের সব আইন নিজের করেন, —ট্যাক্স বসান, রদ করা, বাড়ান কমান, সব নিজের। করেন, আমাদের ও তেমনি অধিকার হওয়া চাই ; অর্থাৎ ব্যবস্থাপক সভাগুলিতে দেশী লোকের প্রভুত্ব হওয়৷ চাই । কিন্তু কেবল তাহ হইলেই ইংরেজ ও ভারতবাসী সমান হইবে না । বৰ্ত্তমান সময়ে বিলাতের পালেমেণ্ট ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের কৰ্ত্ত । বিলাতের লোকেরাই ইহার হাউস্ অব ক্ষযন্স নামক অংশের সত্য নিৰ্ব্বাচন করেন, এবং হাউস্ অব লর্ডস নামক অংশের সভ্য বিলাতের অভিজাত ও পাদরীরাই হন । অন্য দেশের সহিত বিলাতের যুদ্ধবিগ্রহ ও শাস্তি এই বিলাতী পালে মেণ্টই কার্য্যত করেন । ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের উপনিবেশগুলির বা ভারতবর্যের ইহাতে কোন হাত নাই । অথচ যুদ্ধ ঘটিলে বায়ু ভারতবর্ষকে ও করিতে হয়, ক্ষতি ভারতবর্যেরও হয়। ভারতবর্যের রাজস্ব সম্বন্ধীয় ব্যবস্থারও চূড়ান্ত নিৰ্দ্ধারণ এই পালে মেন্টেই হয়। ভারতবর্ষের সেক্রেটর অব ষ্টেটু এবং তাহার মন্ত্রসভা বিলাতী মন্ত্রিসভাই নিযুক্ত করেন। এ সকল বিবয়ে ভারতবর্ষের মতামত গণনার মধ্যে আসে না । কিন্তু সাম্য হইতে হইলে, একটি সাম্রাজ্যিক পালে মেণ্ট স্থাপিত হওয়া উচিত। তাহাতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রত্যেক অংশের সভ্য নিৰ্ব্বাচন ক্ষমতা থাকা দরকার । সেই সব নির্বাচিত সভ্যদিগের মধ্য হইতে সাম্রাজ্যিক মন্ত্রিসভা গঠিত হইবে। সুতরাং ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রধান মন্ত্রী, রাজস্বমন্ত্রী, পররাষ্ট্রসচিব, প্রভূতি এখন যেমন কেবল বিলাতের লোকেই হইতে পারে, সৰ্ব্বত্র সাম্য স্থাপন করিতে হইলে ভারতবাসী বা ঔপনিবেশিকদিগেরও সেইরূপ প্রধান মন্ত্রী প্রভৃতি হইবার সুযোগ হওয়া আবশ্যক । সমগ্র ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রধান সেনাপতি ও নৌসেনাপতি এখন