পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○bペ তুমি মিথ্যার বারখানা খুলিয়াছ, কেহ বলিতেছেন, তুমি সত্যের দেবতাকে বন্দী করিয়াছ । বাস্তবিক কোন দেশ কি পরিমাণে সত্য বলিতেছেন বা সত্য গোপন করিতেছেন বা সত্যের অপলাপ করিতেছেন, তাহ। আমরা স্থির করিতে অসমর্থ ; কারণ এরূপ কার্য্যের জন্য যথেষ্ট উপকরণ নাই। "তাহ স্থির করিতে ন পারিলেও ইহা নিশ্চিত বলা যায় যে কেহ না কেছ মিথ্যা বলিতেছে। তাহা ন হইলে পরস্পরকে এত গালাগালি চলিত না । সুতরাং, এখন বোধ হয় লর্ড কর্জন বুঝিতে পারিয়াছেন যে মিথ্যার স্বষ্টিতে কেবল প্রাচ্য জাতিরাই পারদর্শী, ইহ। বলা চলে না। - ঘু সাধু যিতে ও মল্লযুদ্ধে যেমন প্রতিদ্বন্দ্বীর কেবলমাত্র লড়ে, কিন্তু পরস্পরকে গালগালি দেয় না, যুদ্ধও সেষ্টভাবে চলিলে মন্দ হয় না। এখন যেরূপ চলিতেছে, ইহা কতকট। যেন অঙ্গদ-রায়বারের মত । অথবা ধীবর জাতীয়। কোন কোন অঙ্গনার সংগ্রামের মত । বঙ্গে শিক্ষার বিবরণ ১৯১৩—১৪ সালের শিক্ষ। বিভাগের রিপোর্টের উপর বাংলা গবর্ণমেণ্ট যে মন্তব্য প্রকাশ করিয়াছেন তাহ। হইতে জানা যায় যে ঐ বৎসর সাধারণ সরকারী কলেজ গুলিতে ৩১৭১ জন ছাত্র ছিল। পূৰ্ব্ব বৎসর ছিল ২৯০৫ । প্রাথমিক বিদ্যালয় সমূহে ১৭৭১৬ জন ছাত্র কমিয়াছে। প্রাথমিক বিদ্যালয় সমূহে বালিকার সংখ্যা কমিয়াছে ২৯২০ । দেশের লোকসংখ্যা যথেষ্ট পরিমাণে না বাড়িলেও প্রতি বৎসরই কিছু বাড়িতেছে । কিন্তু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র ও ছাত্রীর সংখ্যা বাড়া দুরে থাকু, কমিয়াই চলিতেছে । fরপোটে দেখা গিয়াছিল যে সে বৎসর ১৯১১–১২ অপেক্ষ। প্রাথমিক বিদ্যালয় সমূহে ১১৬৯০ জন ছাত্র কমিয়াছিল । এ বৎসর আবার আরও কমিয়াছে। শিক্ষণবিভাগ অবশু বলিতেছেন যে অকৰ্ম্মণ্য কতকগুলি পাঠশাল উঠিয়া যাউক না, বাকীগুলি খুব ভাল হইবে। কিন্তু ক্রমশ কমিতে কমিতে কটি বাকী থাকিবে, তাহ বলা যায় না। তাহা ছাড়া, নিশ্চিন্তপুরের রামচন্দ্র ভট্টাচার্য্যের ছেলেরা > s> ミー>○弧 প্রবাসী—মাঘ, ১৩২১ [১৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড যদি ভাল স্কুলে পড়ে, তাহ হইলে গরীবনগরের কৃষ্ণদাস মণ্ডলের ছেলের। যে যেমন-তেমন একটা পাঠশালাতেও পড়িতে পাইতেছে না, তাহাতে তাহীদের সাস্তুন দেওয়া যাইবে কেমন করিয়৷ ? গবর্ণমেণ্ট সকল গ্রাম হইতেই খাজনা পান। সুতরাং সকল স্থানের প্রজারই শিক্ষাবিভাগের সেবা পাইবার অধিকার অাছে। বৰ্দ্ধমানে বন্য হওয়ায় কয়েক শত পাঠশাল উঠিয়৷ গিয়াছে বলিয়া মস্তব্যে লিথিত আছে। কিন্তু বিশেয চেষ্টা করিয়া সেই গুলি কেন পুনঃস্থাপিত হইল না, তাহা লিখিত হয় নাই। কোন বৎসর পশ্চিমবঙ্গে বদ্যা, কোন বৎসর পুর্ববঙ্গে দুর্ভিক্ষ, এইরূপ কোন না কোন কারণে প্রতি বৎসরই কতকগুলি বিদ্যালয় উঠিয়। যাইতে পারে। কিন্তু সেগুলি বিশেষ চেষ্টা ও বিশেয অর্থব্যয় করিয়া পুনঃস্থাপন ও রক্ষণ করাই শিক্ষা বিভাগের কৰ্ত্তব্য । কতকগুলি বিদ্যালয় কি কারণে উঠিয়া গেল, তাহ বলিলেই শিক্ষাবিভাগের কৰ্ত্তব্য শেয হইল না। যদি বন্যায় কতক গুলি পুলিশের থানা ও জেল ভাসিয়া যাইত, তাহা হইলে নিশ্চয়ই অবিলম্বে সেগুলি আবার নিৰ্ম্মিত হইত। প্রজাবর্গের মঙ্গলের জন্য পুলিশের থান ও জেল যেরূপ দরকার, শিক্ষালয় তাহার চেয়ে কম দরকারী নহে। ইংরেজীতে একটা কথা আছে, যে একটা স্কুল খুলে সে একটা জেল বন্ধ করে। ইহা অক্ষরে অক্ষবে সত্য ন হইলেও, ইহা ধ্রুব স তা, যে, দেশে অপরাধীর সংখ্যা কমাইতে হইলে শিক্ষার বিস্তারের প্রয়োজন । যে কোন দিকে উন্নতি চান, তাহার জন্য যে শিক্ষা অবশ্যক, সে কথা না হয় এথন নাই ধরিলাম । আমেরিকার বিখ্যাত শিক্ষাবিধায়ক (educationist) হোরেস্ ম্যান বলিতেন যে, কি আর্থিক অবস্থা উন্নতির জষ্ঠ, কি নৈতিক উন্নতির জন্য, কি বুদ্ধিবৃত্তির উৎকর্ষসাধনের জন্য, শিক্ষ। যেমন মানুষের সহায় এমন আর কিছুই নহে। কুসংস্কার, বিচারবর্জিত ভ্রান্তধারণা, এবং মিথ্যা তর্ক অজ্ঞতার নিত্যসহচর বলিয়৷ ইহা কখনও জাতীয় কল্যাণ উৎপাদন করিতে পারে না ; বরঞ্চ, ইহা হইতে সমাজের বিপদাশঙ্কাই থাকে, এবং ইহা সমাজকে সুশৃঙ্খলভাবে কল্যাণের পথে অগ্রসর হইতে দেয় না । হোরেস ম্যান আইনভঙ্গজনিত অপরাধ এবং অজ্ঞতায়