পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ebr8 করাইতেছেন, ব্রিটিশ গবৰ্ণমেণ্টও তেমনি সরকারী কাগজপত্রের লক্ষ লক্ষ খণ্ড ছাপিয়া সৰ্ব্বত্র প্রচার করিতেছেন যে যুদ্ধের জন্য ইংলণ্ড দায়ী নহেন। সকলেই আপনাকে নিদোষ প্রতিপন্ন করিবার চেষ্টা করিতেছেন । আমরা এই চেষ্টার মধ্যে মানবহৃদয়ের একটি গভীর আকাঙ্ক্ষার পরিচয় পাইতেছি। আমেরিকার সম্মিলিত রাষ্ট্র ও ইটালী ছাড়া পৃথিবীর আর সমুদয় প্রবলতম দেশ যুদ্ধে যোগ দিয়াছে। আমেরিকা কোন পক্ষই অবলম্বন করিবে না ইহা নিশ্চিত বলা যাইতে পারে । ইটালীরও নিরপেক্ষ থাকিবারই সন্তাবন বেশী। সুতরাং এই যে উভয়পক্ষ পৃথিবীর লোককে নিজের নিজের নির্দোষিতায় বিশ্বাস করিতে বলিতেছে, ইহা কি উদ্দেশ্যে, কিসের জন্য ? পূর্বেই বলিয়াছি এই চেষ্টার দ্বারা যুদ্ধে কোন পক্ষেরই দলবৃদ্ধির সম্ভাবনা নাই। যদি বলেন যে যুদ্ধের পর যাহাতে দোধী পক্ষকে মধ্যস্থের একঘোর্যে করে, তজ্জন্ত এই চেষ্টা হইতেছে, তাহ হইলে, বলি, যাহার দোষ জগজ্জ্বল্যমান এরূপ কোন দেশ ও শক্তি থাকিতে কখন একঘোর্যে হয় নাই । ১৮৭০ খৃষ্টাব্দে ফ্রান্সে জার্মেনীতে যুদ্ধ হইয়াছিল। তখন ইংলণ্ডের অন্ততম শ্রেষ্ঠ লেখক কালর্ণইল ফ্রান্সকে ইন্দ্রিয়পরায়ণ পচা ও অন্যায় আক্রমণকারী জাতি বলিয়া এবং জার্মেনীর প্রশংসা করিয়৷ এক পত্র রচনা করেন, ও তাহ। টাইমস্ সংবাদপুত্রে ছাপা হয়। তাহ তাহার গ্রন্থাবলীতে এখনও মুদ্রিত হইতেছে। কিন্তু ফ্রন্স বা জার্মেনী কি সঙ্গীবিহীন হইয়াছে ? রুশিয়া ও জাপানের যুদ্ধে কোন না কোন পক্ষ দোষী ছিল । কিন্তু ত{হাদের বন্ধু বা সহচর কি কেহ নাই ? ইতিহাস হইতে আরও নানা দৃষ্টান্ত দিরা দেখান যাইতে পারে যে জাতিতে জাতিতে বন্ধুত্বের ভিত্তি নির্দোষিত নহে ; নিজ নিজ স্বার্থ ও সুবিধা এবং শক্তে ভক্তি ইহার ভিত্তি। তবে উতয়পক্ষের এই ষে জগৎব্যাপী স্বীয় স্বীয় সাধুত প্রমাণের চেষ্টা, ইহার অর্থ কি ? আমাদের মনে হয়, মাকুবের প্রভুত্ব, শক্তি, ঐশ্বৰ্য্য, জ্ঞান যতই হউক না, সে অন্ত মামুষের ভালবাসা অকুরাগ না পাইলে সুখী হয় না । এইজন্স অতি দুরাচার লোকেরাও, টাকা থাকিলে, প্রবাসী—মাঘ, ^రిషి ) [ ১৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড মোসায়েব পোষে ; নিজের সম্বন্ধে দুটা ভাল কথা ন৷ শুনিলে তাহারা বীচে কেমন করিয়া ? মানুষের হৃদয়ের এই অকুরাগলিপ্ত। সমাজের অন্যতম ভিত্তি । অপরের প্রতি পাইবার এই ইচ্ছা কেহ উন্মলিত করিতে পারে ন। অহঙ্কার করিয়া কেহ কেহ বলে বটে, আমি কাহাকেও গ্রাহ করি না । কিন্তু তাহা মিথ্যা কথা । অস্ত্রশস্ত্র যথেষ্ট থাকিলেও উভয়পক্ষই লোকের অন্তমোদন ও প্রতির জন্য লালায়িত । ইহা দ্বারা বুঝ। যাইতেছে, যে যুদ্ধের ফল যাহাই হউক, প্রবলতম যোদ্ধারাও মানবসাধারণের মতকে যুদ্ধে জয় অপেক্ষা উচ্চতর স্থান দিতেছেন । পৃথিবীতে জ্ঞান ও প্রেম যত বাড়িবে, ততই এই মণিবসাধাবণের মত প্রবল হইবে, এবং শেষে ইহা জয়যুক্ত হইয়। জাতিতে জাতিতে যুদ্ধকে বিলুপ্তপ্রায় করিবে । তখন কোন দেশের মধ্যে চোর বা অন্ত অপরাধী যেমন দণ্ডনীয় ও হেয় বিবেচিত হয়, পৃথিবীর মধ্যেও তেমনি অন্তর্জাতিক দস্থ্যতা বা অষ্ঠ অপরাধ দণ্ডনীয় ও হেয় বিবেচিত হইবে। শিক্ষালয়ে ছাত্রের সংখ্যা একএকটি স্কুলকলেজে নির্দিষ্টসংখ্যক ছাত্রের বেশী যাহাতে না থাকে, আমাদের দেশে এরূপ চেষ্টা কিছুদিন হইতে চলিতেছে। অথচ সংখ্যা এরূপ নির্দিষ্ট করিয়া দিলে উদ্বত্ত ছাত্রের কোথায় পণ্ডিবে, তাহার কোন ব্যবস্থার উল্লেখ দেখা যায় না । যদি বুঝিতাম, ষে, যিনি ছাত্র কমাইতে বলিতেছেন, তিনি স্কুলকলেজ বাড়াইয়া দিতেছেন, তাহা হইলে আপত্তি করিতাম না। আমাদের এই গরীব নিরক্ষরদেশে ছাত্র কমাইবার এরূপ চেষ্টা বড় অনিষ্টকর । ধনী এবং শিক্ষণলোকে উজ্জ্বল দেশেও ছাত্রসংথ্য। এরূপ সীমাবদ্ধ নহে । অথচ সেখানে গবর্ণমেণ্ট ও দেশবাসী উভয়েই নূতন নূতন শিক্ষালয় খুলিতে ইচ্ছুক ও সমর্থ ! আমরা, একএকটা কামরায় যত ইচ্ছা ছেলে, খোয়াড়ে গোরু পুরার মত, ভরিয়া দিতে বলি না। আমরা বলি, যত ছেলে বাড়ে, তত কামরা বাড়াও, শ্রেণীর বিভাগ বাড়াও, শিক্ষক বাড়াও । যখন আর ইমারৎ বাড়ান বা কামরা বাড়ান চলিবে না, তখন