পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] কৃষ্ণ বা ঈষৎরক্ত গ্রানাইট প্রস্তরের পর্বত । মিশরের নাইল শুষ্কপ্রায়—নদীবক্ষ অসংখ্য শিলাখণ্ডে ও গিরিশৃঙ্গে পরিপূর্ণ। পশ্চিম প্রান্ত হইতে প্রবলবেগে তুষারধবল জলরাশি বহির্গত হইয়া ক্ষুদ্র স্রোতম্ব তীর আকার ধারণ করিয়াছে। যে দিকে তাকাই সেচ দিকেই পাহাড় । ড্যাফুের পূৰ্ব্ব প্রান্তে মিশরের ভাগে একটা সুবিস্তৃত উদ্যান । ইহার সবুজ রঙের শস্যপূর্ণ ক্ষেত্রসমূহ উপর হইতে মকৃমলের গালিচার বিভিন্ন অংশের মত দেপাইতেছে। পশ্চিম প্রান্তে “ড্যাম’-কারখানার কার্য্যালয় । ভারতবর্ষের নদীজল ধরিয়া রাখিবার জন্য বিভিন্ন স্থানে অনেক ড্যাম, য়্যানিকট দেখিয়াছি । কটকের মহানদীর য়্যানিকাট প্রসিদ্ধ। কিন্তু নাইলের এই আসে। . য়ান-“বারাঞ্জে”র ( Barrage ) তুলনায় উক্ত থেলামার সামগ্ৰী মাত্র । ১৮৯৮-১৯০২ সালের মধ্যে ইহা নিৰ্ম্মি ত হইয়াছে। গ্রীষ্মকালে নীল নাইলের প্লাবন বন্ধ হইয়া যায়। তখন সমস্ত নাইলই শুষ্ক প্রায় হইয়া পড়ে। অথচ বর্ষাকালে নাইলের জল অপৰ্য্যাপ্ত। জলের সঙ্গে যে মাটি ধুইয়া আসে তাহা ও প্রচুর । এই নূতন পলি মিশরের কুলে কুলে সতেজ মৃত্তিকা ও কৃষিভূমির গঠনে যৎপরোনাস্তি সাহায্য করে। কিন্তু বৰ্ষাঋতু ত চিরকাল থাকে না । তখন মিশরে জলকষ্ট ও মাটি-কষ্ট, সুতরাং কৃষি-কষ্ট আরম্ভ হয়। এজন্য বর্ষাকালের সমস্ত জল প্রবাহিত হইয়া সমুদ্রে চলিয়। যাইবার পূৰ্ব্বে নিউবিয়ার এই ‘হুদে জল অ{ট কাইয়। রাখিবার কৌশল অবলম্বিত হইয়াছে । গ্রীষ্মকালে এই জল নিয়মিতরূপে কৃষিক্ষেত্রের প্রয়োজন কুসারে ছাড়িশা দেওয়া হয় । সুতরাং বর্ষ। চলিয়া গেলেও বর্ষার উপকারিত; মিশ্র প্রদেশে সৰ্ব্বদাই থাকে । বারমাস ধরিয়! কৃষকের নদীর জল পায়— সহজেই ক্লষিকৰ্ম্ম সুচারুরূপে চলে । এই ড্যাম জগতের মধ্যে সৰ্ব্ববৃহৎ জলরক্ষক। প্রায় ১৫ মাইল ইহার দৈর্ঘ্য—উচ্চতা ১৫০ ফুট । ড্যাম নিম্ন দেশে প্রায় ১• • ফুট বিস্তৃত এবং শিরোদেশে প্রায় ৪০ ফুট বিস্তৃত । আগাগোড়া গ্রানাইট পাথরে তৈয়ারী। অতএব বলা যাইতে পারে একটা প্রকাণ্ড গ্রানাইট পৰ্ব্বত আনিয়া নাইলের উপর ফেলা হইয়াছে। রামচন্দ্রের কবরের দেশে দিন পনর 8 > ○ ধুেতুবন্ধে হনুমনের যে এঞ্জিনীয়ারী দেখান হইয়াছে মানব-সাহিত্যে সে অদ্ভুত শিল্পনৈপুণ্য এবং অসমসাহসিক কার্যোর আর পরিচয় নাই । বাস্তব জগতের এই বিপ্লাট নদ-বন্ধনের কৌশল দেখিয়া আদি কবি বাল্মীকির কল্পনা • শfও'র ধারণ করা গেল । 論 এই পৰ্ব্বতাকার নাইল-বন্ধনীর তলদেশে ১৮০ টি বৃহৎ ছিদ্র আছে। এই ছিদ্র গুলির কোন কোনটা যথাসময়ে খুলিয়া দেওয়া হয়। বর্ষাকালে সবই খোলা থাকে। এই ছিদ্রের সঙ্গে গড়ান জেলপ্রবাহের পথ সংযুক্ত আছে। জলরাশি নিউবিয়ার উচ্চতর স্কুল হইতে মিশরের নদীখতে পড়িবার সময় এই জলপথগুলির উপর দিয়া প্রবাহিত হয়। আজ দেখিলাম দুইটি জলপথের ছিদ্র গুলি খোলা । একটি মধ্যবৰ্ত্তী অপরটি পশ্চিমপ্রান্তবত্তা। এই দুই জলপথের উপর দিয়৷ জলরাশি গজ্জন করিতে করিতে মিশরে নামিতেছে। শুভ্ৰ তুলা রাশি-সদৃশ শ্বেত ফেনসমূহ বহুদুরে যাইয়া জলরূপে পরিণত হইতেছে। বর্ষাকালে দার্জিলিঙ্গের হিমালয়ে য{হার। পাগলা ঝোরার উন্মাদ নৃত্য দেখিয়াছেন এবং শুভ্ৰ ফেনরাশির উত্তাল গতিভঙ্গী লক্ষ্য করিয়াছেন তাহারা নাইলের এই গর্জন ও লম্ফন বুঝিতে পরিবেন। তাণ্ডবলীলা করিতে করিতে জলরাশি আসিয়া যেখানে পৰ্ব্বওশিলায় আছড়ায় পড়িতেছে সেখানে বাপসদৃশ সুগ্ম জলকণায় শাকর স্বল্প হইতেছে। সেই জলবিন্দুর ভিতর প্রতিফলিত হইয়া স্থৰ্য্যকিরণ রামধনুর বর্ণবৈচিত্র্য উৎপাদন করিতেছে । এই রূপ জল-বিন্দুর ভিতর রামধন্থ সমুদ্র-তরঙ্গোথিত শাক মালায়ও দেখিয়াছি। ৬ামের উপর দিয়া পশ্চিমপ্রান্তে পৌছিলাম। সেখানে দূর হইতে কারখানা দেখা গেল । পরে নদীর একটা ক্ষুদ্র খালের উপর নৌকায় চড়িয়া উত্তরাংিমুখে চলিলাম। খানিকদূর যাইয়। আর একটা জলবন্ধনী পাওয়া গেল। এই জলবন্ধনীৰ দুইট। ফটক, ফটক দ্বয়ের ভিতর একটা খাল । সুতরাং লিডুবিয়ার হ্রদের পর মিশরেও একট। হ্রদ। আমাদের নেীক। মিশরের এই হ্ৰদ পার হইয়া নদীতে পড়িল । খালের ভিতর দিয়া হ্ৰদ পার হইবার সময়ে দেখিলাম—আমরা উচ্চতর জলস্থান হইতে