পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

থ সংখ্যা | তাকে দুর থেকে এক একবার দেখতে পাই তাহলে আর কিছু চাই না । নাই বা তাকে কাছে পেলাম । আমি নিজের সমস্ত হৃদয় দিয়ে তাকে ভালবাসব অণর যদি দূর থেকে দিনাস্তে এক একবার দেখতে পাই তবেষ্ট আমার সব দুঃখের উপশম হবে । এই কথা মনে হবামাত্র অfর সে স্থির থাকতে পারলে না ! একবার সেই তরুণীর মুখখনি দেখবার জন্যে তার হৃদয় আকুল হয়ে উঠল । সে শেঠঙ্গীর বাড়ীর দিকে চলুল। আমীর শেঠজীর বাড়ীর চার পাশে ঘুরে ঘুরে বেড়িয়ে কোথাও কাবও দেখা পেলে না। তখন তার মন আরও ভেঙ্গে পড়ল । বাড়ীর সামনে একটা বড় অশ্বথ গাছ ছিল । শ্রাস্ত অবসন্ত্র দেহে সেই গাছতলায় বসে পড়ল, তার অন্তরের আকুল বেদন তার অtষ্ঠ কাতর কণ্ঠে ধ্বনিত হয়ে উঠল —“তেরে আশঙ্কু মে প্যারে মেরা বালপন មិ ។ সে তার সমস্ত অন্তর দিয়ে এই গানটি গাইছিল । তার হৃদয়ের দারুণ বিষাদ ও নিরাশা তার গানের তিতর হতে ব্যক্ত হছিল। পথিক দু-চার জন পথ চলতে চলতে থমকে দাডিয়ে তার গান শুনে চলে যাচ্ছিল । হঠাৎ শেঠের বাড়ীর দোতলার একটি জানল। খুলে গেল । পথে কে এমন মধুর কণ্ঠে গান গায় দেখবার জন্তে শেঠজীর কল্প ললিতা জানলার ধীরে এসে দাড়াল । আমীরের আশ। পুর্ণ হল । তার পিপাসিত নেত্রের সম্মুখে উপাসকের আরাধ্যা দেবীপ্রতিমার মত যখন ললিতা এসে দাড়াল তখন আনন্দে তার সর্বাঙ্গ পোমাঞ্চিত হয়ে উঠল । স্বানের ঘাটে বিদ্যুচ্চমকের মত একবার যাকে দেখে সে হৃদয় হাঃিয়েছিল, আজ এক সপ্তাহ শয়নে স্বপনে জাগরণে যার চিন্তায় সে তন্ময় হয়ে ছিল, হঠাৎ তাকে সামনে দেখে অপূৰ্ব্ব আনন্দে সে আত্মহার হয়ে গেল। তার কণ্ঠের গান থেমে গেল, সে শুধু নিষ্পলক নেত্রে সেই জানলার দিকে চেয়ে রইল । ললিতাও অবাক হয়ে গাছতলায় এই অপুৰ্ব্বদর্শন যুবককে দেখছিল । তার সেই নিরুপম সুন্দর রূপ ও পরিস্কার বেশভূষায় তাকে সাধারণ ভিখারী মনে করতে পারা ষায় না, অণ বার ভদ্রলোক কে এমন করে ধুলায় বসে গান br দেওয়ানার কবর 8২৯ করে ? সে কিছুই বুঝতে পারেলি, আর বোঝবার চেষ্টাও করেনি; তার মধুর গানে তাকে একেবারে নিম্পদ করে দিয়েছিল। কিছুক্ষণ তার দুজনেই দুজনের দিকে অবাক হয়ে চেয়ে রইল। পরে মপরিচিত পুরুষ একদৃষ্টে চেয়ে দেখছে দেখে ললিত জানল। বন্ধ করে চলে গৈল। আমীরের অন্তর এক অভূতপূৰ্ব্ব আনন্দে ভরে গেল। শুধু এই উপায়ে সে তার প্রিয়তম কে দেখতে পাবে তা সে বেশ বুঝতে পারলে । সেই দিন থেকে সে তার বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গ ছাড়লে । বাড়ীতে কিংবা যে-সব প্রিয়স্থানে তার গতিবিধি ছিল সে-সব জায়গায় আর তাকে দেখা যেত না । দিনের অধিকাংশ সময় তাকে সেই গাছতলায় দেখতে পাওয়া যেত। কখন বা সে সেই জানলার দিকে চেয়ে গছ তলায় পড়ে থাকত, কথনও বা সেখানে বসে আপনার মনে গাল করত— শ। হাজাদে আলম তেরে লিয়ে জঙ্গল সাহারা বিয়া বাম ফিরে । ত থাক মলে পহিনে কপলি, সব যোগনক সামাল কিয়ে । দিন দিন তার চিত্তবিকার বাড়তে লাগল। কারে সঙ্গে কথা কওয়া মেশা সব সে ছেড়ে দিয়েছিল । স্নান অহারেরও তার কোন নিয়ম ছিল না। কত দিন হয়ত বাড়ীতে মোটে যে তই না । তার বাপের মৃত্যু হয়েছিল । ভাইরা তাকে ভালভাবে রাখবার জন্তে অনেক চেষ্টা করলে, কিছুতেই তাকে বশে আনতে পারলে না । দেখতে দেখতে চারিদিকে রটে গেল বিখ্যাত ধনী লতিফখার ছোট ছেলে উন্মাদ পাগল হয়ে গেছে । এ সংবাদে প্রয়াগের আবাল-বৃদ্ধ-বনিতার মনে আঘাত লাগল। সেই যে প্রিয়দর্শন যুবকটি সৰ্ব্বদা আমোদে আহলাদে নাচে গানে সমস্ত সহর গুলজার করে রাখত, সহসা কেন যে সে এমন পাগল হয়ে গেল কেউ তা বুঝতে পারলে না । ললিতাও এ খবর শুনেছিল। যখনি গাছতলায় দেওয়ানার গানের সুর বেজে উঠত, অমনি সে যন্ত্রচালিতের মত জানলায় গিয়ে দাড়াত। দেওয়ানার অীণন্দ্য সুন্দর রূপ আর তার এমন উন্মত্তত দেখে তুরি মণের মধ্যে কেমন করে উঠত, জানালায় দাড়িয়ে সে নিশ্বাস ফেলে ভাবত এমন