পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] ধৰ্ম্মপাল • “উত্তম ; আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করিতে হইবে।” ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ । ভিল্লমালে ইন্দ্রীয়ুধ রজনীর শেষভাগে ভিল্লমাল নগরের পূৰ্ব্বতোরণে বাদকগণ মঙ্গলবাদ্য আরস্তু করিবার উদ্যোগ করিতেছে ; তোরণে তখনও প্রদীপ জ্বলিতেছে, চতুর্থর্যামের প্রতীহারগণ অবসর প্রাপ্তির ভরসায় আনন্দিত হইয়াছে। দুরে নগরের পশ্চাদ্ভাগে গিরিশীর্ষ উযার শুভ্র আলোকে উজ্জ্বল হইয়া উঠিয়াছে, দুইএকজন নগরবাসী পথ চলিতে আরস্ত করিয়াছে, কিন্তু নগরের তোরণ-চতুষ্টয় তখনও রুদ্ধ । মঙ্গলবাদ্যের বংশীবাদক বংশীধ্বনি আরস্ত করিবণমাত্র বহিদেশ হইতে পূৰ্ব্বতোরণের কবাটে কে করাঘাত করিলেন । একজন প্রতীহার জিজ্ঞাসা করিল, “কে ?" “শীঘ্ৰ তোরণ মুক্ত কর।” “এখনও সময় হক্স নাই ৷’’ “তাহা হউক, শীঘ্ৰ কবাট মুক্ত কর।” প্রতীহার বিস্মিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিল, “তুমি কে ?” “কেন ?” “তুমি কি বিদেশী ?” “কেন বল দেখি ?” “তুমি বোধ হয় গুর্জর রাজ্যের রীতি নীতি জান না ? রাত্রি শেষ না হইলে স্বয়ং মহারাজ গুজ্জরেশ্বর আসিলেও রাত্রিকালে ভিন্নুমাল নগরের তোরণ মুক্ত হয় না ।” “রাত্রি ত শেষ হইয়। গিয়াছে ?” “এখনও আৰ্দ্ধ দণ্ড বিলম্ব আছে।” “তবে তুমি গিয়া রাজসমীপে নিবেদন কর যে, মহারাজাধিরাজ পরম ভট্টারক পরম সৌগত অশেষ-ভূপালমৌলি-মুকুটমণি”— “কি বলিলে ?” —কানাকুজেশ্বর আসিয়াছেন ।” “ভাল, আর একটু অপেক্ষা করিতে বল ।” “সে কি ?” “ঐখানে একটু বসিতে বল।” “তুমি কি ভাল শুনিতে পাও নাই ? স্বয়ং কান্যকুঞ্জেশ্বর নগরদ্বারে অপেক্ষা করিতেছেন।” ъ о 88& “অসম্ভব । তুমি শীঘ্ৰ তোরণ মুক্ত করিয়া মহারাজ নাগভট্টকে সংবাদ দাও, বলিয়। আইস যে, স্বয়ং মহারাজাধিরাজ ভিল্লাল নরপতির অতিথি ” * “ভাল ; কিঞ্চিং বিলম্বে অতিথিশালায় যাইতে বলিও ।” 鹅 তোরণের বহির্দেশে দা ড্রাইয়া যে বক্তি প্রতীহারের সহিত বা ক্যালাপ করিতেছিল, সে হতাশ হইয়া ফিরিল। পাষাণনিৰ্ম্মিত বিশাল তোরণের অনতিদূরে একখানি চতুৰ্বশ্ববাহিত বিচিত্রকারুকার্য্যখচিত রথ অপেক্ষা করিতেছিল, আগন্তুক রথের নিকটে আসিয়া সারথিকে জিজ্ঞাসা করিল, “মহারাজাধিরাজ কি জাগিয়। আছেন ?” রথের ঘন যবনিকার অন্তরাল হইতে এক ব্যক্তি কহিলেন, “হা, আমি জাগিয়া আছি। ভাতুগুপ্ত ! তুমি নিকটে আইস ।” আগস্তুক নিকটে সরিয়া গিয়া কহিল, “মহারাজ !” রথারোহী জিজ্ঞাসা করিলেন, “কোথায় আসিয়াছি ?” “ভিল্লমাল নগরে ।” “তবে যবনিক। উঠাও, আমি নামিব ।” “মহারাজ ! 'ব্লথ নগর-তোরণের বাহিরে দাড়াইয়া আছে।” “কেন ?” “তোরণদ্বার রুদ্ধ ।” “আমার আগমনসংবাদ জানাইয়াছ ?” “ই: ; কিন্তু প্রভাত হয় নাই বলিয়া তোরণ এখনও রুদ্ধ রহিয়াছে।” “গুর্জররাজকে কি সংবাদ পাঠাই মাছ ?” “পাঠাইয়াছি ; কিন্তু তাহার বোধ হয় এখনও নিদ্রাভঙ্গ হয় নাই।” এই সময়ে দিবসের প্রথম প্রহরের আরিস্তস্থচক মঙ্গলবাদ্য শেষ হইল, সশব্দে অসংখ্য লৌহকীলকবদ্ধ গুরুভার কবাটদ্বয় মুক্ত হইল । সারথি ইন্দ্রীয়ুধের আদেশ লইয়া রথ চালনা করিল, প্রতীহারগণ তাহাকে কোন কথাই জিজ্ঞাসা করিল না ; ভাতু গুপ্ত অশ্বারোহণে রথের পশ্চাতে পুর প্রবেশ করিল।