পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা । এ পর্য্যন্ত আর কোন নাটক এ ভাবে অভিনয় হয় নাই, হইবেও না! ইত্যাদি, ইত্যাদি।" তারপর লিখবে ‘আজি তাহারা অমুক স্থানের অমুক অমর দৃশ্বের ছায়াচিত্র লইয়াছেন। ‘আজ অমুক অমুক বিধায় বিশেষ বিশেষ তথ্য সংগ্ৰহ করিয়াছেন ৷ ইত্যাদি । তা হলেই বুকুন, fশন মাস পরে আমরা যখন ফিরব তথন সারা কলকে তাটাময় একটা সাড়া পড়ে যাবে, আর অভিনয়ের দিন কত লোক জায়গা না পেয়ে ফিরে যাবে ।” আমি যখন অঙ্গভঙ্গি সহকারে আমার কল্পনার তুলিতে ভবিষ্যতের চিত্র ফুটাইয়। র্তাহার চক্ষুর সম্মুখে ধরিতে ছিলাম, তিনি তখন বিস্ময়-বিস্ফারিত নেত্রে প্রশংসমান দৃষ্টিতে আমার দিকে চাহিয়৷ তাকিয়৷ ঠেস দিয়া বসিয়া ছিলেন । আর বোধ হয় কল্পনানেত্ৰে দেখিতেছিলেন প্রথম অভিনয়-রজনীর অর্জিত অসংখ্য রৌপ্যমুদ্র ও নোটের তাড়া তিনি গণিয়া লইতেছেন । আমার এরূপ অকুমানের কারণ, যে-সময় আমি আমার কল্পনার কথা বলিতেছিলাম তখন তাহার স্কুল ওষ্ঠদ্বয়ের মধ্য দিয়! চপলার চকিত বিকাশের গুণয় ক্ষণে ক্ষণে হাসির হস্কা বহিয়া যাইতেছিল । চেষ্টা করিয়াও তিনি তাহা চাপিতে পারেন নাই । আমার কথা শেয হইলে তিনি সোৎসাহে বলিয়া উঠিলেন,—“বাঃ ! বাঃ ! দেবেন বাবু আপনার কি চমৎকার বুদ্ধি ! তবে তাই করুন, তাই করুন। সাবাস বুদ্ধি, বাঃ! এমন সুন্দর মতলব আর কখনও শুনিনি।” “তবে আপনি যেতে রাজি ?” “আমি ! কি সৰ্ব্বনাশ, আমি ! আমি কোথ। যাব ? দেখুন আমার একটা বড় বিতিকিচ্ছি ব্যায়রাম আছে, মাঝে মাঝে সেটা বড় বেড়ে ওঠে ; এই-এই-ই হচ্ছে তার বাড়তির মুখ। তা আপনি একাই যান না ?” “উ-হু-হু-হু, তা হলেই সব মাটি । দুজনের এক সঙ্গে যাওয়া চাই।’ হেমেন বাবু বহুক্ষণ ধরিয়া কি চিন্ত। করিলেন। তাহার পর বলিলেন,—“কিন্তু কাজটায় বিপদের আশঙ্ক। বড় বেশী রয়েছে না ? মনে করুন যদি কেউ দেখে ফেলে ? আচ্ছ। কোথায় গিয়ে থাকবেন বলুন দেখি ?” অভিনেতা 8©Ꮔ عي يعمري محموي مصري يحمي حمصيره مصري . “ত এখনও ঠিক করিনি। রাষ্ণুে মৃৎলবট। মাথা এল তাই সকালেই আপনাকে জিজ্ঞেস করতে এসেiি এটা কাজে করলে কেমন হয় । তবে এমন একট জায়গায় যেতে হবে যেখানে কলকাতার লোক-খুব কম থাকে লুকিয়ে থাকবার মত জায়গার অভাব কি ! আর তার জঙ্গে বেশী দুরই বা যেতে হবে কেন । এই যে সেদিন ভুবন আর হরেন ধ্যাঙ্ক ভাঙলে, আমার বিশ্বাস তার কাছেই কোন পাড়াগায়ে লুকিয়ে বসে আছে আর এদিকে পুলিশ সারা সহরটি তোলপাড় করছে। আচ্ছ। রামনগরের নাম কখনও শুনেছেন ?” “না । কেন ? সেখানে কি ?” “সে জায়গাট। শীতের শেষে অর্থাৎ ঠিক এই সময় এমন নির্জন হয়ে যায় যে মরুভূমি বলেও চলে। সেখানে গিয়ে যদি আমরা অন্ত নাম ধরে বাস করি তা হলে কেউ আমাদের ধরতে পারবে না। আর রামনগরের পাশ দিয়ে একটা ছোট নদী বয়ে গেছে, সকাল সন্ধ্যায় সেই নদীর ধারে বেড়ালে আপনার শরীরও বেশ সুস্থ হবে ।” “আমি একটুও অসুস্থ নই, সেই অজ পাড়াগায়ে আমার শরীর সারতে যাবার একটুও দরকার নেই। আর তাই কি দু’একদিন–তিন তিন মাস, বাবা ! বহু তর্কবিতর্কের পর হেমেন বাবু বললেন কথাট। তিনি একবার ভাল করিয়া ভাবিয়া দেখিবেন অর্থাৎ কিনা দ্বিতীয় পক্ষের'সহিত পরামর্শ করিবেন এবং পরদিন সে চিন্তার ফলাফল জানাইবেন । ( २ ) বহু তর্ক করিয়া, বর্ণনার তুলিতে ভবিষ্যতের চিত্র উজ্জ্বল করিয়া অঙ্কিত করিয়া, অবশেষে হেমেন বাবুর সম্মতি পাইলাম । তাহার পর সপ্তাহকালের মধ্যেই আমরা শকট আরোহণে ষ্টেসনে আসিয়া. উপস্থিত হইলাম। দুইখানি টিকিট কিনিয়া যখন আমরা গাড়ীতে আসিয়া বসিলাম তখন হেমেন বাবুর মুখের যে ভাব দেখিয়াছিলাম তাহ। জন্মে কখনও ভুলিতে পারিব না।—এমন শোক তাহার প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুতেও দেখা যায় নাই ! কি করুণ সে