পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] সে যেন উত্তর দ্বিধার জন্ত এবং আদেশ অনুসারে কার্য্য করিবার জন্য প্রস্তুত । সকাল বেলায় নীরদবাবু যখন আফিস যাইবার ভয়ে শিহরিয়া উঠিয়া চোখ মেলিতেন তখন দেখিতেন তাহার ভূতাটি মাথার শিয়রে দাড়াইয়া আছে। 象 বাবু ডাকিলেল-“বাহাদুর ।” উত্তর হইল “বাবু সাব ।” “পানি দেও।” "বহুৎ আচ্ছা ।” ঝড়ের মত উড়িয়া সে কাজ করি ত,-আদেশ মাত্রই অমনি কাজ সম্পন্ন, বাঙ্গালীর মত উঠিত নড়িতে বসিতে তাহার মাস কাবার হইত না। বাহাদুর কার্য্যতৎপরতা ও কার্য্যক্ষম তার মূৰ্ত্তিমান পরিচয় । রবিবার দিন বাবুর ছুটি থাকিত । সেই দিন বাহাদুর তাহার বাবুর সহিত অনেক সুখদুঃখের কথা বলিত । আর নীরদবাবু শুনিতে শুনিতে তাহার প্রভুভক্ত ভূতাটির মুখের দিকে চাহিয়া থাকিতেৰ । কথা ত বলিত তাহার মাথা আর মুণ্ড, জগতে সে ভাবিত কেবল একজনের জন্য এবং কথাবাৰ্ত্তী সব সেই এক জনের সম্বন্ধেই । “আমার একটা নানী অাছে।” বাবু—“একদিন আনিস, আমি তাকে দেখব।” বাহাদুর একটু আশ্বাস পাইয়া বেশ রসাইয়ী রসাইয়। তাহার নানার কথা বলিতে অৱিস্ত করিল—বলিল— “বড় ভাল আছে বাবু। এমন ভাল নানী আমি দেখেছে না” বলিয়া যেন সে বেশ একটু আনন্দ পাইল । কঠোর বাহুবলের মধ্যে কোমলতার স্নিগ্ধ প্রস্রবণ দেখিয়া নীরদবাবুর কৰ্ম্মক্লান্ত কেরানীজীবনেও একটু বেশ আনন্দ হইল, স্নেহ জানাইয়া জিজ্ঞাসা করিল, “তার বিয়ে দিবি না ?” কথাটা শুনিয়া বাহাদুর খানিক চুপ করিয়া থাকিল। তাহার মুখ চোখ ক্রমে নীল হইতে আরম্ভ হইল। অনেক দিন সে এ কথা ভাবিয়াছে। সে ভাবিয়াছে তাহার নানীর বিবাহ দিলে তাহার কী হইবে। সে ক্ষণমালুও এ চিন্তাটা মনোমধ্যে রাখিতে পারিত না যে এমন দিনও আীিতে পুরে যখন সে এবং তাহায় নানী দুই জন অনেক দিনের ع در ۹ متر s "مره ۳ ه . পরিহাস Öማ জন্য পরস্পরকে না দেখিয়া থাকিতে માઃિ ভাবিয়া । ভাবিয়া সে স্থির করিয়াছে যে বিবাহ দিলেই নানীকে, পরের ঘরে যাইতে হইবে—অতএব তাহার বিবাহ দেওয়া হইবে না—তাহার প্রতিজ্ঞা দৃঢ় করিবার জন্য সে ভাবিয়া রখিয়াছে, যে তাহার নানীকে বিবাহু করিতে চাহিবে. তাহার মাথাটি কুকরী দ্বার। দ্বিখণ্ডুিত করিবেই করিবে। বাবু প্রশ্নে সেই সমুদয় কষ্টকর চিন্তা বাহাদুরের মনে উদয় হইতে লাগিল। তাহার মুখ চোখ লাল হইয়৷ শেষে দুই ফোট। তপ্ত অশ্রু তাহার কঠোর গণ্ডস্থল বহিয়৷ পড়িল—তাড়াতাড়ি মুছিয়া ফেলিয়া সংযত হইয়া বলিল “ন। বাবু। কভি নেহি । সাদী দিবে না। হামার নানীকে ছোড়তে পারবে না বাবু।” নীরদবাবু সব দেখিলেন ও বুঝিলেন। " পাৰ্ব্বত, প্রদেশের নিৰ্ম্মম দৃষ্ঠের মাঝে এই পাহাড়িয়ার চোখের জল তাহার মনে অপার শান্তি আনয়ন করিল । বাঙ্গালা দেশের স্বদুর পল্লীতে নিজের “নানীর” মুখখানি মনে পড়িয়া দেখিতে দেখিতে দু ফোটা চার ফোটা”অশ্রু শেষে অজস্রধারায় ঝরিয়া বাবুর ও বুক ভূপাইঃ দিতে লাগিলশ (8) @ মে মাস । চায়ের বাগানে কাজের ভারি ভিড় । রোজ প্রায় ১০০ • পাউণ্ড চা প্যাক করিয়া চালান হইতেছে। সকাল বেলা হইতে আরম্ভ করিয়া রাত্রি ১২টা পর্যন্ত বাগানে কুলির চায়ের পাতা উঠাইতেছে। সন্ধ্যার পর হইতে আলো জালিয়া কাজ করিয়াও তাহারা কাজের শেষ পাইতেছে না। নীরদবাবুর মাথার স্বাম পায়ে পড়িতেছে। কোন সকালে উঠিয়া গুদামুঘরে গিয়া বসিয়াছেন, আর বেলা ১২-১টা ঠিক নাই কখন মুহূর্তের জন্য বাড়ী আসিবেন, দুটা কঁচা পাকা মুখে দিয়া আবার ছুটিবেন। এ প্রদেশে এই কোম্পানীর মত এত বড় চায়ের বাগান আব্ল কাহারও নাই। দাৰ্জিলিং চা বিখ্যাত এবং সেই দাৰ্জিলিং চায়ের প্রধান আড়ৎ এইখানে। সে দিন বেল প্রায় ১১ট। নীরদবাবু গুদামের ধুলা মাখিয়া হাতে কাগজ পেন্সিল লইয়া প্রকাও প্রকাও চায়ের বাক্স প্যাক