পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ᏬNᏬb~ আমি যখন নিদ্রায় অচেতন ছিলাম, তখন, আমিই বা কিরূপ, তুমিই বা কিরূপ, জগৎই বা কিরূপ-কিছুই তাহা জানি না ; ভাবি-ও না যে, আমি বলিয়া বা তুমি বলিয়া বা জগৎ বলিয়া একটা কোনে। পদার্থ কোনো স্থানে আছে বা কোনো কালে ছিল । যখন জাগিয়া উঠিয়া চারিদিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করিগাম—দেখিলাম এক অনিৰ্ব্বচনীয় অদ্ভূত ব্যাপার। দেখিলাম সত্য আমাকে ঘিরিয়া রহিয়াছে ! দেখিলাম সত্য আমার বাহির হইতে বাহিরে প্রসারিত রহিয়াছে—আমার আস্তর হইতে অন্তরে প্রবিষ্ট রহিয়াছে ! সত্যকে ছাড়িয়া আমি একতিলও কোথাও নড়িয়া বসিতে পারি না—এক মুহূৰ্ত্তও কেনে কিছু ভাবিতে চিন্তিতে পারি না। এক অদ্বিতীয় সত্য বিশুদ্ধ এবং উদয়াস্তবিহীন অটল জ্ঞানের আলোকে নিরন্তর স্বপ্রকাশ ! আমাতেও স্বপ্রকাশ–তোমাতেও স্ব প্রকাশ ! ক্ষুদ্রাৎ ক্ষুদ্র বালুকণাতেও স্বপ্রকাশ—স্বৰ্য্যাতি"ধ্যেও স্বপ্রকাশ ! আজিও স্বপ্রকাশ—কালিও স্বপ্রকাশ! দেশ-নির্বিশেষে, কাল-নির্বিশেষে, পাত্র-নিৰ্ব্বিশেষে, সৰ্ব্বদা সৰ্ব্বত্র সৰ্ব্বভূতের অন্তরে বাহিরে স্বপ্রকাশ ! সত্য যদি আপনার বলে আপনি বর্তমান ন হইতেন— আপনার জ্যোতিতে আপনি প্রকাশ না পাইতেন— তবে তোমার আমার অপেক্ষ। শতসহস্র গুণে বিদ্যাবুদ্ধিসম্পন্ন শতসহস্র মহা মহা পণ্ডিত একযোট হইয়া শতসহস্রবৎসর বংশপরম্পরাক্রমে প্রাণপণ চেষ্টা করিলেও বিশgল বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের কোথাও কোনো স্থানে সত্যের যৎস্বল্প আভাস-মাত্র ও হৃদয়ঙ্গম করিয়া সুখী হইতে পারিতেন না। এই সৰ্ব্বব্যাপী সৰ্ব্বান্তর্যামী স্বয়ত্ত্ব স্বপ্রকাশ একমাত্র অদ্বিতীয় অখণ্ড সত্যকে আমরা যখন আমাদের বুদ্ধির আয়ত্তের মধ্যে ধরিয়া পাইতে চেষ্ট৷ করি, তখন আমাদের স্ব স্ব বিদ্যাবুদ্ধির আপাত সুলভ ধারণার উপযোগী নানাপ্রকার খণ্ড-সত্যকে অখণ্ড সত্যের স্থলাভিষিক্ত করিয়া ভ্রান্তি-চক্রে ঘুর্ণায়মান হই । অল্পদর্শী বুদ্ধিবিদ্যার যুক্তিপ্রণালীর সিড়ির ধাপ প্রধানতঃ झूहेंड्सि :- §§ প্রথম ধাপ { যুক্তি-সোপানের সবে-মাত্র প্রথম ধাপে পদার্পণ প্রবাসী—ফান্ধনু, ॥৩২১ [ ১৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড করিয়াই আমরা একমাত্র অদ্বিতীয় অখণ্ড সত্যকে দুই ভাগে বিভক্ত করিয়া ফেলি ঃ-ইন্দ্ৰিয়াতীত এবং ইন্দ্ৰিয়গ্রাহ—এই দুই ভাগে বিভক্ত করিয়া ফেলি; আর ঐ দুই ভাগের একভাগ মাত্রকে-ইন্দ্রিয়গ্রাহ বিষয়-সমষ্টিকে —পরিপূর্ণ সত্যের স্থলাভিষিক্ত করি। বিপথ-গমনের এই অারস্ত-স্থানটির যুক্তিপ্রণালী এইরূপ — আমি আমার জন্মাবধি এ যাবৎকাল পর্য্যন্ত অামার অধিকারস্থ ইন্দ্রিয়গ্রাহ , বস্তুগুলিকে আমার জ্ঞানের বিষয়-ক্ষেত্রে আসা যাওয়া করিতে দেখিতেছি প্রতিদিন সকাল হইতে সন্ধ্য পৰ্য্যন্ত দণ্ডে দণ্ডে, ঘণ্টায় ঘণ্টায়, পলকে পলকে । ও-গুলি আমার চির-কেলে বন্ধু ;– কাজেই ও-গুলিকে আমি কোনো হিসাবেই সত্য ছাড়া মিথ্যা বলিতে পারি না। আমার জ্ঞানটিকে কিন্তু আমার জন্মাবধি এ যাবৎকাল পর্য্যস্ত তাহার নিজের বিষয়ক্ষেত্রে ভুলক্রমেও পদার্পণ করিতে দেখিলাম না ! দৃপ্ত বস্তু সাদা বা কালে বা পাণ্ডুর বা রঙ্গীন-জ্ঞান সাদাও না কালোও না পাণ্ডুরও না রঙ্গীনও না ! দৃপ্ত দেহ স্থল বা কৃশ বা দুয়ের মাঝামাঝি—জ্ঞান স্থলও ন, কৃশও না, দুয়ের মাঝামাঝিও না । পৃষ্ঠ বস্তু কঠিন বা কোমল বা দুয়ের মাঝামাঝি- জ্ঞান কঠিনও না, কোমলও না, দুয়ের মাঝামাঝিও না । ইন্দ্রিয়গ্রাহ বস্তুসকল জ্ঞানের বিষন্ন ; জ্ঞা=ম জ্ঞানের অবিক্ষয়। জ্ঞানের মুবিজ্ঞাত বিষয় সমূহকে আমরা সত্য বলি বলিয়—যাহাকে আমরা চক্ষে দেখি না, কর্ণে শুনি না, ধরিতে ছুতে পাই না, তাহাকেও যে সত্য বলিতে হইবে—-জ্ঞানের মতো একট। ফাক। অবস্তুকেও যে সত্য বলিতে হইবে—তাহার কোনো অর্থ নাই । এই প্রকার প্রথম ধাপের যুক্তির বশবৰ্ত্তী হইয়া দুই শতাব্দী পূৰ্ব্বে ফরাসীস-দেশীয় বিজ্ঞানবিং পণ্ডিতের ইন্দ্রিয়গ্রাহ বিষয় সকলকেই সত্যের সার সর্বস্ব বলিয়া অবধারণ করিয়াছিলেন । দ্বিতীয় ধাপ । মুক্তির প্রথম ধাপ হইতে দ্বিতীয় ধাপে উত্থান করিয়৷ আমরা যখন সত্যের মধ্যে আর একটু তলাইয়। দেখি তখন দেখিতে পাই যে, আলোককে চক্ষুর সম্মুখ হইতে