পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

©8 প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩২১ দৃষ্ট পাশে ছয়টি পা আছে । এই শেয ছয়টি পায়ের গড়ন তেল বিছার পায়ের ন্যায়। কোন কোন কীটতত্ত্ববিদ্বগণ মনে করেন এই শেষোক্ত পদ ছয়টিই পোকার আসল প। কারণ পোকাটি প্রজাপতিতে পরিণত হইলে তাহার প। মাত্র ছয়টি হয় । ইহারা আরও মনে করেন যে ঐ যে অবশিষ্ট দশটি প। তাহার প্রকৃত পা নহে ; উহারা মাত্র পোকাটিকে চলিতে সাহায্য করে। আমরা এসম্বন্ধে এখনো কোন স্থির সিদ্ধান্তে উপনীত হই নাই ; সুতরাং এ বিষয়ে জোর করিয়া আপাতত কিছু বলিতে পারিলাম না । পূৰ্ব্বেই বলা হইয়াছে পোকাটি শৈশব অবস্থা হইতে কীট অবস্থার শেষ পর্য্যস্ত কয়েকবার" দেহের চৰ্ম্মাবরণ পরিবর্তন করিয়া থাকে । ইহাদের কীট অবস্থার অবসান কালের কিছু পুৰ্ব্ব হইতে ইহার আচমকা আহর বন্ধ করিয়া গাছের নীচে নামিয়া আসিয়া শুষ্ক তৃণ লতার সন্ধান করিতে থাকে । সুবিধা মত তৃণ লতা জুটিলে ইছারা তাহা একত্রিত করিয়া মুখ দিয়া সুকৌশলে একটি কুটার বা দুর্গ, নিৰ্ম্মাণ করে। এই দুর্গ নিৰ্ম্মাণ কালে ইহাদের মুখ হইতে একপ্রকার তরল আঠা বাহির হইতে থাকে। ঐ লাল বা তরল আঠ। তৃণগুলিকে পরস্পর আটকাইয়া রাখে । কুটীরের ভিতর প্রবেশ করিয়া পোকাটি তাহার সকল ছিদ্র সম্যকরূপে বন্ধ করিয়া দেয় । তখন কুটারটি এমনি নিশ্ছিদ্র হইয়া যায় যে পিপড়ে জাতীয় কোন জীব তন্মধ্যে প্রবেশ করতে পারে না। * এই তৃণনিৰ্ম্মিত দুর্গের মধ্যে প্রবিষ্ট হইয়া পোকাটি কয়েক ঘণ্টা সম্পূর্ণ অবশ হইয়া থাকে। ঐ সময় উহার দেহ অত্যন্ত স্পর্শকাতর হইয় পড়ে। একটু ছেণয়া পাইলে ভয়ানক জোরে লাফ দিয়া উঠে। ক্রমে ধীরে ধীরে পোকাটির চৰ্ম্মাবরণ খসিয়া পড়ে । এই সময় চৰ্ম্মীবরণহীন পোকাটিকে একখণ্ড শ্বেত মাংসের দ্যায় দেখায় । তখন আর পোকার দেহে পায়ের কোন চিত্ব থাকে না। সব পা লোপ হইয়া যায় । এই রূপে ঘণ্টা খানিকের পর পোকাটি ধীরে ধীরে বাকিতে বাকিতে একটি পুস্তলীতে পরিণত হয়। ক্রমে ঐ শ্বেত আবরণটি বাদামি বর্ণের হইয়া যায় । উক্ত পুত্তলীটির ঐ বাদামি আবরণ নিতান্ত

  • • ९ • - x ९ *T* • • * * * * * = *

খাচ পড়িয়া যায়। “খ” চিহ্নিত চিত্রটির প্রতি দৃষ্টি দিলে পুত্তলীর আকার সম্বন্ধে পাঠকবর্গের যথার্থ ধারণা হইবে । বিশেষ দৃষ্টি দিয়া দেখিলে আরো দেখা যায় পুত্তলীর অগ্র ভাগে নীচের দিকে বঁfকান একটি গুড়ি আছে ।* এই সময় পুত্তলীর মধ্যে পোকাটি বোধ করি প্রজাপতির অঙ্গ প্রাপ্ত হুইবার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করিতে কিম্বা পো কাটির দেহ ক্রমাগত প্রজাপতির তমুর অনুরূপ হইতে 守|び卒 1 পুত্তলীতে পরিণত হওয়ার দিন হইতে আরম্ভ করিয়া একাদশ দিনের ( অবশু সময় ছএকদিন অগ্র পশ্চাৎ হইতেও দেখিয়াছি ) দিন পোকাটি পুত্তলীতে সম্পূর্ণ প্রজাপতিতে পরিণত হয় এবং সাধারণত দ্বাদশ দিনে অকস্মাৎ পুত্তলীটি ফাটিয়া গিয়া প্রজাপতিটি বাহিরে আসে। অনেকে মনে করেন তসরের গুটি পোকার প্রজাপতি যেমন গুটি কাটিয়া বাহিরে আসে চহারাও তেমনি পুত্তলী কাটিয়া বাহিরে আসে । বস্তুত তাহ। নহে । প্রজাপতির অঙ্গ বৃদ্ধির জন্ত পুত্তলীর কোমল আবরণ আপনা হইতে ফাটিয়া যায়। তসরের গুটিপোকাও গুটির ভিতরে পুত্তলীর অভ্যস্তরে জন্মলাভ করে এবং তাহার পুত্তলাও উক্ত শিউলীগাছের কীটের প্রজাপতির পুত্তলীর ন্যায় যথাকালে আপনাআপনি বিদীর্ণ হয়। যাহাহউক পুত্তলী হইতে প্রজাপতি বাহিরে আসিয়। বিছুক্ষণ পুত্তলীর গায়ে বসিয়া থাকে। এই সময় প্রজাপতির সারা অঙ্গে একপ্রকার তরল আঠাল পদার্থ লিপ্ত থাকে । এই তরল আঠাল পদার্থকে দেহচু্যত করিবার জন্য প্রজাপতিটি ঘন ঘন স্পন্দিত হইতে থাকে। ঐ ম্পন্দনে সমস্ত আঠ তাহার অঙ্গ হইতে ঝরিয়া পড়ে । আঠা বরিয়া পড়িলে প্রজাপতিটি স্বেচ্ছায় গন্তব্য স্থানে প্রস্থান করে ।

  • সাধারণতঃ পুত্তলীর অগ্রভাগে ওরকম বঁাক। গুড় থাকে না, থাকিলেও অtমরা এপর্য্যস্ত যত গুলি প্রজাপতি কীট লইয়৷ পৰ্য্যবেক্ষণ করিয়াছি তন্মধ্যে কোনটির পুত্তলার অগ্রভাগে ওরকম শুত্ব নাই । এই শ্রেণীর শিউলী কীটের পুত্তলীর ঐবিশেষত্ব। শিউলী গাছের অন্তান্ত শ্রেণীর প্রজাপতি কীটের পুত্তলীরও অগ্রভাগে এই প্রকার কোন শু"ড়ের চিহ্ন নাই । লেখক ।