পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

や8b

ভাষার পার্থক্য থাকায় আমরা পরস্পর ভাব বিনিময় করিতে পারি না," | so ". আমি জিজ্ঞাসা করলাম, “তাহা হইলে আপনার জগতের মুসলমান-সমাজকে এক আদর্শে গড়িয়া তুলিতে আশা করেন কি কfরয় ? প্যান-ইসলামের দীক্ষামন্ত্র আপনারা সৰ্ব্বএ প্রচুর করিতে পারিতেছেন কি ?” ঠহার। বলিলেন “সত্য কথা, প্যান-ইসলাম-আন্দোলন স্বপ্রতিষ্ঠিত হয় নাই। মিশরে এই প্রচেষ্টার কার্ষ্য অতি অল্পই হইয়াছে । ইহার প্রভাব আমরা কিছুই অনুভব করি না। এমন কি তুরস্কের মুসলমানদের সঙ্গেই আমাদের কোন সম্বন্ধ নাই। উহাদের সঙ্গে মিশরীয় চিন্তা ও কম্মের আদান প্রদান অতি অল্পই হয়। পরশু, আফগানিস্থান ও হিন্দুস্থানের মুসলমানদিগকে আমরা চিনি না বলিলে দোষ হয় না । ইতিহাস-গ্ৰছে পড়িয়া থাকি মাএ যে, ঐসকল দেশে আমাদের স্বধৰ্ম্মাবলম্বী নরনারীগণ বাস করে, এই পৰ্য্যন্ত । অধিকন্তু আমাদের সূংবাদপত্রেও ভারতবধ ধন্ধে কোন তথ্য প্রকাশিত হয় না। মিশরে ও ভারতে ঐক্য প্রতিষ্ঠার কোন উপায় এখন পর্য্যন্ত অপলধি ত হয় নাই ।” বড়ই বিস্ময়ের কথা, মিশরীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকগণ আলিগড় কলেজের সংবাদ কিছুই রাখেন না। এমন কি, ভারতীয় মুসলমানেরা যে একটা নূতন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করিতে চলিয়াছেন সে খবরও এখানে পৌছে নাই। এই ক্লাবের উকীল, জঙ্গ, অধ্যাপক এবং ডাক্তারগণও আলিগড় সম্বন্ধে নিতান্ত অজ্ঞ। আধুনিক ভারতের বেশী লোক মিশরে অসিয়াছেন বলিয়। মনে হইল না। এখানকার শিক্ষিত মহলের নানা স্থানে ঘুরিয়া দেখিলাম নব্যভারতের চিস্তাবীর ও কন্মবারগণের মধ্যে একজন মাত্রের নাম ইহারা শুনিয়াছেন । বিবেকানন্দের বন্ধু স্বামী রামতীর্থ মিশরে আসিয়াছিলেন বুঝিতে পারিলাম। কাইরোর কয়েকজন প্রবীণ ব্যfও স্বামীর প্রতি শ্রদ্ধাবান। একজনকে দেখিলাম তিনি কথায় বাৰ্ত্তায় চাল8লনে পূরাপুরি হিন্দুভাবে অকুপ্রাণিত। বেদান্তের উপদেশ ইহার উপর প্রবল &ভাব বিস্তার করিয়াছে। অনেকক্ষণ কথোপকথন প্রবাসী—চৈত্র, ১৩২১

  • , , , ;

[ ১৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড হইল। দেখিলাম ইহার জ্ঞান নিতান্ত অল্প নয়। আত্মতর বিষয়টা গভীর ভাবে তলাইয়া বুঝিবার জন্য ইনি যথেষ্ট অনুশীলন করিয়াছেন। দুই চারিটা হিন্দুদর্শনের বুকৃনি মাত্র আওড়াইতে শিথিয়াছেন তাহা নহে । " মিশর-রাষ্ট্রের শিল্পবিভাগের দুইজন কৰ্ম্মচারীর সঙ্গে পরিচিত হইলাম। ইহারা ষ্টম-এঞ্জিন, রেলওয়ে, জলসরবরাহের কারখানা, রসায়ন হত্যাদি বিষয়ক ইংরেজী গ্রন্থ আরবীতে ত্বমুবাদ করিতেছেন । মিশর-রাষ্ট্রের অম্বুবাদ-বিভাগে বৎসরে যথেষ্ট অর্থ ব্যয় করা হয়। অনূদিত গ্রন্থপ্রকাশের জন্তই প্রায় ৬০.৭০ হাজার টাকা বার্ষিক খরচ হইয়া থাকে অক্সবাদ-কার্য্যের জন্য ছয়জন লোক সৰ্ব্বদা নিযুক্ত রহিয়াছেন । আজ কণইরে। ত্যাগ করিয়া আলেকজান্দ্রিয়ায় চলিলাম । এই কয়দিনের মধ্যে মিশরের সঙ্গে মায়ার বন্ধন জন্মিয়া গিয়াছে, ষ্টেসনে মিশরীয় নবীন ও প্রবীণ বন্ধুগণ দেখা করিতে আসিলেন । মিশরীয়ের। হিন্দুস্থানের প্রতি অনুরক্ত হইয়াছেন ভাবিয়া পুলকিত হইলাম । আন্তরিক কৃতজ্ঞ তা জানাইয়া বিদায় গ্রহণ করা গেল । গাড়ী ছাড়িয়া দিল। মনে মনে মিশরের ভূত, ভবিষ্যৎ, বৰ্ত্তমান চিন্তা করিতে করিতে ব-দ্বীপের পশ্চিম প্রান্তস্থিত শস্তক্ষেত্র ও পল্লীগৃহ দেখিতে লাগিলাম। কাইরে হইতে আলেকজান্দ্ৰিয়া পর্য্যন্ত রেলপথ ১৮৫৩ খৃষ্টাব্দে থোলা হয়। সৈয়দপাশ। তখন মিশরের খেদিভ ছিলেন। ইহ সময়-হিসাবে জগতের দ্বিতীয় রেলপথ। সৰ্ব্বপ্রথম রেলপথ বিলাতে নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল। কাইরো ছাড়িয়া মোকা ওম ও লীবিয়া পৰ্ব্বতমালদ্বয় আর দেখিতে পাইলাম না। পোর্ট সৈয়দ হইতে কাইরে পর্যন্ত পথে যেসকল দৃশু চোখে পড়িয়াছিল বদ্বীপের এই পশ্চিম বাহুতে ঠিক সেইরূপ দৃপ্ত দেখিতে পাইলাম না। কারণ এ অঞ্চলে মরুভূমি নাই—কিন্তু পোর্ট’সৈয়দের পথে কিয়দংশে ধূলাবালুর প্রভাব অত্যধিক । আলেকৃঙ্গান্দ্রিয়ার পথে মিশরের সাধারণ উৰ্ব্বর ভূমিই দৃষ্টিগোচর হইল। মধ্যে মধ্যে ক্ষুদ্র বৃহৎ পল্লী এবং নগর দেখা গেল । নাইলের খাল এবং কৃষ্ণ মৃত্তিকাময় শস্যক্ষেত্রও এই অঞ্চলের সর্বত্রই বিদ্যমান ।