পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬৭২ তোকে নি। অবশেষে মামি হাতে করে মেরে ফিগ লাম। আহাসে যে তার কত যত্বের কত অাদরের ধন। সে যে বড় দুঃখী অজ্ঞানে মা হারাইয়াছে, বাপ থাকিতেও কখন একদিনের জন্ত, বাপের স্নেহ জানে না, কখন কাহারও কাছে অাদর যত্ন পায় নাই, স্বামীর স্নেহ ও ভালবাসায় সে দুই দিনের জন্য মুখী হইয়াছিল, ক্রোধের বশে তিনি তাহার একি সৰ্ব্বনাশ করিলেন ? আবার ললিতর উদ্দেশ্র্যেও তিনি প্রতিসন্ধ্যায় দেবমন্দিরে মাথা কুটিয়া আসেন—ওরে নিষ্ঠুর ! ওরে পাষাণ ! যে তোর জন্ত প্রাণ দিতে বসিয়াছে একবার অসিয়া তাহাকে দেখিয়া যা! আমার উপরে না হয় তুই রাগ করিতে পারিস, কিন্তু এমুখ কি করিয়া કૃનિનિ ? চারিদিকে ললিতের অনেক অকুসন্ধান হইল ; কলিকাতায় চারিদিকে, তাহার ভগ্নীর বাড়ীতে, কোথা ও তাহার খোজ পাওয়া গেল না। গ্রামের যে প্রবীণ কবিরাজ কিরণের চিকিৎসা করিতেছিলেন তিনি নৃত্যকাণীকে • লিলেন—ম ! আমি ঔষধ দিতেছি বটে কিন্তু ইহ। মানসিক ব্যাধি, ঔষধে কিছু হইবে না। যদি শীঘ আপনার জামাতার সন্ধান না পাওয়া যায় তবে ইহার জীবনসংশয় । ইহার জীবনশক্তি ক্ষয় হইয়া অভ্যালিতেছে। , নৃত্যকালীর সংসার বিন্দুঠাকুরবি দেখিতেন, নৃত্যকালী কিরণকে লইয়া উপরে পড়িয়া থাকিতেন। তাহার শোচনীয় অবস্থা দেখিয় দিন দিন তাহার হৃদয় ভাঙ্গিয়৷ যাইতেছিাঁ। এই পরিবার যখন এইরূপে চতুর্দিক হইতে রোগ শোক অভাব দুঃপের ভীরে আচ্ছন্ন হুইয়! পড়িয়াছিল তখন একদিন সহস দেবতার আশীৰ্ব্বাদের মত সুসংবাদ লইয়া হাসিমুখে নরেন আসিয়া বলিল—ম! হাইকোর্টের মামলায় আমাদের জিৎ হয়েছে ! জজসাহেব বলেছেন—বলিতে বলিতে কিরণের শীর্ণ মানমূৰ্ত্তির দিকে দৃষ্টি পড়ায় সে অবাক হইয়। বলিল--একি মা ? বোনটির কি হয়েছে ? যে মামলার ফলাফলের উপর তাহদের জীবন মরণ নির্ভর করিতেছিল তাহাতে জয়ী হইয়াছেন শুনিয়া আঙ্গ নৃত্যকালীর আহলাদ হইল না। তিনি কাদিয়া বলিলেন— ওরে নরেন, তোর ষা কিছু আছে সব ললিতকে লিখে প্রবালাঁ—চৈত্র,১২২১ [ ১৪শ उ", ২য় খণ্ড · দেবে1, ੋ তাকে ফিরে আন্‌! তার জন্যে আমার সব যেতে বসেছে ! নরেন যপন একে একে সব কথা শুনিল, তখন তার চোখ দুষ্টটি অশ্রুপূর্ণ হইয়। উঠিল । সে ধীরে ধীরে কিরণের কাছে আসিয়া ডাকিল—বোনটি ! কিরণ মুখ তুলিয়। চাহিল—তার মাথাটি ঘুরিয়া গিয়া নরেনের বুকে পড়িল। দাদার দেহের কোলে মুখ লুকাইয়া কিরণ বহুদিন পরে প্রাণ ভরিয়া কঁদিল । নরেন নিজের চোেখ মুছিতে মুছিতে তাহাকে বলিল—তুই কিছু ভাবিসনে বোনটি! আমি যখুন এসেছি তখন তোর কোন ভাবন। নেই । আমি আবার শীঘ্ৰ কলিকাতায় যাব । যেখানেই থাকুক তাকে খুঁজে বের করে সঙ্গে নিয়ে তবে বাড়ী আসব। সে কতদিন লুকিয়ে থাকবে ? তিনচার দিন পরে একদিন বিকালে কিরণ নিজের ঘরে জানলার ধারে চুপ করিয়া বসিয়া আছে, এমন সময় হাসিতে হাসিতে নরেন আসিয়া বলিল-বল দেখি বোনটি ! আজি কি এনেছি ? কিরণ কিছু না বলিয়া শূন্তদৃষ্টিতে দাদার বদ্ধমুষ্টির দিকে চাহিয়া রহিল । কোন বিষয় জানিতে বা কথা কহিতে তাহার কোন কৌতুহল বা উৎসাহ ছিল না । তাহাকে নিস্তব্ধ দেখিয়। নরেন হাসিয়া বলিল— বলতে পারলিনে ? আচ্ছা আমি বলছি--বলিয় তাহার গল। জড়াইয়। বলিল-ললিত খবর দিয়েছে-তোকে চিঠি লিখেছে । আমি ত বলেছিলাম কতদিন সে লুকিয়ে থাকবে ? কিন্তু তুই এমনি ছেলেমানুষ, দেখদেখি ভেবে কি হয়ে গেছিস ?—বলিয়া গভীর স্নেহে তাহ(র ললাট চুম্বন করিয়া কোলের উপর চিঠিখান ফেলিয়া দিয়া নরেন বাহির হইয়া গেল । কিরণের সর্বশরীর কম্পিত হইতে লাগিল, মাথার মধ্যে বিমঝিম করিতে লাগিল । তাহার সর্ববঙ্গ ঘৰ্ম্মে সিক্ত হইয়া গেল। কতক্ষণ সে অৰ্দ্ধমূচ্ছিতের ন্যায় জানালা ধরিয়া ঝু কিয়া রহিল। এও কি আবার সম্ভব ? যাহার আজ ছয় মাসের মধ্যে কোন সংবাদ না পাইয়। সে একেবারে আশা ছাড়িয়া দিয়াছিল, আজ তাহারই সংবাদ আসিয়াছে ! তবে ত তিনি কিরণকে একদিনের