পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা] রাজপথ একটু বেণী-রকম সাবধান হওয়াই ভাল।" বলিয়া বিমান মৃদু-মৃদ্ধ হাসিতে লাগিল । বিমান হাসিতে লাগিল, কিন্তু তারাসুন্দরীর চক্ষু সজল হইয়া আসিল ! বলিলেন, “তাই মনে হয় বিমান, তোমাকে যদি পেটেও ধবৃতাম তা হ’লে আমার আর কোনো আক্ষেপ থাকৃত না ! তুমি যে সুরেশ্বরের সহোদর নe, এই-টুকুই আমার দুঃখ, তা ছাড়া আর কোনো দুঃখ নেই!” এ-কথাতেও বিমান হাসিতে লাগিল ; বলিল, “আমার কিন্তু কোনো দুঃখই নেই মা ! মার কথা মনে হ’লেই আমার তোমাকে মনে পড়ে। তোমার মধ্যে কোনো অভাবই আমি দেখতে পাইনে ৷” এ-কথার উত্তরে কোন কথা না বলিয়া তারাসুন্দরী বস্ত্রাঞ্চলে চক্ষু মুছিলেন । ostą “আমি এক আসিনি মা ; আমার সঙ্গে স্থমিত্রা আর বউদিদিও এসেছেন।" স্বরমা ও স্থমিত্রার আগমনের কথা শুনিয়া তারাস্বন্দরী ব্যস্ত হইয়। উঠিলেন । “কই ?—কোথায় তারা ?” বিমানবিহারী বলিল, “তোমার ব্যস্ত হবার দরকার নেই। র্তারা নীচে মাধবীর কাছে আছেন, এখনি ওপরে আসবেন ।” তারান্বন্দরীর অস্বথের সময়ে সুমিত্রা, প্রমদাচরণের সহিত তিন-চার বার এবং জয়ন্তীর সহিত একবার, এবং স্বরম ও বিমানবিহারীর সহিত কয়েকবার, তারামুন্দরীকে দেখিতে আসিয়াছিল। আজ রবিবার, কাছারীর তাড়া নাই, তাই বিমানবিহারী স্বরমার সহিত মুক্তারাম বাবুর স্ত্রীটে স্থমিত্ৰাদের গৃহে উপস্থিত হইয়া স্থমিত্রাকে লষ্টয়া সকালেই তারাস্বন্দরীকে দেখিতে আসিয়াছে। আসিবার সময়ে পথে বাজারের সম্মুখে গাড়ী দাড় করাইয়া তাহার লারাসুন্দরীর পথ্যের উপযোগী কয়েক-প্রকার তরকারী *নিয়া লইয়াছিল । ক্ষণকাল পরে মাধবীর সহিত স্বরমা ও স্বমিত্ৰা উপরে Aখাসিয়া তারাসুন্দরীর পদধূলি গ্রহণ করিল। আশীৰ্ব্বাদ jo তারান্বন্দরী উভয়কে হাত ধরিয়া নিজের কাছে evరి বসাইলেন এবং উভয়ের চিবুক স্পর্শ করিয়া স্বমিষ্ট-স্বরে বলিলেন, “সকালে উঠেই এ চাদমুখগুলি দেখতে পাওয়া কম পুণ্যের কথা নয় ।” বিমানবিহারী স্মিতমুখে বলিল, “তাই যদি পুণ্যের কথা হয় মা, তা হ’লে সকালে উঠে তোমার পায়ের ধূলো পেয়ে এদের কিসের কথা হ’ল তা বল ? যে-জিনিস এর অর্জন করলেন,সে-জিনিস তুমি অর্জন করেছ বলে এদের মুস্কিলে ফেলো না!” স্বরম বলিল, “সত্যি কথা !” স্বমিত্ৰা মৃদুমৃদু হাসিতে লাগিল । তারান্বন্দরী ঈষৎ উত্তেজিত হইয়া বলিলেন, “ত নয় বিমান, তা নয়! স্নেহ-ভালবাসা, ভক্তি-শ্রদ্ধা, এ-সব জিনিস সংসারে এমনই দুর্লভ, যে সত্যি-সত্যিই পুণ্যের জোর না থাকলে তা পাওয়া যায় না! এই ষে তুমি আমাকে তোমার মা করে নিয়েছ তা তোমার পুণ্যে, না আমার পুণ্যে ?” বিমানবিহারী কিছুমাত্র দ্বিধা না করিয়া তৎক্ষণাৎ উত্তর দিল, “আমার পুণ্যে, আর তোমার দয়ায় ।” বিমানবিহারীর উত্তরে ও ভঙ্গীতে সকলে হাসিয়া উঠিল। মাধবী বলিল, “মা, তোমার পথ্যের জন্য बिभान-बाबू এক-ডালা তরকারী এনেছেন । যা এনেছেন তাতে, দশ দিন তরকারী না কিনলেও আমাদের অক্লেশে চলে যায় ! কাচকল, ট্যাড়স, পল তা, পটোল, ওল, আরও কত কি !” বিমানবিহারী হাসিয়া উঠিল, "আর ভাল ! প্রভৃতি ইত্যাদি কথাগুলো ব্যবহার করবার ইচ্ছে থাকলে লোকে অন্ততঃ একটা জিনিস বাকি রেখে ব্যবহার করে। শুধু ডালাটি বাকি রেখে, “কত কি ব্যবহার করা তোমার উচিত হয়নি মাধবী !” বিমানবিহারীর কথায় পুনরায় সকলে হাস্ত করিয়া छेठिंब्न । মাধবী হাসিমুখে বলিল, “আচ্ছা, ডালাটা আনিয়ে তোমাকে আমি দেখাচ্ছি মা, শুধু ভাল বাকি রেখেছি, না আরও কিছু বাকি রেখেছি!” ৰলিয়া রেলিং-এর ধারে